বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

আনোয়ারের উত্থান ও মাহাথিরের পতন

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২

বিগত ২৪ নভেম্বর একসময়ের জাঁদরেল যুবনেতা ৭৫ বছর বয়সী রাজনীতিক আনোয়ার ইবরাহিম মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। ইতিহাসের এক নির্মম প্রতিশোধের দৃশ্য দেখল বিশ্ববাসী। ঘটনাস্থল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সমৃদ্ধ দেশ মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর। আজ থেকে প্রায় ২৫ বছর আগে এই ব্যক্তি উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত হয়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। এবার তিনি এই শহরের ‘আসতানা নেগারা’ রাজপ্রাসাদে দেশটির দশম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। পৌরাণিক ফিনিক্স পাখির মতো ভস্মস্তূপ থেকে আবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এলেন আনোয়ার ইবরাহিম। এই দীর্ঘ সময় তিনি বিরোধীদলীয় রাজনীতিক ও আইনপ্রণেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
২৫ বছর তাকে সংগ্রাম করতে হয়েছে, কারাবরণ করতে হয়েছে ১০টি বছর, মামলা চালাতে হয়েছে। ষড়যন্ত্র, দুর্নীতি ও সমকামিতার অভিযোগ নিয়েও তিনি দমবার পাত্র ছিলেন না। অবশেষে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আরোহণ করতে সক্ষম হন। নির্বাচনে আনোয়ার ইবরাহিমের নেতৃত্বাধীন পাকাতান হারাপান (পিএইচ) জোট সবচেয়ে বেশি আসন জিতেছে। মালয়েশিয়ার আজকের উন্নয়নের পেছনে তার অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
আনোয়ার ইবরাহিম ছাত্রজীবনে ১৯৭১ সালে মালয়েশিয়া ইসলামী ইয়ুথ মুভমেন্ট (আবিম) গঠনের মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৬৮-৭১ পর্যন্ত তিনি এ সংগঠনের সভাপতি ছিলেন। সংগঠনটি পরবর্তী সময়ে গ্রামীণ দারিদ্র্য ও অন্যান্য সামাজিক-অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। তার এসব কর্মকা- তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তিনি তাকে ইউনাইটেড মালয়েজ ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনে (ইউএমএনও) যোগদানে উদ্বুদ্ধ করেন। এ দলটি ১৯৫৭ সালে দেশটির স্বাধীনতার পর থেকে শাসন ক্ষমতায় ছিল।
১৯৮২ সালে ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন-এ যোগ দেন এবং সংস্কৃতি মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার দ্রুত পরিবর্তন হতে থাকে। দূরদর্শিতাসম্পন্ন, উচ্চাভিলাষী ও সংস্কারমনা রাজনীতিবিদ আনোয়ার ১৯৮৩ সালে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী, ১৯৮৪ সালে কৃষিমন্ত্রী এবং ১৯৮৬ সালে শিক্ষামন্ত্রী হন। শিক্ষামন্ত্রীর পদ তার মালয়েশিয়ার ভবিষ্যৎ উপপ্রধানমন্ত্রী হওয়ার দ্বার খুলে দেয়। শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর আনোয়ার ‘ন্যাশনাল স্কুল কারিকুলাম’ প্রণয়ন করেন। মালয়েশিয়ার জাতীয় ভাষার নাম ‘বাহাসা মালয়েশিয়া’ থেকে বাহাসা মেলায়ু-এ পরিবর্তন করেন। ১৯৮৮ সালে তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান এবং ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তাতে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯৮৯ সালে ইউনেস্কো সাধারণ অধিবেশন-এর ২৫তম সভাপতি নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে তিনি উপপ্রধানমন্ত্রী হন। এশিয়ার অর্থনৈতিক সঙ্কট নিয়ে দুই নেতার মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
অবশেষে ১৯৯৮ সালে সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী মাহাথির আনোয়ার ইবরাহিমকে বরখাস্ত করেন এবং তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও সমকামিতার অভিযোগ আনা হয়। মালয়েশিয়া মুসলিমপ্রধান দেশ। সমকামিতা দেশটির আইনে অপরাধ। তবে দেশটির আদালতে কেউ সমকামিতার দায়ে সাজা পেয়েছেন, এমন ঘটনা বিরল। আনোয়ার ইবরাহিমের বিরুদ্ধে সমকামিতার মামলা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নিন্দার ঝড় তুলেছিল। বলা হতো, রাজনৈতিক কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে ওই মামলা করা হয়েছিল। পরে আদালতের রায়ে দুর্নীতির অভিযোগে আনোয়ার ইবরাহিমকে ছয় বছরের কারাদ-ের সাজা দেন মালয়েশিয়ার আদালত। এর জেরে সে সময় দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এর পরের বছরই সমকামিতার অভিযোগে আরো ৯ বছর কারাদ-ের সাজা পান তিনি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আনোয়ার ইবরাহিম সব সময়ই দাবি করেছেন, রাজনীতিতে তাকে পথের কাঁটা হিসেবে দেখতেন মাহাথির মোহাম্মদ। এ জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে রাজনীতির মাঠ থেকে সরাতে চেয়েছিলেন তিনি যদিও মাহাথিরই একসময় তার রাজনৈতিক গুরু ছিলেন। ২০০৩ সালে মাহাথির অবসর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে যাওয়ার পর ২০০৪ সালে আনোয়ার ইবরাহিমের বিরুদ্ধে সমকামিতার রায় স্থগিত করেন আদালত। ফলে কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। প্রমাণের অভাবে ২০১২ সালের জানুয়ারিতে আনোয়ার ইবরাহিমের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ খারিজ করে দেন আদালত। এর পরের বছরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নতুন উচ্চতায় ওঠে তার বিরোধী দল (ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে, চ্যানেল নিউজ এশিয়া ও উইকিপিডিয়া)।
মাহাথির মোহাম্মদ তার প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতেন আনোয়ার ইবরাহিমকে, তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন কিন্তু পারেননি। বরং উল্টো মাহাথির মোহাম্মদ ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে বিদায় নেন। নির্বাচনে তিনি তার জামানত হারিয়েছেন এবং তার দল একটি আসনও পায়নি। তার আসনে যত ভোট পড়েছে তার এক-অষ্টমাংশও আদায় করতে পারেননি তিনি। জামানত ধরে রাখতে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেতে হতো মাহাথিরের; অথচ তিনি পেয়েছেন ৬ দশমিক ৮ শতাংশ, সাকুল্যে মাত্র চার হাজার ৫৬৬ ভোট। কারাগারে থেকেই আনোয়ার ২০১৮ সালে বিরোধী দলের জোট গঠন করেন। এবার তিনি যোগ দেন তার গুরু থেকে শত্রুতে পরিণত হওয়া মাহাথির মোহাম্মদের সাথে। তারা ভয়াবহ দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিত নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে নামেন। তারা জয়ী হন। কথা ছিল, মাহাথির দুই বছর প্রধানমন্ত্রী থাকার পর আনোয়ার ইবরাহিম হবেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু মাহাথির তার কথা রাখেননি। তিনি ক্ষমতায় স্থায়ীভাবে থেকে যেতে চেয়েছিলেন। এর ফলে যে ফাঁদে তিনি পা দেন, তার জের ধরে তাকেই ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়। আনোয়ার ইবরাহিম আবারো বঞ্চিত হন। কিন্তু আনোয়ার পিছপা হননি। ২০২২ সালের নির্বাচনে জিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। আল্লাহ মাহাথিরকে অনেক দিন বাঁচিয়ে রেখেছেন আনোয়ার ইবরাহিমের মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়া দেখতে। আনোয়ারের প্রতি মাহাথিরের জিঘাংসামূলক আচরণ মালয়েশিয়ার জনগণ ভালো চোখে দেখেনি। তারা রাজনীতি থেকে মাহাথিরকে বিদায় করে দিয়েছেন। ক্ষমতার লোভ, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ ও ডিগবাজি মানুষকে অন্ধ ও বধির করে দেয়। আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার হিসেবে খ্যাত মাহাথির শেষ পর্যন্ত তার ইমেজ রক্ষা করতে ব্যর্থতার পরিচয় দেন। মাহাথির মোহাম্মদ ১৯৮১ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত টানা ২২ বছর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। উনিশ শ’ আশির দশকে মালয়েশিয়ার ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং রূপান্তরের জন্য তাকেই কৃতিত্ব দেয়া হয় যদিও নিজ দেশে বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। দেশকে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে নিয়ে এলেও, মাহাথিরের সমালোচনাও কম হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, দেশের অনেক মানুষই তাকে ‘বর্ণবাদী’ হিসেবে দেখেন। বিশেষ করে নি¤œ ও নি¤œমধ্যবিত্ত ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিকরা তাকে খুব একটা পছন্দ করেন না। মালয় সম্প্রদায়ের প্রতি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানোর পাশাপাশি নৃতাত্ত্বিক বৈষম্যের সূচনাও করেছিলেন মাহাথির (প্রথম আলো, ১০ মে, ২০১৮)।
মাহাথির মোহাম্মদের পতনের বেশ ক’টি কারণ রয়েছে। গণতন্ত্রের প্রতি উদাসীনতা, জনসমর্থনের অভাব, আনোয়ার ইবরাহিমের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে পাজুয়াং তানা এয়ার বা জাতীয় যোদ্ধা দল নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন; এ ছাড়া মাহাথির বর্তমানে ৯৭ বছর বয়সী। এটাও তার প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাওয়ার একটা কারণ হতে পারে বলে মনে করেন অনেকে। ইউনিভার্সিটি অব নটিংহাম মালয়েশিয়ার শিক্ষক ব্রিজেট ওয়েলশের ভাষায়, ‘মাহাথিরের সময় পেরিয়ে গেছে’। ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর মাহাথির মোহাম্মদের শাসনের প্রথম ২০ মাস হতাশাপূর্ণ ছিল বলে সমালোচনা রয়েছে। মাহাথিরের সরকারের নির্বাচন-পূর্ববর্তী প্রতিশ্রুতি এবং ক্ষমতায় আসার পর সেগুলো পূরণের হিসাব রাখছিল হারাপান ট্র্যাকার নামে একটি ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইটটি বলছে, মাহাথিরের সরকার নির্বাচনের আগে ৫৫৬টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আর ৬৮৫ দিন ক্ষমতায় থাকার সময় তারা এর মধ্যে মাত্র ২৬টি পূরণ করতে সক্ষম হয়েছিল। ১২২টি প্রতিশ্রুতি পূরণে কাজ চলছিল এবং বাকি ৪০০টির কোনো কাজই শুরু হয়নি। মালয়েশিয়ার বর্তমান পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন প্রায় ৬০ লাখ তরুণ ভোটার যাদের বয়স ১৮-২১ বছরের মধ্যে। তারা মাহাথিরকে সমর্থন করেননি। এই তরুণ ভোটাররা জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদদের প্রতি সমর্থন নয়, বরং তরুণ নেতৃত্ব দেখতে আগ্রহী। দ্য এশিয়ান পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, মাহাথির মোহাম্মদের রাজনৈতিক টাইটানিক আসলে বিরোধী নেতা আনোয়ার ইবরাহিমের সাথে সংঘর্ষে ডুবে গেছে (বিবিসি বাংলা, ২৩ নভেম্বর, ২০২২)।
মুহিউদ্দিন ও ইসমাইলের জোট মালয় নৃগোষ্ঠীর স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়। আনোয়ারের জোট সব ধরনের কৃষ্টিকেই সমান প্রাধান্য দেয়। মালয়েশিয়ায় গোত্র ও ধর্মবিশ্বাস খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী মুসলমান ধর্মাবলম্বী এবং তারা মালয় গোত্রের সদস্য। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মধ্যে আছে চীন ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিকরা। নতুন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইবরাহিম ‘সকল মালয়েশিয়ের জন্য মালয়েশিয়া’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবেন এবং পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে, মালয়েশিয়ানরা জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের সাথে লড়াই করার কারণে তিনি বেতন নেবেন না। আনোয়ার ইবরাহিম, ২৫ বছর ধরে রাজনৈতিক অভ্যুত্থান এবং জেল সাজার মধ্যে মালয়েশিয়ায় শীর্ষ পদের জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির অর্থনীতির উন্নতি করা তার অগ্রাধিকার হবে। চীন মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক স্বার্থে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন যে, ‘পরীক্ষা ও ক্লেশ’ সত্ত্বেও, অন্যরা তার প্রধানমন্ত্রিত্বের পথকে ‘ক্ষতিকর ও হতাশ’ করার চেষ্টা করেছিল, ‘আমি বলতে গর্বিত যে, আমরা অর্জন করেছি- আনোয়ারের জন্য নয়, মন্ত্রীদের জন্য নয়, দলীয় নেতাদের জন্য নয় কিন্তু মালয়েশিয়ার সবাইকে নতুন করে আস্থায় আনতে চাই। এটি তাদের দেশ এবং এটি তাদের দেশ।’ প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইবরাহিম ২৪ নভেম্বর, ২০২২ এ মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গরে মিডিয়ার সাথে কথা বলেন। আনোয়ার ইবরাহিমকে শাসকের সম্মেলনের সাথে সাক্ষাতের পর ইয়াং দি-পার্টুয়ান আংগং (রাজা) দ্বারা মালয়েশিয়ার দশম প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করা হয়। মালয়েশিয়ার সাধারণ নির্বাচন একটি আশ্চর্যজনক ঝুলন্ত পার্লামেন্টের দিকে নিয়ে যায়, নির্বাচনের পর থেকে বেশ কয়েকটি দলের মধ্যে ‘ঘোড়ার ব্যবসা’ চলে। সুশাসন, দুর্নীতিবিরোধী সমস্যা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছু মূল বিষয় রয়েছে যেগুলোর বিষয়ে আমরা কখনই আপস করব না (সিএনবিসি ডট কম, ২২ নভেম্বর, ২০২২)। আনোয়ার ইবরাহিম বলেন যে, তার প্রাথমিক ফোকাস জীবনযাত্রার ব্যয়ের ওপর থাকবে কারণ তিনি একটি মন্থর অর্থনীতি এবং একটি ঘনিষ্ঠ নির্বাচনের পরে গভীরভাবে বিভক্ত দেশ নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
নতুন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইবরাহিমের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। ঝানু রাজনীতিক হিসেবে তিনি এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃতিত্বের পরিচয় দিতে পারবেন বলে বিশ্লেষকদের অভিমত। সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের পেরিকাতান ন্যাসিওনাল (পিএন) শক্তিশালী বিরোধী দল; তার ত্রুটি বিচ্যুতি ধরার জন্য ওঁৎ পেতে আছে। ভবিষ্যতের ফলাফল জানার জন্য আরো কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও গবেষক
ফৎশযধষরফ০৯@মসধরষ.পড়স




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com