বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩১ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

আজ থেকে শুরু পবিত্র জমাদিউস সানি মাস

ইসলাম ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২

বাংলাদেশের আকাশে গত শনিবার কোথাও ১৪৪৪ হিজরি সনের পবিত্র জমাদিউস সানি মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে, ২৫ ডিসেম্বর (রোববার) পবিত্র জমাদিউল আউয়াল মাস ৩০ দিন পূর্ণ হয়েছে। আজ ২৬ ডিসেম্বর (সোমবার) থেকে পবিত্র জমাদিউস সানি মাস গণনা শুরু হবে। গত শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মুনিম হাসান। সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়সমূহ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, গত ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৪ হিজরি, শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র জমাদিউস সানি মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব ও সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী লেখা নিবন্ধ ‘জমাদিউস সানি মাসের তাৎপর্য ও আমল’ দৈনিক প্রথমআলোর সৌজন্যে দৈনিক খবরপত্রের পাঠকদের জন্য তুল ধরা হলো:‘আরবি বর্ষপঞ্জির হিজরি সনের ষষ্ঠ মাস হলো জমাদিউস সানি। এর জোড়া মাস হলো ‘জমাদিউল আউয়াল’। এটি হিজরি সনের প ম মাস। এর বাংলা অর্থ হলো প্রথম জুমাদা ও দ্বিতীয় জুমাদা বা প্রথম শীত ও দ্বিতীয় শীত; অর্থাৎ শীতকালের প্রথম মাস ও শীতকালের দ্বিতীয় মাস। আরবে তৎকালে এই দুই মাস ছিল শীতকাল। আরবিতে মাস দুটির নাম হলো ‘আল জুমাদাল উলা’ ও ‘আল জুমাদাল উখরা’ বা ‘আল জুমাদাল আখিরাহ’ অথবা ‘আল জুমাদাস সানিয়াহ’। সহজ করে বললে প্রথমটি, ‘জুমাদাল উলা’; দ্বিতীয়টি, ‘জুমাদাল উখরা’ বা ‘জুমাদাল আখিরা’ অথবা ‘জুমাদাস সানিয়াহ’। আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে মাস দুটি ‘জমাদিউল আউয়াল’ ও ‘জমাদিউস সানি’ নামে সমধিক পরিচিত। (আল মুনজিদ)।
‘জুমাদা’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো স্থির, অবিচল, দৃঢ়, কঠিন; জমাটবদ্ধ, নিস্তব্ধ, নীরব, নিথর, পাথর; শুষ্ক, নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য, বিশ্বস্ত; শীতল, শীতকাল, শীতবস্ত্র; কার্পণ্য, বদ্ধমুষ্টি; কিংকর্তব্যবিমূঢ়, অস্থির সময়, চিন্তাযুক্ত অবস্থা। যেহেতু শীতকালে তীব্র শীতে তরল পানি জমে কঠিন বরফে পরিণত হয়ে যায়; জড় পদার্থগুলো জমে শক্ত হয়ে যায়; উদ্ভিদ ও জীব নিথর হয়ে যায়; প্রাণীরা নীরব হয়ে যায়; তাই এই মাসকে এই নামে নামকরণ করা হয়েছে। ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেন, ‘জুমাদা’ হলো শীতকাল। এটি বসন্তের নিকটবর্তী, গ্রীষ্মের পূর্ববর্তী। দুই ভূমির সীমানা বা দুই বাড়ির সীমানাকে এবং নিকট প্রতিবেশীকেও ‘জুমাদা’ বলা হয়। একত্রে এই দুই মাসকে ‘জুমাদায়ান’ বা ‘জুমাদায়িন’ বলা হয়, এতদুভয় হলো ‘জুমাদা’–এর দ্বিবচন; অর্থ হলো ‘জুমাদাদ্বয়’। অন্যান্য মাসের মতো এই মাসেও অধিক পরিমাণে নেক আমল করা বাঞ্ছনীয়। এ মাসে নফল নামাজ ও নফল রোজা আদায় করা, দান–খয়রাত করার ফজিলত অনেক। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পাশাপাশি পাঁচ ওয়াক্ত নফল নামাজ তথা তাহাজ্জুদ, ইশরাক, চাশত, জাওয়াল ও আউওয়াবিন নামাজ আদায় করা ভালো। এ ছাড়া কাজা রোজা থাকলে তা পুরা করা; মান্নত রোজা থাকলে তা আদায় করা; মাসের ১, ১০, ২৯ ও ৩০ তারিখে রোজা রাখা এবং চাঁদের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ ‘আইয়ামে বিদ’–এর সুন্নাত রোজা রাখা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত ‘জমাদিউস সানি’ তথা ‘দ্বিতীয় জুমাদা’ মাসে ‘রজব’ মাসের প্রস্তুতি হিসেবে আরও বেশি নেক আমল এবং অধিক পরিমাণে নফল নামাজ ও নফল রোজা করা উচিত। মূল কথা হলো ‘হার কে কদরে শব দারাদ; হামা শব শবে কদর আস্ত’, অর্থাৎ ‘যিনি রাতের মূল্য দেন, প্রতি রাতকেই তিনি শবে কদর হিসেবে পান।’ মানে হলো, নেক আমল ও সৎকর্মে সাধারণ সময়ও অসাধারণ হয়ে ওঠে।
জিকির আসকার, দোয়া কালাম, দরুদ ও সালাম, তাসবিহ তাহলিল, তাওবা ইস্তিগফার, খতম তিলাওয়াত, সদকা খয়রাত ইত্যাদি আমলের মাধ্যমে মাস অতিবাহিত করলে নিশ্চিত এর বরকত ফজিলত লাভ করা যায়। অন্যথায় সময়ের অপচয়ের জন্য অনুতাপ ও অনুশোচনা করতে হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘পরকালে নেককার মুমিন জান্নাতিগণের কোনো আফসোস থাকবে না; বরং তাদের আফসোস থাকবে শুধু ওই সময়ের জন্য, যে সময়টুকু তারা নেক আমল ছাড়া অতিবাহিত করেছে বা বেহুদা কাটিয়েছে।’(তিরমিজি)। যেসব দিবসের ও যেসব মাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, সেই দিন ও মাসগুলোতে সাধারণত সবাই ইবাদত করে থাকেন, এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং যেসব দিন ও মাসের বিশেষ ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য কোরআন–হাদিসে উল্লেখ করা হয়নি, তাতে অধিক হারে নেক আমল করলে আমলকারী অবশ্যই অন্যদের অপেক্ষা এগিয়ে যাবেন ও অগ্রগামী হবেন ইনশা আল্লাহ।
শীত ও গরমের মৌসুমে বিশেষ ইবাদতের প্রসঙ্গে কোরআন কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যেহেতু কুরাইশদের আসক্তি আছে, তাদের আসক্তি শীত ও গ্রীষ্মে ভ্রমণের। অতএব তারা এই (কাবা) গৃহের প্রভুর ইবাদত করুক। যিনি তাদের ক্ষুধায় অন্ন দিয়েছেন এবং শঙ্কায় নিরাপত্তা দান করেছেন।’(সুরা-১০৬ কুরাইশ, আয়াত: ১-৪)।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com