উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলায় ১৬ টি অবৈধ ইটভাটার চলছে কার্যক্রম। নজরে পরেনি প্রশাসনের । মৌসুমের শুরুতেই এরই মধ্যে সবকটি ইটভাটায় ইট তৈরী করে আগুন দেয়েছে। ইটভাটায় জালানী হিসাবে শুরুতে ব্যবহার করা হয় শতশত মন কাঠ খড়ি। গলাকাটা দরে ইট বিক্রির অভিযোগ এলাকার ক্রয় জনমানুষের।
অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম ৭ দিনের মধ্যে বন্ধের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিলেও বাস্তবায়নের অগ্রগতি নেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। গত ৭ নভেম্বর বিচারপতি আশরাফুল ইসলাম ও বিচারপতি সোহরাওর্য়াদির গঠিত হাইকোট ব্রেঞ্চ এসংক্রান্ত রুলের বিষয়ে আদেশ দেন। জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলায় ১৬ টি ইটভাটার মধ্যে ৩টির ছাড়পত্র থাকলেও ১৩ টি অবৈধভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। অপরদিকে কয়লার মূল্যসহ বিভিন্ন দ্রব্যমূল্যের অজুহাতে ইটের গলাকাটা মূল্যে বিক্রির অভিযোগ ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে। এতে রয়েছে রৌমারীতে মের্সাস এমজিএস ব্রিক্স প্রোঃ আব্দুল মান্নান সায়দাবাদ, মেসার্স বাবা মায়ের দোয়া ব্রিক্স প্রোঃ সাইফুল ইসলাম টাপুরচর, মেসার্স এইচকে ব্রিক্স-১ প্রোঃ জেসমীন নাহার লাকী তুরারোড, মেসার্স এইচ কে ব্রিক্স-২ প্রোঃ জেসমীন নাহার লাকী মোঃ সেলিম মাহমুদ তুরারোড, মেসার্স এডি ব্রিক্স প্রোঃ হারুনর রশিদ নটান পাড়া, মেসার্স এসবি ব্রিক্স-১ প্রোঃ রোকসানা পারভীন বর্তমানে (শফিয়ার রহমান) রৌমারী বাজার, মেসার্স এসবি ব্রিক্স-২ প্রোঃ শফিয়ার রহমান রৌমারী বাজার, মেসার্স আরএমজি ব্রিক্স প্রোঃ বানিজ মিয়া সায়দাবাদ, মেসার্স ডিজিটাল ব্রিক্স প্রোঃ ছাইফুর রহমান কোনাচি পাড়া রৌমারী, মেসার্স এসএসবি ব্রিক্স প্রোঃ আবুল হাশেম সায়দাবাদ রৌমারী, মেসার্স ভাই ভাই ব্রিক্স প্রোঃ আবুল হোসেন দাঁতভাঙ্গা টাপুরচর হাজির হাট, মেসার্স এনএম ব্রিক্স প্রোঃ নজরুল ইসলাম কুটিরচর রৌমারী, রাজিবপুরে মেসার্স আকাশ ব্রিক্স প্রোঃ হাবিবুর রহমান, ধুলাউরি রাজিবপুর, মেসার্স এডিবি ব্রিক্স প্রোঃ তহিদুল ইসলাম ধুবলিয়া পাড়া সুইচ গেট রাজিবপুর, মেসার্স নাম্বার ওয়ান ব্রিক্স প্রোঃ রফিকুল ইসলাম, ধুলাউরি সুইচ গেট রাজিবপুর, মেসার্স বিএসবি ব্রিক্স প্রোঃ বিশ্বজিৎ সাহা রাজিবপুরে কোনটিরই লাইসেন্স ও ছাড়পত্র বিহীন অবৈধ ইটভাটা স্থাপন, প্রস্তুত ও পরিচালনায় সরকারি নির্দেশনা তোয়াক্কা না করে ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে। সব ইটভাটাই ফসলি জমি ঘেষে স্থাপন করা হয়েছে। অন্যদিকে সরকারের ১২০ ফিট উচু চিমনি দিয়ে ইটভাটা তৈরীর নির্দেশনা থাকলেও অনেক ভাটায় মান্ধাত্বামলের চিমনি দিয়ে ইটভাটার কার্যক্রম চালাচ্ছেন। ধোয়ায় ক্ষতি হচ্ছে গাছ পালা, বাড়ীঘর, বাড়ীর পরিবেশ, ছোট বড় বয়স্ক মানুষের সর্দিকাশি জ্বর ও হাছি হচ্ছে সর্বত্রই। নেই কোন প্রশাসনের নজরদারী। ইটভাটার নিকটতম ধান চাষির কৃষকগণ বলেন, ইটভাটার ধোয়ায় আমাদের অনেক ধান নষ্ট হয়ে যায়। গত বছর এমনি ভাবে ৫/৬ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়েছে। প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দেয়ার পরেও ভাটার মালিকের কিছুই হয়নি। আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রাখছি। কারন তারা প্রভাবশালী। তাদেরকে তো কেউ কিছুই করতে পারবে না। উপজেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক আবুল হোসেন, বানিজ মিয়া, বিশ্বজিৎ সাহা রাজিবপুরসহ অনেকেই জানান, আমরা ইট ভাটায় কাঠ পোড়াইনা, শুধু প্রথম চুলা জ্বালাতে কয়েকশত মন কাঠ দিয়ে আগুন ধরাতে হয়। বাকী সময় কয়লা দিয়েই ইট পোড়ানো হয়। বর্তমানে কয়লার সংকট ও দাম বেশী হওয়ায় ইটের দাম বেশী পড়ে যায়। বাধ্য হই ইটের দাম বেশী নিতে। তবে আমরা অনেকেই ছাড়পত্র ও লাইসেন্সের জন্য দরখাস্ত করেছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুবণ আখতার জানান, তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। সহকারি পরিচালক জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর রেজাউল করিমের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, রৌমারী রাজিবপুরে মোট ১৬ টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ৩ টি ভাটার ছাড়পত্রের অনুমোটি থাকলেও বাকি গুলির কোন অনুমতি নেই। তবে আমরা অন্যান্য উপজেলায় ইটভাটার উপর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। খুব দ্রুত রৌমারী ও রাজিবপুরে গিয়ে অবৈধ ইটভাটার আইনত ব্যবস্থা গ্রহণে ভ্রাম্যমান পরিচালনা করা হবে।