গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে পারলেই, বাংলাদেশ মুক্ত হবে। আমাদের নেতাকর্মীরা মুক্ত হবে। আমরা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারবো। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ও মির্জা আব্বাসসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করে ঢাকাস্থ ঠাকুরগাঁও জাতীয়তাবাদী ফোরাম।
এ সময় গয়েশ্বর চন্দ্র আরো বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ গণতন্ত্র চায়। জনগণ তাদের ভোট নিরাপদে দিতে চায়। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে পারলে, বাংলাদেশ মুক্ত হবে। মানুষ ভোট দিতে পারবে। দেশের আদালত আজ স্বাধীন নয়। স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায়ও না। সেই কারণে আমাদের আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের সংগ্রাম করতে হবে। ফ্যাসিবাদ সরকার কখনো নিরস্ত্র জনগণের সাথে সংগ্রাম করে টিকতে পারবে না। আগেও পারেনি। এই সরকারের পতন অনিবার্য। তিনি বলেন, আমরা আমাদের নেতাদের মুক্তি কার কাছে চাইব। তিনি আমাদের দলের শীর্ষনেতাদেরকে ধরেছেন, তিনি তো ছাড়বেন না। আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত একবার বলেছিলেন, ‘বাঘে ধরলে বাঘে ছাড়ে হাসিনা ধরলে কাউকে ছাড়ে না’। তাই এই সরকারের কাছে মুক্তি চেয়ে লাভ নেই।
তিনি আরো বলেন, ঢাকার সমাবেশ নিয়ে সরকার অমানবিক কর্মকা- ঘটিয়েছে। আমাদের নেতা ডা. জাহিদের কাছে সমাবেশ করার অনুমতিপত্র দিয়ে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে রাতের অন্ধকারে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। নানা নাটকীয়তার পরে জেলখানায় পাঠায়। তাদেরকে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে সংর্ঘষের ঘটনায় উস্কানিদাতা হিসেবে জেলে পাঠানো হয়েছে। অথচ মামলার এজাহারে তাদের নাম নেই। তারপরও নি¤œ আদালতে তাদের জামিন মিলেনি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা আদালতকে একটি কথাই বলতে চাই, আমরা ন্যায়বিচার চাই। যাদেরকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে, তাদের নিয়ে আমরা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই। আমরা করুনা চাই না। এতো দিন আমরা ন্যায়বিচার পাই নাই।
খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাননি উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের নেত্রী ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন। তার প্রতি ন্যায়বিচার করা হয়নি। অবিচারের সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশের ইতিহাসে খালেদা জিয়া ব্যতিত এমন কোনো নজির নেই যে, এ সংক্রান্ত মামলা কেউ জামিন পায়নি। তিনি বলেন, আমরা কার কাছে বিচার চাইবো। বিচার বিভাগ যদি আলাদা হতো, বিচারপতিরা যদি বলতে পারতো যে তারা স্বাধীন। তাহলে আমরা ন্যায়বিচার পেতাম। কিন্তু এখন আমাদের ন্যায় বিচার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা আর আমাদের নেতাদের মুক্তি চাইবো না, এখন তাদেরকে মুক্ত করবো। আমরা গণতন্ত্র, গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসসহ সকল নেতাকর্মীদের আমার মুক্ত করবো।
তিনি আরো বলেন, আমার চাই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন। সেই নির্বাচনের বাধা সরকার প্রধান। তিনি যতক্ষণ ক্ষমতায় থাকবেন, ততক্ষণে পুলিশ, র্যাব, আদালত, প্রশাসন বাধা থাকবে। তিনি ক্ষমতায় না থাকলে, পুলিশ জনগণের পক্ষে কাজ করবে। পুলিশ আর কখনো জনগণের ওপর অত্যাচার করবে না। জনগণের খাদেম হিসেবে কাজ করবে। এ কারণে আমরা বলছি, আগামী সুষ্ঠ নির্বাচনের একমাত্র পথ হচ্ছে তার পদত্যাগ। সরকার পদত্যাগ করলেই খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসসহ সকল কারাবন্দির মুক্তি মিলবে।
সংগঠনের সভাপতি সোহেল রানার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপি নেতা মীর নেওয়াজ, প গড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, শফিকুল ইসলাম বাবুল, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, ওমর ফারুক সাফিন, কামাল আনোয়ার আহম্মেদ প্রমুখ।