মিলের কারখানার টারবাইনের নিচে সংরক্ষিত এলাকায় মবিল ড্রামের চাবি নিচে নামিয়ে দিয়ে ৮শত লিটার মবিল ড্রেনআউট হওয়ার পর টারবাইন-১ অকেজো হয়ে পড়ার ষড়যন্ত্র ঘটনার ১৫ দিন পার হলেও আজো শনাক্ত হয়নি প্রকৃত অপরাধী। অপরিচিত একজনকে সিসিটিভি ফুটেজ এ প্রবেশ করতে দেখা গেলেও জানা যায়নি ওই ব্যক্তির নাম পরিচয়। টারবাইন এ ত্রুটি হওয়ার পর থেকেই একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও আজ পর্যন্ত এই ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। সুত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ অবস্থিত মোবারকগঞ্জ সুগার মিলস লিমিটেড গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখ বিকাল ৪ টায় আনুষ্ঠানিক ভাবে ২০২২- ২০২৩ মৌসুমের আখ মাড়াই শুরু হয় । শুরুর দুদিন পার হতে না হতেই ২৫ ডিসেম্বর আনুমানিক বিকাল ৪ টা ৫০ মিনিটে মিলের পাওয়ার টারবাইনে ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় কারখানার আখ মাড়ায়সহ সকল কার্যক্রম। ৪৩ ঘন্ট পর মিলটির ত্রুটি কাটিয়ে ২৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে পুনরায় আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু হয়। এটি কোন স্বাভাবিক ত্রুটি ছিল না। টারবাইন এ ত্রুটি হওয়ার পর থেকেই একাধিক তদন্ত কমিটি প্রকৃত কারণ উদঘাটনে কাজ শুরু করলেও আজ পর্যন্ত এই ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে মোচিকের প্রশাসন বিভাগের দায়িত্বে থাকা উপ-ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোঃ আশেকুজ্জামান (ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পক্ষে) স্বাক্ষরিত তিন জন শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্ত পত্র প্রদান করে। কিন্তু মিলের কারখানার মধ্যে টারবাইনের নিচে সংরক্ষিত এলাকায় ২টা ৪৫ মিনিটে অপরিচিত একজন ব্যক্তিকে সিসিটিভি ফুটেজ এ প্রবেশ করতে দেখা গেল এখনো চিহ্নিত হয়নি ওই ব্যক্তির নাম পরিচয়। বহিরাগত এই ব্যক্তির প্রবেশের কিছুক্ষণ পরেই তড়িঘড়ি করে বের হয়ে যেতে দেখা যায়। এরপর ৪ টা ৯ মিনিটে প্রচন্ড ধোয়া হয়ে টারবাইন-১ অকেজো হয়ে পড়ে। একই সাথে ঐ টারবাইনের ৮ শত লিটার মবিল ড্রেনআউট হয়ে যায়। পরবর্তীতে দেখা যায়, মবিল ড্রামের চাবি নিচে নামানো। মবিল না থাকায় ভেঙ্গে যাই ভিতরের যন্ত্রাংশ এবং সাথে সাথেই বিকল হয়ে পড়ে টারবাইনটি। আর সঙ্গত কারণেই বন্ধ হয়ে যায় মিলটি। মোচিক প্রশাসন ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রসুলের তাৎক্ষণিক যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের কারণেই কেবল ৪৩ ঘন্টা পরেই পুনরায় মিলটি চালু করা সম্ভব হয়। ফলে একদিকে যেমন রাষ্ট্রীয় স¤পত্তি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাই অন্যদিকে মিল কেন্দ্রিক কর্মজীবী মানুষের জীবন-জীবিকার পথ সমুন্নত থাকে। এদিকে বহিরাগত ব্যক্তি প্রবেশ এর পরপরই এরকম ঘটনা ঘটা কে মিলটির সাধারণ শ্রমিক-কর্মচারীরা ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন। তাদের অনেকের ভাষ্যমতে, মিলটি চিরতরে বন্ধ করে দেয়ার উদ্দেশ্যেই টারবাইনে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই ত্রুটি ঘটানো হয়েছে বলে মনে করেন তারা। মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রসুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করেলেও আজো ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করতে পারেনি কতৃপক্ষ। এ ব্যাপারে মোবারকগঞ্জ সুগার মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিবুর রহমান খান জানান, দায়িত্ব অবহেলার কারণে তিন শ্রমিককে সায়মিক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। অপরিচিত ব্যক্তিকে সিসিটিভি ফুটেজ এ প্রবেশ করতে দেখা লোকটির বিষয়ে তিনি বলেন, জি এম (প্রশাসন) এর সাথে কথা বলেন।