বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

প্রিন্স উইলিয়াম আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছেন : প্রিন্স হ্যারি

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২৩

প্রিন্স হ্যারি দাবি করেছেন তার ভাই প্রিন্স উইলিয়াম তাকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করেছেন। রাজা চার্লস ও প্রিন্সেস ডায়ানার ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারি তার আত্মকথা ‘স্পেয়ার’-এ একথা লিখেছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটেনের পত্রিকা ’দ্যা গার্ডিয়ান’। পত্রিকাটি বলছে তারা বইটির একটি অগ্রিম কপি হাতে পেয়েছে। সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, বইয়ে হ্যারির স্ত্রী মেগানকে নিয়ে দু’ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়ার জেরে এই ঘটনা ঘটে। ’ও আমার জামার কলার চেপে ধরে, আমার গলার নেকলেস ছিঁড়ে ফেলে এবং আমাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়’ প্রিন্স হ্যারিকে উদ্ধৃত করে লিখেছে দ্যা গার্ডিয়ান।
প্রিন্স উইলিয়ামের সরকারি বাসভবন কেনসিংটন প্রাসাদ ও বাকিংহাম প্রাসাদ দু’জায়গা থেকেই বলা হয়েছে, তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না। কেনসিংটন প্রাসাদ প্রিন্স উইলিয়ামের মুখপাত্র ও রাজা চার্লসের মুখপাত্র বাকিংহাম প্রাসাদ মনে করছেন, কোনো বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া না দেখালে তা নিয়ে উত্তেজনা কমে যায়। ইতোমধ্যে ব্রিটেনের বেসরকারি টিভি চ্যানেল আইটিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকার প্রচারের আগে আগাম একটি ক্লিপে প্রিন্স হ্যারিকে বলতে শোনা যায়, মে মাসে রাজা চার্লসের অভিষেকে তিনি যোগ দেবেন কিনা সে বিষয়ে এখনই কথা দিতে পারছেন না। তিনি বলেন, ’এখন এবং মে মাসের মধ্যে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। বিষয়টা রাজ পরিবারের উপর নির্ভর করছে।’
ডিউক অফ সাসেক্স, প্রিন্স হ্যারির আত্মকথা প্রকাশিত হবে আগামী মঙ্গলবার। কিন্তু গার্ডিয়ান বলছে বই প্রকাশের আগে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেই তারা বইটির একটি আগাম কপি সংগ্রহ করেছে। তবে বিবিসি নিউজ এখনো ‘স্পেয়ার’-এর কপি হাতে পায়নি। গার্ডিয়ান বলছে, বইটিতে বলা হয়েছে ২০১৯ সালে প্রিন্স উইলিয়াম তার বাসায় প্রিন্স হ্যারির কাছে একটি মন্তব্য করলে এই বিত-ার সূত্রপাত হয়।
পত্রিকা লিখছে, বইয়ে প্রিন্স হ্যারি লিখেছেন, তার ভাই মেগান মার্কেলের সাথে তার বিয়ের সমালোচনা করেন এবং প্রিন্স হ্যারি মেগান মার্কেলকে জটিল, অভদ্র ও রুক্ষ বলে বর্ণনা করেন।
বলা হচ্ছে ডিউক অফ সাসেক্স লিখেছেন, দু’ভাইয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়লে তার বড় ভাই প্রাসাদের ’প্রচার বিভাগের কথাগুলোই তোতা পাখির বুলির মতো আওড়ান।’

প্রিন্স হ্যারিকে উদ্ধৃত করে পত্রিকা জানাচ্ছে, ওই দিনের ঘটনায় যা যা ঘটেছিল, তার মধ্যে ছিল শারীরিকভাবে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা। ’ও পানির গ্লাসটা রাখল, তারপর আমাকে আরেকটা গালি দিল, তারপর আমার দিকে এগিয়ে এল। সবকিছু খুব দ্রুত ঘটে গেল।’ ‘ও আমার জামার কলার চেপে ধরল, আমার গলার হারটা ছিঁড়ে ফেলল, তারপর আমাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিল।’ ’কুকুরের খাবারের জন্য মেঝেতে যে বাটি রাখা ছিল, আমি তার ওপর পড়ে গেলাম। বাটিটা আমার শরীরের নিচে ভেঙে গেল। ভাঙা টুকরোগুলো আমার শরীরে ফুটছিল। এক মুহূর্তের জন্য আমি সেখানে পড়ে রইলাম। আমি হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। এরপর আমি উঠে দাঁড়ালাম। ওকে বললাম দূর হও।’ এই ঘটনা পরিবারের মধ্যে কলহের একটা নিরানন্দ চিত্র তুলে ধরেছে। যে কলহ ব্রিটিশ রাজ পরিবারের একেবারে কেন্দ্রে এবং যেখানে আপসের কোনো ইঙ্গিত নেই। পত্রিকায় এই কাহিনিটি লিখেছেন আমেরিকায় গার্ডিয়ান পত্রিকার ওয়েবসাইটের সাংবাদিক মার্টিন পেনগিলি। তিনি বলেন, তিনি প্রিন্স উইলিয়ামের যোগাযোগ দফতরের সাথে বিষয়ে কথা বলেননি। সংবাদদাতা বলেন, তার নিবন্ধটি হ্যারির বই নিয়ে প্রতিবেদন। যে বইটি হ্যারি লিখেছেন, তা হ্যারির দেয়া ঘটনার বিবরণ। পেনগিলি বিবিসির রেডিও ফাইভ লাইভ অনুষ্ঠানে বলেন, ’এ ঘটনার খবর রিপোর্ট করতে আমরা খুবই সাবধানতার সাথে এটাকে লড়াই বলিনি, কারণ হ্যারি বলেছেন তিনি শারীরিকভাবে কোনো সংঘাতে যাননি।’ প্রিন্স হ্যারি তার বইয়ে লিখেছেন যে তার ভাই তাকে বলেছিলেন, ’তুমিও আমাকে পাল্টা আঘাত করো, কিন্তু তিনি তা করতে অস্বীকার করেন’ লিখেছে গার্ডিয়ান পত্রিকা এবং হ্যারিকে উদ্ধৃত করে লিখেছে, প্রিন্স উইলিয়ামকে পরে অনুতপ্ত দেখায় এবং তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায়, প্রিন্স হ্যারি সব সময় গাঢ় রংয়ের একটি মালা গলায় পরতেন, যা দেখা গেছে ইনভিক্টাস গেমসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় এবং ২০১৯ এর সেপ্টেম্বরে তিনি যখন মেগানকে নিয়ে বিদেশ সফর করেন, তখনও তার গলায় এই হার ছিল।
প্রিন্স হ্যারির বইয়ের প্রকাশক পেঙ্গুইন র‍্যানডম হাউস এখনো নিশ্চিত করেনি যে ফাঁস হওয়া এই বিবরণ হ্যারির আত্মকথা ‘স্পেয়ারের’ প্রকৃত অংশবিশেষ। তবে প্রিন্স হ্যারি তার ভাইয়ের সাথে কঠিন সম্পর্ক নিয়ে সম্প্রতি কথাবার্তা বলেছেন। হ্যারি ও মেগান দম্পতিকে নিয়ে নেটফ্লিক্সের তথ্যচিত্রে প্রিন্স হ্যারি তার ভাই ও তার বাবা, বর্তমান রাজার সাথে তার সাক্ষাতের বর্ণনাও দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ওই বৈঠক হয়েছিল ২০২০ সালে। যে বৈঠকে ছিলেন পরলোকগত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথও। প্রিন্স হ্যারি সেটাকে ’বুক দুরদুর করা’ বৈঠক বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভাই আমার ওপর প্রচন্ড চিৎকার-চেঁচামেচি করছিল এবং বাবা এমন সব কথা বলছিলেন যেগুলো আদৌ সত্যি নয়। আর আমার দাদি সেখানে চুপ করে বসেছিলেন এবং মনে হচ্ছিল তিনি সব গলাধঃকরণ করছেন।’
গার্ডিয়ান বলছে, এপ্রিল ২০২০-এ দাদা প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্যানুষ্ঠানের পর প্রিন্স অফ ওয়েলস, তার পিতা চার্লস ও ভাই প্রিন্স উইলিয়ামের সাথে বৈঠকের বিস্তারিত জানান প্রিন্স হ্যারি। প্রিন্স হ্যারির আত্মকথা ‘স্পেয়ার’ প্রকাশের আগে আইটিভি টিভি চ্যানেলে দেয়া প্রিন্স হ্যারির একটি পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকার প্রচারিত হবে ৮ জানুয়ারি।
এই সাক্ষাৎকারে প্রিন্স হ্যারি বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে আগের মত ফিরে পেতে চাই, আমি আমার ভাইকেও ফিরে পেতে চাই।’ কিন্তু আইটিভির সাংবাদিক টম ব্রেডিকে প্রিন্স হ্যারি বলেন, ’কিন্তু আপসের কোনো লক্ষণই তারা দেখছেন না,’ তবে এ প্রসঙ্গে কার কথা হ্যারি বলেছেন তা স্পষ্ট নয়। বাকিংহাম প্রাসাদ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। সূত্র : বিবিসি
আফগানিস্তানে ২৫ জনকে হত্যা করেছিলেন প্রিন্স হ্যারি : ব্রিটেনের প্রিন্স হ্যারি স্বীকার করেছেন যে আফগানিস্তানে অ্যাপাচি হেলিকপ্টারের পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি ২৫ জনকে হত্যা করেছিলেন। তার প্রকাশিতব্য গ্রন্থ ‘স্পেয়ার’-এর উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছে ডেইলি টেলিগ্রাফ।
৩৮ বছর বয়স্ক প্রিন্স হ্যারি তালেবানের বিরুদ্ধে দু’দফায় দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০০৭-২০০৮ সময়কালে বিমান হামলার নির্দেশদানকারী এয়ার-কন্ট্রোলার হিসেবে এবং ২০১২-২০১৩ সময়কালে অ্যাটাক হেলিকপ্টারের পাইলট হিসেবে কাজ করেন তিনি। বইতে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি পাইলট হিসেবে ছয়টি মিশনে অংশ গ্রহণ করে ‘মানুষের জীবন’ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, তিনি এ কাজের জন্য গর্বিতও নন, লজ্জিতও নন। বরং তিনি টার্গেটগুলোকে নির্মূল করাকে দাবার বোর্ড থেকে ‘দাবার ঘুঁটি’ সরানোর কাজ হিসেবে বিবেচনা করেন। হ্যারি ১০ বছর ব্রিটিশ সেনাবাহিনীকে কাজ করেন। তিনি ক্যাপ্টেন মর্যাদায় উন্নীত হয়েছিলেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com