বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

মাওলানা ইলিয়াস (রহ.)-এর জীবন ও অবদান

মুহাম্মাদ হেদায়াতুল্লাহ:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৩

পৃথিবীর আনাচে-কানাচে ইসলামের চর্চা ও তার সুমহান বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাবলিগ জামাতের অবদান অনস্বীকার্য। ১৯২৫ সালে ভারতের উত্তর-পশ্চিমা ল মেওয়াতের সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্বিন প্রচারের কার্যক্রম শুরু হয়। কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে মানুষের মধ্যে ইসলামের শিক্ষা ছড়িয়ে দিতেই মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ শুরু করেছিলেন।
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন : মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) ১৩০৩ হিজরি মোতাবেক ১৮৮৫ সালে উত্তর প্রদেশের মুজাফ্ফর নগর জেলার কান্দলায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রসিদ্ধ আলেম মাওলানা ইসমাইল (রহ.) ছিলেন তাঁর বাবা এবং মাওলানা ইয়াহইয়াহ (রহ.) ছিলেন তাঁর বড় ভাই। তাঁর মা ছিলেন হাফেজা সফিয়্যাহ। কোরআন তিলাওয়াত, নামাজ ও অন্যান্য ইবাদতে নিমগ্নতা ছিল সম্ভ্রান্ত এই পরিবারের সব সদস্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এমনকি বিয়ের পর তাঁর মা পুরো কোরআন হিফজ করেন। ঘরের সব কাজের পাশাপাশি রমজান মাসে ৪০ বার কোরআন খতম করতেন তিনি। মক্তবেই শুরু হয় মাওলানা ইলিয়াস (রহ.)-এর পড়াশোনা। পারিবারিক ঐতিহ্য অনুসারে শৈশবেই পবিত্র কোরআন হিফজ করেন। এরপর দিল্লির নিজামুদ্দিনে বাবার কাছে অবস্থান গ্রহণ করেন। তাঁর নানি ছিলেন আল্লাহভীরু একজন নারী। তিনি ইলিয়াস (রহ.)-এর মধ্যে সুপ্ত গুণাবলি উপলব্ধি করে তাঁর জন্য আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে দোয়া করেন।
পড়ালেখা ও গাঙ্গুহি (রহ.)-এর সান্নিধ্য : তিনি ছোটবেলা থেকে পড়ালেখায় খুবই মনোযোগী ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি নিয়মিত তাহাজ্জুদ, জিকির ও দোয়ায় সময় কাটাতেন। ১০ বছর বয়স থেকে ২০ বছর বয়স পর্যন্ত দীর্ঘ এক দশক তিনি মাওলানা রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি (রহ.)-এর সান্নিধ্যে কাটান। ১৯০৫ সালে গাঙ্গুহি (রহ.)-এর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি তাঁর সান্নিধ্যে থাকেন। দীর্ঘ সান্নিধ্য তাঁকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি (রহ.) ছাত্রাবস্থায় কাউকে বাইআত না করালেও ইলিয়াস (রহ.)-কে বাইয়াত করান। ১৯০৮ সালে মোতাবেক ১৩২৬ হিজরিতে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে ভর্তি হন। সেখানে শায়খুল হিন্দ মাহমুদ হাসান দেওবন্দি (রহ.)-এর কাছে কাছে সহিহ বুখারি ও সুনানে তিরমিজির পাঠ গ্রহণ করেন।
তাবলিগের কার্যক্রম : ১৩২৮ হিজরি মোতাবেক ১৯১০ সালে মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) সাহারানপুরের মাজাহিরুল উলুম মাদরাসার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। ১৩৩০ হিজরি মোতাবেক ১৯১২ সালে তাঁর মামা মাওলানা রউফুল হাসানের মেয়েকে বিয়ে করেন। মাওলানা আশরাফ আলী থানবি (রহ.) তাঁর বিয়ের খুতবা পড়েন। ১৯১৫ সালে পবিত্র হজ পালন করতে মক্কায় যান তিনি। দুই ভাইয়ের মৃত্যুর পর তিনি নিজামুদ্দিনের মসজিদ ও মাদরাসার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯২০ সালে মেওয়াত অ লে দ্বিনি শিক্ষার মাধ্যমে তাবলিগের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেন। প্রথম দিকে মক্তব শিক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তি পর্যায়ে সংশোধনের চেষ্টা করেন। এরপর ১৩৪৪ হিজরি মোতাবেক ১৯২৫ সালে দ্বিতীয় হজ পালনকালে মদিনায় দীর্ঘ পাঁচ মাস অবস্থান করে তাবলিগের কার্যক্রম নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করেন। এই সফর থেকে ফিরে এসে পুরোদমে তাবলিগের কাজ শুরু করেন। ১৩৫২ হিজরি মোতাবেক ১৯৩৩ সালে তৃতীয়বার হজের সফরে যান এবং ফিরে আস্থার সঙ্গে আজীবন তাবলিগের কাজ করে যান।
ইন্তেকাল : ১৯৪৪ সালের ১৩ জুলাই ফজরের আগে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর আগে তিনি জিজ্ঞাসা করেন, ‘আগামীকাল কি বৃহস্পতিবার? উপস্থিত সবাই হ্যাঁ জবাব দেয়। এরপর তিনি বলেন, আমার কাপড় ভালো করে দেখো, তাতে কোনো নাপাকি আছে কি না? সবাই জানাল যে তা পবিত্র। অতঃপর অজু করে সবার সঙ্গে নিজ কক্ষে এশার নামাজ পড়েন। এরপর সবাইকে তাঁর জন্য রাতে বেশি করে দোয়া করতে বলেন। ভোররাতে ফজরের আজানের আগেই তিনি ইন্তেকাল করেন। তথ্য : সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভি (রহ.)-এর বই ‘মুহাম্মাদ ইলিয়াস কান্ধলভি ওয়া দাওয়াতুহু ইলাল্লাহ’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com