দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ১০ নম্বর হরিরামপুর ইউনিয়নের আনন্দ বাজারে অবস্থিত মা-মাসী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জমি জবরদখল, বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজে বাধা প্রদান, ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক ও স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গের নামে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে গত শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫ টায় স্কুল মাঠে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। হরিরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলিগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন শাহ্ এতে সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: মাসুদুর রহমান মাসুদ শাহ্্, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে শ্রী মনোরঞ্জন সরকার, জিতেন্দ্র নাথ সরকার, মুকুল চন্দ্র সরকার, আকরাম হোসেন, হরিষ চন্দ্র মহন্ত, লুৎফর রহমান, ইউপি সদস্য বেলায়েত হোসেন, ইলিয়াস হোসেন, নুরবানু, ইউপি সদস্য আন্জুআরা ও সাবেক মহিলা মেম্বার মাসকুরা খাতুন। প্রতিবাদ সমাবেশে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শাহানুর আলম স্বাগত বক্তব্য দেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মো: মাসুদুর রহমান মাসুদ শাহ্্ তার বক্তব্যে বলেন, যে ব্যক্তিটি বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে দিনাজপুর আমলী আদালত-৫ (পার্বতীপুর) এ মামলা দয়ের করেছেন আমার বিশ্বাস তিনি নেহায়েত কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এ মামলাটি করেছেন। মামলার বাদী রমনী মহন্ত (৪০) মৃত স্বদেশ সরকারের আপন ভ্রাতা। তিনি বিদ্যালয়টির অন্যতম দাতা সদস্য। স্বদেশ সরকার বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে নৈশ প্রহরী হিসেবে নিয়োজিত থেকে সম্প্রতি মারা যান। তিনি বলেন, উপজেলার সবচেয়ে গরীব মানুষের বসবাস আনন্দ বাজার এলাকায়। এখানে ১৯৩০ সালে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টির নাম আনন্দ বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখান থেকে যেসব ছাত্র/ছাত্রী ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে পরে তাদের অধিকাংশই ঝরে পড়ে যায় কাছাকাছি কোন স্কুল না থাকায়। তাই ১৯৯৩ সালে মা-মাসী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর পর পিছিয়ে পরা মানুষদের মেয়েরা এখান থেকে পাশ করে অন্যত্র গিয়ে পড়ালেখা করতে পারছেন। চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর স্বার্থে, বিদ্যালয়টির অগ্রযাত্রার স্বার্থে দায়ের করা মিথ্যা মামলার প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান। অন্যান্য বক্তরা বলেন, বিদ্যালয়ের ভবন নির্মানের জন্য সরকার ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন চলতি অর্থ বছরে। এই নির্মান কাজে বাধা প্রদানের জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে তারা উলেখ করেন। গত ১ সেপ্টেম্বর দিনাজপুর আমলী আদালতে দায়ের করা মামলার তদন্তভার প্রদান করা হয়েছে সিআইডিকে। দায়ের করা মামলার প্রধান আসামী ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: মাসুদুর রহমান মাসুদ শাহ। অন্য আসামীরা হলেন মিজানুর রহমান, খলিলুর রহমান, ইয়াসিন আলী, রাশেদ আলী। সবার বাড়ি চাঁচেয়া আনন্দ বাজার এলাকায়। অপর ২ আসামী হলেন সাহাজুল ইসলাম সাজু ও শামীম। মামলায় ঘটনার তারিখ উলেখ করা হয়েছে গত ২৯ আগষ্ট। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার বাদী রমনী মহন্ত মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে বলেন, বিদ্যালয়ের জমি দিয়েছেন আমার ভাই স্বদেশ সরকার। ২৭ বছর আগে তাকে প্রলোভন দেখানো হয়েছিল বিদ্যালয়ে তার চাকুরি হবে এবং বেতন পাবেন নিয়োমিত। কিন্তু তার চাকরী হয়নি। মাস খানেক আগে তিনি মারা গেছেন অর্থ কষ্ট নিয়ে।