চলতি মৌসুমে নীলফামারী ডিমলা তিস্তা নদীর বালুচরে যেদিকে চোখ যাচ্ছে, শুধুই পেঁয়াজের আবাদ। দাম বেশি পাওয়ার আশায় এবার কৃষকেরা পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকেছেন। আবহাওয়া অনুকুলে এবং রোগ বালাইও কম- ফলে পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চরাঞ্চলবাসী। জানা গেছে, কয়েক বছর পেঁয়াজের সঙ্কট এবং দাম বেশি হওয়ায় এসব চরাঞ্চলের কৃষক অন্যান্য ফসলের চেয়ে পেঁয়াজ চাষে বেশি আগ্রহী। অন্যান্য বছরের তুলনায় গম ও তামাক চাষ না করে এবার অধিকাংশ কৃষক পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, টেপা খড়িবাড়ী, খগা খড়িবাড়ী, ঝুনাগাছ চাপানী, খালিশা চাপানী ইউনিয়নের তিস্তা নদীর চর ঘুরে দেখা গেছে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন। এসব চর এলাকার কৃষক বন্যায় রোপা আমন চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পেঁয়াজ চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন তারা। সরেজমিনে গিয়ে কৃষক নুর ইসলাম, হুকুম আলী, জুলহাস, আজাহার ও আবুল হোসেন এর সাথে কথা বলে জানা যায় তারা প্রত্যেকেই ৩/৪ বিঘা করে করে পেয়াজ চাষ করেছেন। ১৫শ টাকার বীজ কিনে রোপণ করে শতক প্রতি এক থেকে দেড় করে পেয়াজ ফলনের স্বপ্ন তার। হুকুম আলী বলেন, সব মিলে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এই ক্ষেতে। ৭০ শতক জমিতে ৭০ থেকে ৯০ মন পেয়াজ পেলে বাজার অনুযায়ী মন প্রতি ৫ থেকে ৬ শত টাকা বিক্রি হলে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি হবে বলে জানান তিনি। জুলহাস বলেন, খরচ ও পরিশ্রম কম হয়ে ভালো ফলন হওয়ায় চরের অধিকাংশ কৃষকেরাই এখন এই পেঁয়াজ চাষের দিকেই ঝুঁকছে। সহজ সেচ ব্যবস্থা ও ন্যায্য মূল্যের নিশ্চয়তা পেলে চরের পেঁয়াজ চাষ আরও বৃদ্ধি পেলে দেশের পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণ হতো। ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ সেকেন্দার আলী জানায় তিস্তার জেগে উঠা চরে এখন বিভিন্ন ধরনের ফসলাদি হচ্ছে। তিস্তার চরাঞ্চলে বন্যা পরবর্তী ফসল হিসাবে ৬৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। এতে বিঘা প্রতি ৬০/৭০ মন পেঁয়াজ উৎপাদিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর মসলা জাতীয় এই ফসলে কৃষকরা সময়সময় লাভবান হন। চরের কৃষকদের ভালো ফলনের জন্য আমরা কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক পরামর্শসহ বীজ থেকে শুরু করে অন্যান্য উপকরণাদি সরবরাহ করে যাচ্ছি।