বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

ভাষার আবেগ আবেগের ভাষা

মোস্তফা লুতফি মানফুলুতি
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) (মৃত্যু ৭৩ হি.) ছিলেন মদিনায় হিজরতের পর ভূমিষ্ঠ হওয়া প্রথম শিশু। তাঁর বাবা ছিলেন রাসুল (সা.)-এর প্রিয় সঙ্গী জুবাইর ইবনুল আওয়াম (রা.) এবং তাঁর মা ছিলেন আসমা বিনতে আবু বকর (রা.)। তাঁকে ইসলামের ইতিহাসে নবম খলিফা মনে করা হয়। মুয়াবিয়া বিন আবু সুফিয়ান (রা.)-এর পর তাঁর পুত্র ইয়াজিদ মারা গেলে আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) মক্কাকে মুসলিম বিশ্বের রাজধানী এবং নিজেকে খলিফা ঘোষণা দেন। সেই সময় আমিরুল মুমিনিন আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.)-এর কাছে তাঁর ভাই ইরাকের আমির মুসআব ইবনে জুবাইর মৃত্যুর খবর পৌঁছায়। এমন মর্মান্তিক খবরে তিনি মিম্বরে উঠে বসেন। অতঃপর চুপ করে থাকেন। তাঁর চেহারা কখনো লাল কখনো হলুদ রূপ ধারণ করে। এ সময় পাশে বসা কুরাইশের এক লোক বলল, কী ব্যাপার, তিনি কথা বলছেন না কেন? আল্লাহর শপথ, তিনি তো খুবই বিচক্ষণ বক্তা! তখন আরেকজন বলল, হয়তো তিনি আরব জাতির সর্দারের হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করছেন। এমন কঠিন সময়ে ভারাক্রান্ত হওয়া তাঁর জন্য অস্বাভাবিক নয়।
এদিকে মিসরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাআদ জাগলুল পাশা (মৃত্যু : ১৯২৭) তাঁর ভাই ফাতহি পাশা জাগলুলের মৃত্যুতে আয়োজিত শোকসভায় অংশ নেন। তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ দিয়ে সংক্ষিপ্ত কথা বলার ইচ্ছা করেন। কিন্তু কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁর মুখের আওয়াজ ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। অথচ সাআদ জাগলুল ছিলেন অত্যন্ত বিচক্ষণ ও স্থির প্রকৃতির লোক। জীবনে কখনো তিনি দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়েননি। জীবনের সব ক্ষেত্রে সুদৃঢ় থাকা একজন বিচক্ষণ বাগ্মী বক্তাও প্রিয়জনকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। বিভিন্ন সংকটময় পরিস্থিতিতেও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন মহানায়করা। প্রিয়জনদের হারিয়ে ভারাক্রান্ত মনে তারা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেনি। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অন্য বক্তা ও কবিরা অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় কথা বলেন। তাঁদের কাব্যিক ও আলংকারিক ভাষা শ্রোতাদের অন্তরে প্রবলভাবে রেখাপাত করে। অবশ্য সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সাআদ পাশা মনের দুঃখাগাথা তাদের মতো করে প্রকাশ করতে পারেননি। তখন তাঁর দুচোখ বেয়ে অশ্রু ফোঁটা গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তাঁর উষ্ণ অশ্রুর প্রভাব এতই বেশি ছিল যে উপস্থিত শ্রোতারা তাঁর বক্তব্য না শুনলেও ছোট-বড় সবাই কান্নায় ভেঙে পড়ে। অনুষ্ঠানস্থলে তৈরি হয় অভূতপূর্ব আবেগময় দৃশ্য। সাধারণত এমন দৃশ্য কোনো শোকসভায় দেখা যায় না। মূলত মানুষের মনে ক্ষত-বিক্ষত অন্তরের সংক্ষিপ্ত নীরব ভাষণ যে প্রভাব তৈরি করে অনেক সময় তা প-িতদের নাতিদীর্ঘ বক্তব্যও তৈরি করতে ব্যর্থ হয়। দীর্ঘ দিনের প্রিয় বন্ধু বা বিশিষ্টজনকে হারিয়ে যিনি কান্না করেন তিনি তো নিজ অঙ্গকে হারানো ব্যক্তির মতো কান্না করবে না। লেখক: ‘নাজরাত’ থেকে অনুবাদ করেন মুহাম্মাদ হেদায়াতুল্লাহ




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com