‘আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা, ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে, মামার বাড়ি যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে, আম কুড়াতে সুখ, পাকা আমের মধুর রসে, রঙিন করে মুখ। পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ আর আম কুড়ানো কবিতা ছোট বেলায় কেউ পরে নাই এমন কেউ আছে বলে আমার জানা নেই। তবে পাকা আমের এই বাস্তব রূপ পেতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস।গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে।আগে বাংলাদেশের মধ্যে রাজশাহী বিভাগ কে আমের জন্য বিখ্যাত বলা হত।আর এখন আম চাষের জন্যে রাজশাহী ও দিনাজপুর ছারা ও আম চাষে পিছিয়ে নেই জলঢাকা উপজেলা। জলঢাকা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। শনিবার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন গুরে দেখা যায়, আম বাগানের সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে আমের মুকুল। এ যেন কাচা হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন আম বাগান মালিকরা।এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলো। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। আম্রুপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষিরসা, হাড়িভাঙ্গা এর মধ্যে অন্যতম। ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানান আম বাগান মালিকরা। এবিষয়ে উপজেলার কয়েকজন আম বাগানের মালিকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে তাদের বাগানে লাগানো আম গাছের মুকুল আসতে শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। কিছু গাছে গাছে আমের মুকুল বের হচ্ছে। তারা জানান, আমের মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। আমের মুকুলের রোগ বালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন বলে জানান তারা। আম বাগান মালিকরা আরও জানান, বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন আহমেদ এর সাথে দৈনিক খবরপত্রের কাথা হলে তিনি জানান, এ সময় আমের বাগানে বসবাস করা হপার বা ফুদকী পোকা যারা মুকুলের ক্ষতি করে। এ পোকা দমনে বালইনাশক স্প্রে করতে হবে।এছাড়া ঠা-ার কারণে এমনিতেই হপার পোকা গাছের বাকলে লুকিয়ে থাকে। তবে আর ও এক সপ্তাহ পরে দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।সেই সঙ্গে সালফার জাতীয় ছত্রাক নাসক স্প্রে করার পরামর্শ দেন ওই কর্মকর্তা।তাছাড়া আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমের ভালো ফলন হবে।