একের পর এক বিদেশি কূটনীতিক বাংলাদেশ সফরে এসেছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিদেশি কূটনীতিকরা সরকারের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন, কিন্তু বিএনপির সঙ্গে কোনও বৈঠক করেননি। কূটনীতিকরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইতিবাচক বৈঠক করেছে, আর বিএনপি বন্ধুহীন হয়ে পড়েছে।’
গতকাল শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে মোহাম্মদপুরের মকবুল হোসেন কলেজ মাঠে এক ‘শান্তি সমাবেশ’-এ এসব কথা বলেন তিনি। ‘বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য-সহিংসতা ও আগুন সন্ত্রাসের প্রতিবাদে’ সমাবেশ করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ।
এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে কাকে আমন্ত্রণ দিল বা না দিল সেটা শেখ হাসিনা সরকারের কোনও মাথাব্যথা নেই। এদেশের গণতন্ত্র ঠিক আছে কিনা, সেটা হচ্ছে বর্তমান সরকারের ভাবনা ও ভূমিকা।’
আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার জন্য হাজারও তদবির করেও বিএনপি ব্যর্থ হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘বিদেশিদের সঙ্গে লবিং করেও ব্যর্থ হয়েছে তারা (বিএনপি)। এখন ঘরে বসে বসে হিন্দি সিরিয়াল দেখা, আর জানালা দিয়ে পুলিশের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা ছাড়া তাদের আর কোনও উপায় নেই।’
‘বিএনপির আন্দোলনের নদীতে জোয়ার নেই, গণজোয়ার আসে না’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি স্লো-মোশনে পদযাত্রা করছে, শর্টমার্চ থেকে লংমার্চে যাচ্ছে; সবই ভুয়া। তাদের আন্দোলনের খেলা শেষ। পদযাত্রার নামে যতোই অপচেষ্টা করুক না কেন, নির্বাচন ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।’
বিএনপিকে ‘গণতন্ত্রের বিষফোঁড়া’ আখ্যায়িত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এদের কাছে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়, তাদের কাছে দেশ কিংবা জনগণ নিরাপদ নয়। তারা বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানাতে চায়।’ জনগণকে সাবধান ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার এদেশের নারীদের সম্মানিত করেছেন। নারীদের কর্মক্ষেত্রে ব্যাপকতা দিয়েছে সরকার। মায়েদের সম্মানিত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। গত ১৪ বছরে ঢাকা কিংবা পুরো দেশে পরিবর্তন দৃশ্যমান। যে কোনও দিকে তাকালেই উন্নয়ন আর উন্নয়ন।
বিশ্ব সংকটেও দেশের জনগণ শেখ হাসিনার উপর নির্ভর করে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর, পায়রা সমুদ্র বন্দর, রূপপুরে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপালের কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র, একদিনে ১০০ সেতুর উদ্বোধন কেবল শেখ হাসিনা সরকারের দ্বারাই সম্ভব। শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়নে খুশি, মন খারাপ শুধু বিএনপির।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পালিয়ে যাবে, পালিয়ে যায় তারেক রহমান। আওয়ামী লীগের শেকড় অন্তরে অন্তরে। আওয়ামী লীগ থাকবে, পালিয়েছেন আপনারা পালাবেনও আপনারা। বর্তমান সরকার বেশি দামে জ্বালানি কিনে ভর্তুকি দিয়ে দেশ চালাচ্ছেন আর লুটপাটের রাজা তারেক, হাওয়া ভবনকে খাওয়া ভবন বানিয়েছে।’দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কিছু কিছু মানুষ দলের নামে অপকর্ম করছে। তাদের অপকর্ম সংশোধন করার প্রক্রিয়ায় যেতে বলেন, না হয় নির্বাচনে এটার ফল ভোগ করতে হবে। নিজের ভাগ্য নয়, সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছে শেখ হাসিনার সরকার।’ ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও সংসদ সদস্য সাদেক খান প্রমুখ।