বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক, উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল ও খালের পাড়

এমদাদ উল্যাহ কুমিল্লা
  • আপডেট সময় সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মাটি ব্যবস্থাপনা আইন সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে বেপরোয়া হয়ে কয়েকটি প্রভাবশালী সিন্ডকেট দিবা-রাত্রি মাটি কেটে ড্রাম ট্রাক, পিকআপ ও ট্রাক্টরের মাধ্যমে বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি সরবরাহ করছে। চতুর্দিকে যেন মাটি কাটার ধুম পড়েছে। উপজেলার প্রায় বিশ-ত্রিশটি স্থানে প্রভাবশালী চক্রগুলো নির্বিচারে ভেকু ও এসকেভেটর মেশিনের সাহায্যে মাটি কেটে নিচ্ছে। সংঘবদ্ধ কয়েকটি মাটি খেকো সিন্ডিকেটের হাত থেকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বনের জমি, খালের পাড়, সরকারি খাস জমি আর আবাদি জমির মাটি রক্ষা পাচ্ছে না। মাঝে মধ্যে প্রশাসন মোবাইল কোর্টে জরিমানা আর সাজা দিয়েও থামাতে পারছে না মাটি খেকোদের দৌরাত্ম্য। চৌদ্দগ্রাম পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি ইটভাটায় ফসলি জমিনের উর্বর মাটি কেটে পাহাড়ের মতো স্তুপ করার কাজে ব্যস্ত রয়েছে ভাটা মালিক ও মাটি খেকো চক্র। প্রশাসনকে ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে রাতের আধাঁরে চলছে মাটি কাটা উৎসব। এসব মাটি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইটভাটা ও নিচু জায়গা ভরাটের কাজে। মিনি ট্রাক, ভারী ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টর দিয়ে মাটি পরিবহন করায় নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ পাকা, আধা-পাকা ও মাটির রাস্তাগুলো। অভিযোগ উঠেছে, ইটভাটা ও মাটি কাটা সিন্ডিকেটের মূল হোতা ঘোলপাশা ইউনিয়নের আমানগন্ডা উত্তর পাড়ার মৃত হাজী পঁচা মিয়ার ছেলে আল রায়হান আলকাছ। তাঁর নিজের ৫টি ভেকু, ৩টি এসকেভেটর ও ভেকু পরিবহনের জন্য রয়েছে লরি ২টি। একই এলাকার বাবুর্চি গ্রামের জসিম উদ্দিনের রয়েছে ৩টি ভেকু এবং বাতিসা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর গ্রামের মনছুর মিয়া চট্টগ্রাম থেকে ভাড়ায় চালিত ৩টি ভেকু দিয়ে দক্ষিণ চৌদ্দগ্রামের কয়েকটি ইউনিয়নে অবাধে মাটি কাটছে। মাটি আনা নেওয়ার কাজে ধাপিয়ে বেড়াচ্ছে শতাধিক ড্রাম ট্রাক, পিকআপ ও ট্রাক্টর। ধূলাবালিতে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে মানুষর জীবন।
সরেজমিনে অনুসন্ধানকালে জানা গেছে, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শুকনো মৌসুম আসার সাথে সাথে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাটি কাটা সিন্ডিকেটগুলো অবৈধভাবে মাটি কাটায় ব্যস্ত রয়েছে। যত্রতত্র এবং বনাঞ্চলের মাটি কাটার ফলে পরিবেশ ও প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। আবাদি জমির টপ সয়েল কাটার ফলে নষ্ট হচ্ছে জমির উর্বরতা। চৌদ্দগ্রামে কর্মরত সকল সংবাদ কর্মীদের ম্যানেজ করতে স্থানীয় প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দকে মাটি খেকো সিন্ডিকেট ও ইটভাটা মালিক সমিতির নেতারা তিন লক্ষ টাকার চেক প্রদান করেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার চান্দিশকরা, আলকরা ইউনিয়নের শিলরী, ভারতীয় সীমান্তবর্তী কাইচ্ছুটি গ্রামের সিঙ্গাপুর মার্কেট সংলগ্ন জিরো পয়েন্ট, গুনবতী ইউনিয়নের দশবাহা, জগন্নাথদিঘী ইউনিয়নের পায়েরখোলা, সোনাপুর, সীমান্তবর্তী কেচকিমুড়া, দক্ষিণ বেতিযারা, চিওড়া ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেঁষা ডিমাতলি, চাপিরতলা, নোয়াপুর, চরপাড়া, কনকাপৈত ইউনিয়নের পন্নারা, তারাশাইল, করপাটি, বাতিসা ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী আনন্দপুর, কালিকাপুর, লুদিয়ারা-বশকরা কুচা পাথর, মুন্সিরহাট ইউনিয়নের ফেলনা, বারাইশ ও ছাতিয়ানি, ঘোলপাশা ইউনিয়নের শালুকিয়ার ভারত সীমান্তবর্তী বনাঞ্চল, ইশানচন্দ্রনগর, আমানগন্ডা, কালিকাপুর ইউনিয়নের ছুপুয়া, বর্ধনবাড়ি, উজিরপুর ইউনিয়নের শামুকসার, ভাটবাড়ি, ভারত সীমান্তবর্তী সাহেবের টিলা, বেলঘর, শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর, তুলাপুস্করণী, শুভপুর ইউনিয়নের উনকোট, পাশাকোট, হাজারিপাড়া, কাছারিপাড়া, কাশিনগর ইউনিয়নের সাহাপুর এলাকায় দিন-রাত ২৪ ঘন্টায় চলছে মাটি কাটা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বলেন, ‘ফসলি জমির মাটি কাটার বিরুদ্ধে নিয়মিত মোবাইল কোর্টি পরিচালনা করা হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে-যাতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধ রাখা হয়’।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com