শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন

র‌্যাগিং এর নামে শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস বন্ধে ব্যর্থতায় মেধা পাচার বাড়ছে

খবরপত্র ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০২৩

বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা র‌্যাগিং ও ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসের কাছে পণবন্দি। শিক্ষাঙ্গনে নেতিবচাক ঘটনা বাড়ার কারণে মেধাবী দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাচ্ছে না। যাদের সামর্থ্য আছে তারা পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে। আমরা জানি মেধাকে অস্বীকার করে কোনো দেশ ও জাতি অগ্রসর হতে পারেনি। আমাদের দেশের মেধাবী তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশ উন্নত দেশে পাড়ি জমানোর কারণ আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, নিরাপত্তাহীনতাসহ বিকশিত হওয়ার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব। উন্নত দেশের গবেষণা, প্রযুক্তি আর স্থিতিশীলতাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশের মেধাবী সন্তানরা সেসব দেশকে আরও শক্তিশালী ও পরাক্রমশালী করেন। আর দেশ হারায় তার সবচেয়ে মেধাবী, জ্ঞানী, দক্ষ ও যোগ্য নাগরিককে। সম্ভাবনাময় এ তুখোড় প্রজন্মকে হারিয়ে নিজ দেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতি যাত্রায় বাধার সম্মুখীন হয়।
বাংলাদেশের অগ্রগতির সবচেয়ে বড় অন্তরায় এদেশের বিপুল জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে রূপান্তরিত করতে না পারা, মেধাবীদের যথাযথ মূল্যায়ন করতে না পারা। বিজ্ঞানের অগ্রগতির এ যুগে যখন বিশ্বের অনেক দেশই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে এবং বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন প্রণোদনা বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করছে, তখন আমাদের দেশ বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগাতে পারছে না। সৃজনশীল গবেষণা খাতে নেই কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বরাদ্দ। মেধা ও পারদর্শিতা থাকলেও উদ্ভাবনের সুযোগ পাচ্ছেন না এদেশের অসংখ্য সম্ভাবনাময় বিজ্ঞানী। ফলে ঘটছে অনিবার্য মেধা পাচার।
শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, অপরাজনীতি, শিক্ষকদের রাজনীতিসহ নানাবিধ কারণে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছাত্রাবস্থায় মেধাবীদের এক বিশাল অংশ বিদেশে যাওয়ার চেষ্টায় থাকে। একসময় তারা চলেও যায়। এতে করে তারা শুধু বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে তা-ই নয়, সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে অপার সম্ভাবনাময় মেধাও। একজন মেধাবী শিক্ষার্থী দেশে যদি তার যোগ্যতা অনুসারে কর্মক্ষেত্র ও নিরাপত্তা না পান, তখন তাদের মধ্যে হতাশা কাজ করবেই। প্রসঙ্গ যখন সন্তানের নিরাপদ ভবিষ্যৎ, নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য কেউ যদি বিদেশে গমন করেন, তাহলে তাকে দোষ দেওয়া যায় কি? আমরা মাঝে মধ্যেই তাদের কটাক্ষ করে বলে থাকি, তারা স্বার্থপরের মতো দেশের স্বার্থ বিবেচনা না করে বিদেশে পাড়ি জমায়। আদতে মেধাবীরা দেশ ছাড়তে চান না, পরিস্থিতি তাদের দেশ ছাড়তে উদ্বুদ্ধ করে। বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশের বাইরে পাচার হয়ে যাচ্ছে, যা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। এই অবস্থার উন্নয়নে সরকার, বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ ও তরুণ শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে। সন্ত্রাস, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর জিহাদ ঘোষণা ছাড়া অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়। মেধার সাথে সাহস যোগ করলে শিক্ষার্থীরাই পারবে অবস্থার উন্নতি করতে। অবশ্য এজন্য প্রযোজন নিরপেক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দলীয় প্রভাবমুক্ত সহযোগিতা। আশা করি দেশের স্বার্থে সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসবেন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com