সীতাকু-ের পন্থিছিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রফিক উদ্দিন। তিনি ১৯৪৭সালে সীতাকুণ্ড পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডস্থ এয়াকুবনগরে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষানুরাগী রফিক উদ্দিনের একান্ত উদ্যোগ ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিা লাভ করে পন্থিছিলা উচ্চ বিদ্যালয়। স্কুল প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠাতা ভৌগোলিক বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দেন। কেননা তখন এলাকায় কোন উচ্চ বিদ্যালয় না থাকায় হত-দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের পক্ষে দূরের প্রতিষ্ঠান সমুহে লেখা-পড়া চালিয়ে যাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ছিল। বিদ্যালয়টি ১৯৮৯ সালে অষ্টম শ্রেনীর একাডেমিক স্বীকৃতি ও ১৯৯০ সালে নবম শ্রেনীতে পাঠ দানের অনুমতি লাভ করে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, কুমিল্লার অধীনে ১৯৯২ সালে সর্বপ্রথম এস,এস,সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়া বিদ্যালয়টি বর্তমানে সীতাকু-ের মনোরম পরিবেশে ধন্য কতেক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ন্যায় মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য থাকাবস্থায় ২০১৫ সালের ১২ মার্চ এ পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যান তিনি। প্রতিষ্ঠাতার কনিষ্ঠ পুত্র চট্টগ্রাম জজ আদালতের আইনজীবী এডভোকেট তৌফিক উদ্দিন জানান দীর্ঘ ৮ বছর ধরে বাবা আমাদের মাঝে নেই। পরিবারে বাবার শূন্যতা কোন দিন পূরণ হবার নয়। বাবার শিক্ষা ও সমাজ সেবামূলক কার্যক্রমে আমরা গর্বিত। বড় ছেলে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইঞ্জিনিয়ার জসিম উদ্দিন জানান, বাবা আমাদের মাঝে না থাকলেও তাঁর প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি স্ব-গৌরবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। তিনি আরো জানান, আমার বাবার তেমন কোন অর্থ-বিত্ত না থাকলেও মন-মানসিকতায় তিনি ছিলেন প্রবল আত্মবিশ্বাসী ও শিক্ষানুরাগী। সংসার জীবনের অনেক কাজকে গৌন ভেবে সর্বদা মানব সেবায় সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের প্রচেষ্ঠায় তাঁর শেষ জীবন কেটেছে খুবই ব্যস্থতার মধ্য দিয়ে। মহান আল্লাহর দরবারে সর্বদা প্রার্থনা করি আমি যেন পেশাগত কার্যক্রমের পাশাপাশি আমার বাবার স্বপ্নের অবশিষ্ট কার্যক্রম সমাধা করে মানুষের মাঝে চির অমর হয়ে বেঁচে থাকতে পারি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহমদ জানান দীর্ঘ ৩৫ বছরের শিক্ষকতা জীবনের ২৭টি বছর প্রতিষ্ঠাতার সাথে বিদ্যালয়ে কাজ করার সুয়োগ আমার হয়েছে। অত্যান্ত সাদা মনের বিচক্ষণ ও তাৎক্ষনিক সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম এ মহান শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব এলাকায় আলো জ্বালিয়ে সমাজকে করেছেন ধন্য। এ কৃর্তিমান শিক্ষানুরাগী¡ মরেও চির অমর হয়ে থাকবে। গত বছর ১৯ ফেব্রুয়ারী বিদ্যালয় হারালো আরেক গুণীজন প্রধান শিক্ষক একরামুল হক ভূঁইয়াকে। আমি শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করে তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। স্থানীয় ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বদিউল আলম জসীম জানান, পন্থিছিলা এলাকায় শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে প্রতিষ্ঠাতা রফিক উদ্দিন চির অমর হয়ে আছেন। তিনি আরো জানান, মরহুম রফিক উদ্দিনের অবদান এলাকাবাসী চিরদিন শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করবে। শিক্ষা ও সমাজ সেবায় তাহার গৃহীত কার্যাবলীতে আমরা গর্বিত।