আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করে। জনগণই আওয়ামী লীগের শক্তির একমাত্র উৎস। গতকাল রোববার (১২ মার্চ) গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই আওয়ামী লীগ সবসময় ক্ষমতায় এসেছে এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশাকে ধারণ করেই রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। রাষ্ট্রক্ষমতার জন্য আওয়ামী লীগ কখনো জনগণ ব্যতীত অন্য কারো মুখাপেক্ষী হয়নি।’
দেশী-বিদেশী সুপরিকল্পিত ষড়ন্ত্রের মাধ্যমে অসংখ্যবার আওয়ামী লীগের নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশবাসী ভুলে যায়নি, ক্ষমতা দখলের নীলনকশা বাস্তবায়নে ১৯৯১ সালে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র কাছ থেকে অর্থ সহায়তা নিয়েছিল বলে কয়েক বছর আগে সে দেশের আদালতে সংস্থাটির তৎকালীন প্রধান জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছিল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের আগেও বিদেশী প্রভুদের কাছে আমাদের জাতীয় সম্পদ প্রাকৃতিক গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে সূক্ষ্ম কারচুপির মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল খালেদা জিয়া। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা দেখি, ক্ষমতা দখলের জন্য কিভাবে বিএনপি নেতারা বিদেশী দূতাবাসগুলোতে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, বিদেশী প্রভুদের স্বার্থ রক্ষার মুচলেকা দিয়ে যারা ক্ষমতায় আসে তারা কখনোই জনগণের কল্যাণ করতে পারে না। বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোটের দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, দুর্বৃত্তায়নই তার জ্বলন্ত উদাহরণ।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আদানি গ্রুপের সাথে বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি প্রসঙ্গে হীন রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে মনগড়া ও বানোয়াট মন্তব্য করেছেন। নিরবচ্ছিন্নভাবে জনগণের বিদ্যুৎ সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার আদানির কাছ থেকে একটি লাভজনক চুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, ভারতের একটি কোম্পানিকে দিয়ে ২ বিলিয়ন ডলার এককালীন বিনিয়োগ করিয়ে, ভারতের অভ্যন্তরে ৬০০ একর জমির উপর বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানিয়ে, ভারতের আকাশে কয়লা পুড়িয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, তা সর্বনি¤œ দামে ক্রয় করে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হবে এবং সেই বিদ্যুৎ বাংলাদেশের মানুষ ব্যবহার করবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পুরোপুরি বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ রক্ষা করেই এই চুক্তি হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ এই চুক্তির ফলে লাভবান হয়েছে। যারা বিদ্যুতের বদলে জনগণকে খাম্বা দিয়েছে, বিদ্যুতের দাবি করায় জনগণের উপর গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে তাদের মুখে বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলা মানায় না।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুটি একটি ডেড ইস্যু। গণতন্ত্রকামী প্রত্যেকটি মানুষমাত্রই জানে, জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত নয় এমন ব্যক্তি দ্বারা এক মুহূর্তের জন্যও রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পূর্ণরূপে গণতন্ত্রের অন্তর্নিহিত আদর্শের পরিপন্থী। অনির্বাচিত ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে জনগণ ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ে। তাছাড়া দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সুস্পষ্টভাবে অবৈধ ও অসাংবিধানিক আখ্যা দেয়া কোনো পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, বিশ্বব্যাপী প্রচলিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও দেশের সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণই নির্ধারণ করবে কে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেতারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তাদের অন্তরে স্বৈরাচারের চেতনা প্রবাহমান। যারা একজন দুর্নীতিবাজ পলাতক খুনি আসামির জন্য দলীয় গঠনতন্ত্রে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয় তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। কানাডার আদালত কর্তৃক আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপিই এদেশের গণতন্ত্রের প্রধান অন্তরায়।
তিনি বলেন, বিএনপি মানেই হলো- দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, খুন-ধর্ষণ; সর্বোপরি জনগণের উপর নির্যাতন। আর আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য দেশের উন্নয়ন- জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকায় বাংলাদেশের অর্থনীতি মজবুত ভীতের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সকল প্রতিকূলতা জয় করে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।