বরিশালে ইজিবাইক শ্রমিকদের নিয়ে রাজনৈতিক বিভাজন না করে সকল চালককে নম্বরপ্লেট দিন- মেয়রকে সংগ্রাম পরিষদের হুঁশিয়ারী বৃহস্পতিবার ৩০শে মার্চ সকাল ১১টায় বিআরটি থেকে বৈধ লাইসেন্স, সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদনের নামে পক্ষপাতিত্ব, প্রকৃত চালকদের বঞ্চিত করা, বৈষম্য ও হয়রানির বিরুদ্ধে এবং নগরীতে সকল চলাচলরত ও প্রকৃত চালকদের অনুমোদনের দাবিতে ব্যাটারিচালিত রিক্সা-ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগ্রাম পরিষদের প্রধান সংগঠক দুলাল মল্লিক ও বক্তব্য রাখেন বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিব ও ব্যাটারিচালিত রিক্সা -ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী,সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মানিক হাওলাদার , ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের ২৮ নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক আইউব আলী, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সহিদুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম,ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ ২৫ নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি শাহীন শরীফ, ১৩ নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ২৪ নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, বাসদ ও ব্যাটারিচালিত রিক্সা-ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের আধুনিকায়ন, নীতিমালা প্রণয়ন ও বিআরটিএ কর্তৃক লাইসেন্স প্রদানের দাবিতে দীর্ঘ ১১ বছর ধরে সারাদেশে ধারাবাহিক আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে। এই আন্দোলনের ফলাফল হিসেবে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে নীতিমালা অর্জিত হয়েছে। সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে আপীলের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালে সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগ মহাসড়ক ব্যতিত সর্বত্র ইজিবাইক চলাচলে বৈধতার রায় প্রদান করে। এই প্রাথমিক সাফল্যের পর অনেকেই নানা উদ্যেশ্যে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের ব্যাপারে উৎসাহী হয়ে উঠেন, যার কিছু লক্ষণ ইতিমধ্যেই দৃশ্যমান হয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার কথা বলে ইজিবাইকের অনুমোদন দেয়ার কথা বলা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৬মার্চ থেকে অনুমোদন নম্বর হিসেবে নম্বরপ্লেট ও ব্ল বুক বিতরণ করা শুরু হয়েছে। কিন্তু এই নম্বরপ্লেট আসলে কাদের মধ্যে বিতরণ করা হবে সেবিষয়ে কোন সুস্পষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। নানাভাবে প্রচার করা হচ্ছে শুধু ভোটারদের মধ্যে নম্বরপ্লেট বিতরণ হবে। এটা হলে নগরীতে চলাচলরত অন্তত অর্ধেক প্রকৃত চালক অনুমোদনবঞ্চিত হবেন এতে কোন সন্দেহ নেই। আবার চালক নন এমন অনেকেই ভোটার হবার সুবাদে এই অনুমোদন সংগ্রহ করছেন যা দিয়ে পরবর্তীতে তারা প্রকৃত চালকদের জিম্মি করে লাইসেন্স বাণিজ্য শুরু করছেন। এই প্রক্রিয়ায় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে গিয়ে দুর্নীতি, লাইসেন্স বাণিজ্যের কারণে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, বরিশালসহ সারাদেশে প্রায় ৫০ জেলায় ব্যাটারিচালিত যানবাহনের লাইসেন্সের দাবিতে ব্যাটারিচালিত রিক্সা-ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে আন্দোলন হয়েছে এবং হচ্ছে। কিন্তু বরিশালে সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদনের পুর্বে বাছাই প্রক্রিয়ায় সংগ্রাম পরিষদকে কোনভাবেই যুক্ত করা হয়নি। সংগ্রাম পরিষদের প্রায় ৩ হাজার প্রকৃত ইজিবাইক শ্রমিকের কাউকে এই বাছাই প্রক্রিয়ায় না ডাকায় এখানে পক্ষপাত ও স্বজনপ্রীতির চর্চা হচ্ছে বলে শ্রমিকদের মধ্যে ধারণা তৈরি হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই নম্বরপ্লেটের ভিত্তিতে ইজিবাইক শ্রমিকদের মধ্যে বিভেদ ও সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হবার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নেতৃবৃন্দ কোন প্রকার রাজনৈতিক বিভেদ সৃষ্টি না করে বর্তমানে নগরীতে সকল চলাচলরত ও প্রকৃত চালকদের অনুমোদন দেয়ার জন্য মেয়রের প্রতি আহবান জানান। সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদনের নামে পক্ষপাতিত্ব, প্রকৃত চালকদের বঞ্চিত করা, বৈষম্য ও হয়রানি করা হলে শ্রমিকরা সেই হয়রানির বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যাক্ত করবন। একইসাথে নেতৃবৃন্দ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের বিআরটি’এ স্বীকৃত লাইসেন্স দেয়ার দাবিতে আগামী ৬ এপ্রিল ২০২৩ ঢাকায় কেন্দ্রীয় সমাবেশ সফল করার জন্য শ্রমিকদের কাছে আহবান জানান। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।