পুদিনা পাতায় রয়েছে বিভিন্ন ভেষজগুণ। রমজান মাস এলেই বেশ কয়েকগুণ বেড়ে যায় পুদিনার চাহিদা। পুদিনা পাতা ছাড়া যেন চলেই না রমজানের ইফতারী। ব্যাপক চাহিদার পাশাপাশি অধিক বাজারমূল্য পাওয়ার আশায় পুদিনা চাষে বেশ আগ্রহ বাড়ছে সীতাকু-ের চাষীদের। উপজেলায় ব্যাপক পরিসরে চাষ হচ্ছে পুদিনার। সমতল ভূমি ছাড়াও পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে এ অঞ্চলের কৃষকদের বড় একটি অংশ পুদিনা চাষে ব্যস্থ সময় পার করছে। রমজানকে সামনে রেখে পুদিনা চাষীদের রয়েছে বহু স্বপ্ন ও পরিকল্পনা। উপজেলায় সমতল ভূমি ও পাহাড়ি জমিতে পুদিনা চাষে রয়েছে চাষীদের ব্যাপক আগ্রহ। চাষীরা স্বাবলম্বী হ”ছেন এ পুদিনা চাষে। রমজান মাসে বড়া, চাটনি, চনা, সালাদ, বোরহানি তৈরিতে খাদ্য তালিকায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে পুদিনার। এছাড়া বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রী সহ চা, শরবত, মিল্ক চকলেট তৈরিতে পুদিনার ব্যাপক ব্যবহারে দিন দিন চাষীদের আগ্রহে স্থান পা”ছে এ চাষ। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ২০ হেক্টর জমিতে ২১০ জন চাষী পুদিনা পাতা চাষে ব্যস্থ সময় পার করছে। এ বছর পুদিনার ফলন হয়েছে ১২০ মেট্রিক টন। প্রতি টন পুদিনা গড়ে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। সে হিসেবে ১২০ মেট্রিক টন পুদিনার বাণিজ্যিক মূল্য ৬০ লক্ষ টাকা। তবে অনেক সময় আরও অধিক দামেও বিক্রি হয়। উপজেলার সোনাইছড়ি, ভাটিয়ারী, সলিমপুর, কুমিরা ও পৌরসদরস্থ মহাদেবপুরের ২০ হেক্টর জমিতে পুদিনার চাষ করেছে কৃষকেরা। উপজেলার শুধুমাত্র ভাটিয়ারীর খাদেমপাড়া এলাকাতেই পুদিনা চাষে সম্পৃক্ত ৪০ থেকে ৫০ জন কৃষক। স্থানীয় বাসিন্দা জাহেদ আলম জানান, লাভজনক চাষে পরিনত হওয়ায় দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে এলাকায় পুদিনা চাষীদের তালিকা। খাদেমপাড়ায় ৬ হেক্টর পাহাড়ি ঢালু জমিতে এ বছর পুদিনার চাষ হয়েছে। চাষী মোঃ শিবলু মিয়া জানান, প্রতিবছর রমজানকে সামনে রেখে বাড়তি উৎপাদনের চেষ্টা করেন চাষীরা। এ সময় চাহিদা অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি থাকে। এবার পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ৯০ শতক জায়গায় পুদিনার চাষ করেছেন তিনি। তাতে শ্রমিক ও অন্যান্য ব্যয় বাবদ তার খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। বাজার মূল্য ভাল হলে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার পুদিনা বিক্রি করা যাবে বলে তিনি আশাবাদী। আরেক কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা পারিবারিক ভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ পুদিনা চাষে জড়িত। পুদিনা লাভজনক ও সহজ পদ্ধতির চাষ। কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হাবীবুল্লাহ জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২০ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে ২১০ জন কৃষক পুদিনা পাতার চাষ করেছেন। সারা বছর পুদিনার চাষ হলেও রমজানের চাহিদা মেটাতে চাষীরা বাড়তি চাষ করে থাকেন। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে চাষীদের উৎপাদিত পুদিনা চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায়।