বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

জলঢাকায় জলমহাল ইজারায় যোগ্য সমিতির স্থলে ভায়া সমিতিকে ইজারা প্রদানের অভিযোগ

রিয়াদ ইসলাম জলঢাকা :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০২৩

নীলফামারী জলঢাকায় জলমহাল ইজারা প্রদানের চুড়ান্ত তদন্ত তালিকায় যোগ্য মৎস্যজীবী খামারীর নাম না এসে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে কৌশলে ভায়াকৃত মৎস্যজীবীর নামের সন্দেহাতীত খামারী সমিতিকে ইজারা প্রদানের অপচেষ্টা চলছে মর্মে খোদ অভিযোগ তুলেছেন জলমহাল ইজারা গৃহীতা একটি সমবায় সমিতি। সুত্রমতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক গত অর্থবছরের ১৩ই ডিসেম্বর ২২ইং প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতি ২০০৯ এর সংশোধনী মোতাবেক তিন (০৩ ) বছর মেয়াদে জলমহাল ইজারা প্রদানের একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। সে মোতাবেক চলতি বছরের ১৭ই জানুয়ারী জলঢাকা উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাক্ষরিত যার স্মারক নং ৩১.০২.৭৩৩৬.০০০.০২.০২৮.২১-৮৮ জলঢাকা উপজেলার ইজারাযোগ্য ২০ একর পর্যন্ত আয়তন বিশিষ্ট বদ্ধ খাস জলমহাল ইজারা প্রদানের নিমিত্তে একটি প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেন। বৃহৎ এ আয়তনের বদ্ধ খাস জলমহাল জলঢাকা উপজেলার দুটি ইউনিয়ন সহ ১টি পৌরসভায় অবস্থিত। সেগুলো হলো উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নে ৪টি, খুটামারা ইউনিয়নে ২টি। এর মধ্যে খুটামারা ইউনিয়নের পশ্চিম খুটামারা মৌজার সাবেক ৬৬৫৫ দাগের ১নং খতিয়ানের ৯.৫০ একর জমির বদ্ধ খাস জলমহাল ইজারা নাটাইবিলটি রয়েছে। যার সরকারি ভাবে ইজারা মুল্য নির্ধারন করা হয়েছে ১লক্ষ ৫৭ হাজার ৫শত টাকা। উক্ত সরকারি খাস বিলটি গত কয়েক বছর ধরে সুনামের সহিত ইজারা দরপত্র আহবানের মাধ্যমে মাছ চাষ করে আসছেন জাগরনী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ নামের একটি সংগঠন। ওই সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী যার জেলে নিবন্ধন নং ৫৫৭৩৩৬০০৬৫০০০০৭৮.অভিযোগ করে বলেন, সরকারি ইজারা দরপত্রনুযায়ী সিডিউল ক্রয় করে তার চেয়ে অধিক একটু এ্যামাউন্ট দরপত্রে আহবান করেছি কিন্ত একটি নাম স্ববর্স্ব সমিতির ব্যানারে অধিক আর্থিক টেন্ডারে আহবান করে এবং ভুয়া মৎস্যজীবী ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে ও ভুয়া নিবন্ধন নম্বার দিয়ে খুটামারা মৎস্যজীবী নামের একটি সমিতি কৌশলে নিজেদের নামে করতে পরিয়া হয়ে উঠেছে। এ সময় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির এক সদস্য বলেন, তারা তো লিস নিয়ে ভায়ায় চালায় বা সাব লিস দেয়। যা নিয়ম বহিঃর্ভুত। তার বাড়ি কচুঁকাটায়। আমরা জলঢাকার মানুষ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আর লাভবান হচ্ছে অন্য উপজেলার মানুষ। এটি সরকারি নীতিমালায় আছে নাকি। আব্দুল হামিদ নামের এক জেলে বলেন, আমরা নিবন্ধিত জেলে হয়েও বেকার পরে আছি আর অনিবন্ধিত ব্যক্তিরা অর্থের বিনিময়ে নিবন্ধিত হয়ে আমাদের পেটে লাথি মারছে। নাটাইবিল পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা হয় অভিযুক্ত মতিউর রহমানের সঙ্গে। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, জেলের মাধ্যমে তিন বছরের জন্য লিস হয় এ বিলটি। এবার সিয়াম ভাই পাইছে। সিয়াম ভাইয়ের জেলে সংগঠনের নাম কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার সংগঠনের নাম আমার জানা নেই। সিয়াম ভাই তো জেলে নয় তবে জেলে সমিতি হইলো কেমন করে এমন প্রশ্নের উত্তরে মতিউর রহমান বলেন, তিনি কেমন করে পেয়েছে তা আমার জানা নেই। অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত মতিউর রহমান অধিক আর্থিক মুনাফা বিলিয়ে স্থানীয় ক্ষমতা প্রাপ্ত ব্যক্তির নামে ওই পুকুর লিস নিয়ে নিজে মাছ চাষী জেলের বেস ধরে সুকৌশলে প্রকৃত জেলেদের চোঁখ ফাকি দিয়ে সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। অন্যদিকে পশ্চিম খুটামারা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কর্নধর মঞ্জুরুল ইসলাম সিয়াম গণমাধ্যমকে জানান, আগামী ১৩ই এপ্রিল পর্যন্ত আমার ইজারায় রয়েছে। এর পর দরপত্র আহবানের মাধ্যমে যারা পাবে তারাই মাছ চাষ করবেন। এ সময় সিয়াম বলেন, আমার সমিতি বললে ভুল হবে। যেহেতু এটা আমার এলাকা সেহেতু এলাকার মৎস্যজীবী জেলেদের উন্নয়ন কল্পে আমি তাদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করি। তাছাড়া আমার চেন অফ কমান্ডের মাধ্যমে না থাকলে তাদের মধ্যে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। আমার এলাকার জেলেদের যাতে উন্নয়ন হয় এ জন্য আমি তাদের নিয়ন্ত্রণ করি। পশ্চিম খুটামারা মৎস্যজীবী সমিতির কর্নধর মঞ্জুরুল ইসলাম সিয়াম সাহেব এলাকার জেলের উন্নয়নের কথা বললেও বাস্তব প্রেক্ষাপট ব্যতিক্রম। অভিযোগ আছে খুটামারা এলাকার মৎস্যজীবী জেলেদের উন্নয়ন না হয়ে উন্নয়ন হচ্ছে অন্য উপজেলার মানুষের। ভায়ায় ইজারা দেওয়ায়। অনুসন্ধানে জানা যায়, জলঢাকা উপজেলা জলমহাল ইজারা ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রচারিত বিজ্ঞাপন প্রচারের পর দরপত্র আহবান পূর্বক জমাকৃত জেলে সমিতি গুলোকে শর্ত সাপেক্ষে চুড়ান্ত জলমহাল নির্ধারন কল্পে জলমহাল ইজারা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কর্তৃক ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে তদন্ত কর্মকর্তা হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেন, উপজেলা মৎস্য অফিস, সমবায় অফিস ও যুব উন্নয়নের কর্মকর্তারা। তারা নাটাইবিল পরিদর্শনে গিয়ে বাস্তব তদন্ত সাপেক্ষে জেলে মৎস্যজীবী সমিতি নির্ধারন দাখিল করেন। অভিযোগ উঠেছে, এ সময় জলমহাল ইজারা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি দেশের বাহিরে অবস্থান কালে কৌশলে একটি চক্র অর্থের বিনিময়ে চুড়ান্ত তালিকায় যোগ্য মৎস্যজীবীর নাম পরিবর্তন করে ভায়াকৃত মৎস্যচাষির নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অন্যদিকে দরপত্র অনুযায়ী আগামী ৬ই এপ্রিল ইজারাগৃহীতা কর্তৃক নির্ধারিত কোডে সাকুল্যে ইজারামুল্য ও অন্যান্য সরকারি করাদী জমা প্রদান এবং ইজারাগৃহীতার সাথে চুক্তি সম্পাদনের দিনক্ষন চূড়ান্ত করা হবে এবং ১৪ই এপ্রিল ইজারা গৃহীতাকে জলমহালের দখল বুঝিয়ে দেওয়া হবে। সে মোতাবেক এর আগেই এমন সন্দেহাতীত বিষয়টি সামনে আসায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক ও যোগ্য মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে জলমহাল ইজারা প্রদানের জন্য আহবান জানিয়েছেন দরপত্র আহবানকারী সমিতির সদস্যরা। এ বিষয়ে উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে যে ৩টি অফিস প্রধানকে তদন্তের দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে সে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ভাষ্য উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে মৎস্যজীবী জেলে সমিতি গুলোর দুরত্ব কতটুকু এবং প্রকৃত জেলে কি না সেটি দেখার জন্য বলা হয়েছিল। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আমরা প্রসাশনকে জমা দিয়েছি। ভায়াকৃত মৎস্যজীবী সমিতি সনার্থ করেছেন কি না এমন প্রশ্নে তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলেন, সে বিষয়ে আমাদের বলা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় পশ্চিম খুটামারা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি দুদুল ইসলাম বলেন, পোনা তো আমি বেচাই না। এখানে হ্যাচারিতে এখন মাছ ধরা বন্ধ করি দিছি। আমরা দুই ভাইয়ে ব্যবসা করি। ইজারা দরপত্র আহ্বান বিষয়ে তিনি বলেন, কাগজ আসুক আগোত তার পর। মতিউর রহমানের বিষয়ে বলেন, ওর বাড়ি তো অনেক দুর। ওয় এখানে মাছ দিবার পায়। আপনাদের ভোকাস কথা কইছে, ও কোন মাছ চাষী নয়। এখানে কাইয়ুম ও দুদুল আমরা দুই ভাইয়ে মাছ দেই। তা এখন বন্ধ আছে। আমি এখন ব্যবসা করি না। অন্যদিকে খুটামারা ইউপি চেয়ারম্যান রকিবুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকার মৎস্যজীবীরা উপকৃত হউক আমি এটাই চাই। ভায়া বা স্থানীয় ক্ষমতাশীন ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় যাতে এ সুযোগ সুবিধা অন্য কেউ নিতে না পারে। এটাই আমার দাবী। এ বিষয়ে জলঢাকা উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ময়নুল ইসলাম বলেন, তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি যে প্রতিবেদন দাখিল করেছে এবং পরে মৎস্য অফিসের প্রতিবেদনের সঙ্গে মিল না থাকায় আমি নিজেই ওখানে গিয়েছিলাম। দেখে আসছি। সমস্ত প্রস্তুতি প্রায় শেষ এখন শুধু রেজুলেশনটিই বাকি আছি। তবে কোন অভিযোগ আসলে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত মৎস্যজীবী সমিতিকে ইজারা বন্ধবস্তু প্রদান করা হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com