জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলা সদর ও তার পার্শ্ববর্তী বাগজানা ইউনিয়নে প্রতি বছরের মতো এবারও সজনের বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হওয়ায় গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার সজনে উৎপাদন অনেক বেশি। স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন হাট-বাজারে সজনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মুখরোচক ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এই সবজি স্থানীয়ভাবে বিক্রির পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় রপ্তানি করা হয়। বাজারে অন্য সবজির চেয়ে সজনের দাম একটু বেশি। বাগজানায় ও পাঁচবিবির বাজারগুলোতে প্রতি মণ সজনে পাইকারি ২০০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। যা রপ্তানি হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বাগজানা বাজারের সজনে ব্যবসায়ী বাচ্চু দাস জানায়, অন্য এলাকার থেকে বাগজানাতে সজনে চাষ বেশি হয়, তিনি বাগজানা ও আশেপাশের গ্রামগুলি থেকে পাইকারি দরে সজনে ক্রয় করে পাঁচবিবি বাজারে নিয়ে বিক্রি করেন, পাঁচবিবির সজনে বাংলাদেশের সব শহরে যাচ্ছে বলে জানা যায়। বাগজানা বাজারের তরকারী ব্যাসায়ীদের সাথে কথা বললে তিনি জানান, “এখন মৌসুমের শুরু হওয়ায়, প্রতি কেজি সজনে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে। এখনো বাজারে পুরুপুুরিভাবে সজনের আমদানী চোখে পড়ছেনা। মৌসুমের শেষের দিকে দাম কিছুটা কমে যাবে। তবে ৩০-৩৫ টাকার নিচে নামবে না বলে জানান তিনি।” সজনে প্রধানত দুই প্রজাতির। এর মধ্যে এক প্রজাতির সজনে বছরে তিন থেকে চার বার পাওয়া যায়। স্থানীয়ভাবে এর নাম রাইখঞ্জন। পাঁচবিবিতে বানিজ্যিকভাবে সজনের চাষ হয়না। সজনে গাছ যেকোনো পতিত জমি, পুকুর পাড়, রাস্তার বা বাঁধের ধারে আঙ্গিনা এমনকি শহর বাড়ির আশেপাশে লাগানো যায় এই সজনে। এভাবেই উৎপাদিত সজনে দিয়ে পাঁচবিবির চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন শহরগুতে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। পলি অঞ্চলগুলোতে ব্যপকভাবে সজনের গাছ দেখা যায়। এর কোনো বীজ বা চারার প্রয়োজন হয় না। গাছের ডাল কেটে মাটিতে পুতে রাখলেই সজনে গাছ জম্মায়। সজনে গাছের কোন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠে এ গাছ। বড়-মাঝারি ধরনের একটি গাছে ছয় থেকে আট মণ পর্যন্ত সজনে পাওয়া যায়। বিনা খরচে অধিক আয় হওয়ায় অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে সজনে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে পাঁচবিবি উপজেলার মাটি, পানি ও আবহাওয়া সজনে চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় উপজেলা সদর ও বাগজানা এবং এর আশেপাশে প্রচুর সজনে গাছ দেখা যায়।