শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ পূর্বাহ্ন

নিত্যপণ্যের বাজার হোক ন্যায্যমূল্যভিত্তিক

এস আলী দুর্জয়
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৩

দ্রব্যমূল্যের বেসামাল অবস্থার মধ্যেই শুরু হয় এবারের পবিত্র রমজান মাস। রীতিমতো দাম বেড়েই চলেছে। স্বাভাবিকভাবেই রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্য ডাল, তেল, আটা, ময়দা ছোলা ও চিনিসহ সব পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে। এই চাহিদাকে পুঁজি করে অসাধু ক্ষুদ্র ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকটের মাধ্যমে নিজেদের লাভ-লালসায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অহেতুক বাড়িয়ে তোলেন প্রায় সব পণ্যের দাম। যার প্রভাবে নি¤œ-মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়ে। বিশ্বের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রগুলোতে রমজানের মাহাত্ম্য ও পবিত্রতা রক্ষায় রমজানে খাদ্যদ্রব্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ প্রত্যেকটা জিনিসের দাম নাগালে থাকলেও আমাদের দেশের চিত্র পুরোই উলটো। খেটে খাওয়া, দিনমজুর ও যাদের দৈনিক বা মাসিক আয় কম, তারা আয়ের সঙ্গে সাংসারিক ব্যয়ের হিসাব মেলাতে হিমশিম খান। রমজান মাসের অতিরিক্ত খরচ কীভাবে মেটাবেন তা নিয়ে পড়েন দুশ্চিন্তায়। এই চিরচেনা দৃশ্যের উত্তরণ দরকার। সরকার রমজানকে ঘিরে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে না বলে আশ্বাস দিলেও ইতিমধ্যে চাল, চিনি, ব্রয়লার মুরগি ও ডিমসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। দ্রব্যমূল্যের এ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি উচ্চবিত্তদের জীবনযাত্রায় তেমন কোনো প্রভাব না ফেললেও সাধারণ জনগণের দুর্দশা ও ভোগান্তি চরমে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়, গত এক বছরের ব্যবধানে কোনো কোনো পণ্যের দাম ১০ শতাংশ থেকে ১১৬ দশমিক ২২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি প্যাকেট আটা ৫৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ, প্যাকেট ময়দা ৩৫ দশমিক ৪০ শতাংশ, অ্যাংকর ডালের দাম ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ, সয়াবিন তেল ১২ দশমিক ৩১ শতাংশ, ছোলা ১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ, দেশি রসুন ১২০ শতাংশ, শুকনা মরিচ ১১৬ দশমিক ২২ শতাংশ, মানভেদে আদা ৮২ দশমিক ৬১ শতাংশ, জিরা ৬২ দশমিক ৩৪ শতাংশ, ব্রয়লার মুরগি ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ, চিনি ৫১ দশমিক ৬১ শতাংশ, ডিম ২৬ দশমিক ০৩ শতাংশ, খেজুরের দাম ২৬ শতাংশ বেড়েছে। এসব পণ্যের অনেকগুলোই গত দুই তিন মাসে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দোহাই দিয়ে দাম বাড়ালেও ঐ পণ্যের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও, তারা সেই পণ্যের মূল্য আর কমায় না! এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। এই যখন অবস্থা, তখন নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ক্ষুদ্র ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকটের মাধ্যমে বাজারকে যেন অস্থিতিশীল করতে না পারে, সে ব্যাপারে মজুতদারদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত, অসাধুচক্র চিহ্নিত করে শাস্তি প্রদান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নিয়মিত তদারকি ও অবৈধ সিন্ডিকেট ভাঙতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু রমজান মাসে নয়, সারা বছর যেন ন্যায্যমূল্যে পণ্য কেনাবেচা হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। লেখক : শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com