প্রেমিকের সঙ্গে থাকতে এবং তাকে বিয়ে করতে কানাডার চাকরি ছেড়ে হরিয়ানার ছোট্ট গ্রামে ছুটে এসেছিলেন ২৩ বছরের নীলম। যে প্রেমিকের জন্য নিজের ক্যারিয়ারের জলাঞ্জলি দিয়েছিলেন, সেই সুনীলের (প্রেমিক) হাতেই প্রাণ দিতে হলো তাকে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের জুনে নীলমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। অভিযোগ করা হয়, হত্যার পর প্রেমিক সুনীল তাকে মাটিতে পুঁতে রাখে।
হরিয়ানা পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীর মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর তার দেহ মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়। জানা গেছে, গত বছরের জুন মাস থেকেই নিখোঁজ ছিলেন নীলম। গত মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) হরিয়ানার গুমাদ গ্রাম থেকে তার কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ অফিসার রবীন্দ্র জানান, সুনীল স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে, নীলমের মাথায় দু’বার গুলি করেন তিনি। নিজের অপরাধ লুকনোর জন্য নীলমের মৃতদেহ মাঠে পুঁতে রাখেন। পুলিশ আরও জানিয়েছে, গত বছরের জুন মাসে নীলমের দিদি রোশনী গান্নৌর পুলিশ স্টেশনে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। সেই সময় তিনি অভিযোগ জানিয়েছিলেন, রোহতক থেকে আইইএলটিএস দিয়ে কানাডায় চাকরি করতে গিয়েছিলো তার বোন। কিন্তু ২০২২ সালের জুন মাসে তার প্রেমিক সুনীল তাকে বিয়ের টোপ দেন এবং ভারতে ফিরে আসার কথা বলেন। মিথ্যা বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করেই তার বোন ফিরে আসে। কিন্তু তারপর থেকেই আর তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ওই যুবকের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ জানায় নিখোঁজ তরুণীর পরিবার।
জুন মাসে যেদিন নীলমের ফেরার কথা ছিলো, সেদিন থেকেই তার খোঁজ মিলছিলো না বলে জানা গেছে। ওই একইদিন থেকে সুনীলও নিখোঁজ ছিলো বলে দাবি করা হয়েছে। পুলিশের নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ জানিয়ে নীলমের পরিবার হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজের কাছেও অভিযোগ জানান। এরপরই ভিওয়ানির সিআইএ-এর হাতে মামলার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়। তদন্তে নেমেই সিআইএ সুনীলকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশি হেফাজতে সুনীলকে জেরা করেই নীলমের দেহের খোঁজ পাওয়া যায়। হরিয়ানার গাহরি রোডে সুনীলের জমি থেকে ১০ ফুট গভীরে মাটি খুঁড়ে নীলমের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে ওই কঙ্কাল ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। নীলমের মায়ের সঙ্গে ডিএনএ ম্যাচ করানো হবে বলে জানানো হয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত সুনীলের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধমূলক কার্যকলাপের মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে খুন ও বেআইনি পিস্তল রাখার অভিযোগও রয়েছে।