বৃষ্টির অভাবে চায়ের রাজধানী সিলেটের সবুজ চায়ের বাগানগুলো সবুজে ভরে উঠার বদলে হয়ে উঠছে নিষ্প্রাণ। এর ফলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছেনা। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পর্যাপ্ত কুঁড়ি জন্মাচ্ছেনা চা গাছে। এবারের শীতমৌসুমসহ মার্চ মাসেও তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এই অবস্থা বলে মনে করছেন চা বাগান সংশ্লিষ্টরা। জানতে চাইলে সিলেটের হাবিবনগর চা বাগানের ম্যানেজার হুমায়ুন কবির জানান, চা-শিল্প পুরোপুরি বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত চা বাগানে অন্তত ৫ থেকে ৭ ইঞ্চি বৃষ্টির প্রয়োজন। অথচ চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত তেমন বৃষ্টি হয়নি বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে। এ অবস্থায় চা উৎপাদনে ঘাটতি দেখা যেতে পারে এই মৌসুমে। সিলেটের সবচেয়ে বেশি চা বাগান রয়েছে মৌলভীবাজার জেলায়। সেখানেও একই অবস্থা বলে জানা গেছে। সিলেট সদর উপজেলার আলিবাহার চাবাগান, মালিনীছড়া চা বাগান, খাদিম চা বাগান, লাক্কাতুরা চা বাগান ও বুরজান চা বাগানসহ বেশ কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায় বিভিন্ন সেকশনের বেশ কিছু জায়গায় খরার কারণে কচি কুঁড়িগুলো জ্বলে যাচ্ছে। খরা আর বৃষ্টি না হওয়ায় কিছু কিছু বাগানে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ডিজেল চালিত পানির পাম্প দিয়ে সেচ প্রকল্প পদ্ধতিতে চা গাছ গুলোতে পানি ছিটিয়ে দেয়া হচ্ছে। এই পাম্প চালাতে প্রতি ঘন্টায় খরচ হয় ৮ থেকে ১০ লিটার ডিজেল। চায়ের চাষাবাদের জন্য কৃত্রিম এ পদ্ধতিটি যেমন ব্যয় বহুল তেমনি এর দ্বারা সার্বিক চাষাবাদের জন্য যে পরিমাণ পানির চাহিদা রয়েছে তাও পুরণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল চা’য়েও দূর্দিন দেখা দেয়ার আশংকা করছেন বাগান মালিকরা। গত বছর শ্রমিকদের মজুরী নিয়ে আন্দোলনের ফলে উৎপানের পাশাপাশি কোয়ালিটিতেও মারাতœক বিঘœ ঘটেছিল চা শিল্পে। এবারও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ায় একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে চায়ের দাম পাওয়া নিয়েও অস্থিরতা বিরাজ করছে। উৎপাদন ও দামের কারনে অনেক ব্যক্তিমালিকানাধীন বাগান বিক্রি হচ্ছে দেদারছে।