টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে জমে উঠেছে ঘাসের বাজার। ধনবাড়ী উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়ন পরিষদের নরিল্লা গ্রামে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত হলেও এখন এই অঞ্চলের কৃষকরা ঘাসও উৎপাদন করছেন। বর্তমানে বিভিন্ন জাতের ঘাস উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন এ এলাকার অনেকেই। সম্প্রতি নরিল্লা গ্রামের বাজারে এ চিত্র দেখা গেছে। ভোর হতে না হতেই ঘাসের স্তূপ দেখা যায় এখানে। বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখানে আসেন ঘাস কিনতে। গরু-ছাগলের খাদ্য হিসেবে পরিচিত ঘাসের মধ্যে নেপিয়ার, দুর্বাঘাস, গর্বাঘাসসহ আরও অনেক রকমের ঘাস বিক্রি হয় এ বাজারে। বাজারটিতে অন্যান্য ঘাসের সঙ্গে কাঁঠাল পাতা বিক্রি হচ্ছে। এ বাজার একসময় টাটকা মাছের বাজার হিসেবে পরিচিত লাভ করলেও বর্তমানে এটি ‘ঘাসের বাজার’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এ বাজারে প্রতিটি আঁটি ঘাস বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। এক আঁটি কাঁঠাল পাতা ৩০ টাকা, নেপিয়ার ঘাস প্রকার ভেদে ৩০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ঘাস বিক্রি করতে আসা কালিপুর গ্রামের মিজানুর(৩৫) বলেন,ঘাসের বাজার ভালো থাকায় ঘাস চাষ করেই এখন আমার সংসার চলছে। তবে ভারী বৃষ্টিতে পানি বাড়ার কারণে চাষ করা ঘাস ডুবে যাওয়ায় একটু চিন্তায় পরতে হয়। ঘাসবিক্রেতা ফজল শেখ(৬০) বলেন, প্রতিদিন অনেক মানুষ নরিল্লা বাজারে ঘাস কিনতে আসছেন। আমরা ঘাস বিক্রি করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছি। এতে আমাদের ভালো আয় হচ্ছে। ধোপাখালি গ্রামের ঘাসবিক্রেতা করিম(২৩) বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ঘাস আর মাছ বিক্রির টাকায় আমাগো সংসার চলে। ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচও এখান থেকে চালাই।’ কথা হয় ঘাস পরিবহনে নিয়োজিত ভ্যানচালক নাঈমের(২৭) সঙ্গে। তিনি বলেন, এই এলাকায় ঘাস চাষ ভালো হয়। এ কারণে এই হাটে ঘাস বিক্রিও ভালো। তাই সকাল সকাল এখানে এলে বিক্রি হওয়া ঘাস পৌঁছে দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৫০০-৬০০ টাকা উপার্জন করা যায়। ঘাস কিনতে এসেছেন সামছুল আলম । তিনি বলেন, আমি প্রায়ই এ বাজার থেকে ঘাস কিনি। আজ ৯০ টাকা দিয়ে তিন আঁটি ঘাস কিনেছি। ধনবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হারুনার রশিদ হীরা বলেন, গ্রামের খামারিরা তাঁদের উৎপাদিত নেপিয়ার পারচং-১ জাতের উন্নত ঘাস সহ সকল প্রকার ঘাস বিক্রির জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, যাদের জমি আছে, তারা তো ঘাস চাষ করছেন। আবার যাদের নেই, তারা বাজার থেকে ঘাস কিনে গবাদিপশুকে খাওয়াচ্ছেন। শুকনা বিচালি ও খড়ের তুলনায় সবুজ ঘাসে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে। গরুর খাবারের চাহিদা পূরণে এই ঘাস উপকারী। এই ঘাস পশুর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ও মাংস বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সুস্থ-সবল পশু পালনে সবুজ ঘাসের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।