সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আপনারা খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিএনপিকে? কিছু হলেই বিএনপি। সরকার উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে চায়। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সারের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করে কৃষকদল।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দেশে কৃষকদের শুধু অবহেলা নয়। তাদের চরম কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে এই সরকার। তারা মাথায় হাত দিয়েছে। হঠাৎ করে প্রতি কেজি সারে পাঁচ টাকা দাম বাড়িয়েছে। কারণ এই সরকারকে আইএমএফ শর্ত দিয়েছে, কৃষকদের ভর্তুকি দেয়া যাবে না। সারা পৃথিবীতে কৃষিতে ভর্তুকি দেয়া হয়। এই জন্যে ভর্তুকি দেয়া হয় যে তারা ফসল ফলায় আমাদের পেটে ভাত যোগায়। তাদের যদি ভর্তুকি না দেয়া হয় তাহলে তারা ফসল ফলাতে পারবে না।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার তার কাছের লোকদের টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করছে। এই সরকার সাধারণ মানুষের সরকার নয়। চাল, ডাল, তেল, লবণ, সবকিছুর দাম কী অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে! কিন্তু সরকার এই ব্যাপারে কিছু বলে না। তারা বলে জিনিসপত্রের দাম সহনশীল পর্যায়ে আছে। আয় বেড়েছে। কাদের আয় বেড়েছে? আয় বেড়েছে আওয়ামী লীগের, আয় বেড়েছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। যারা চুরি করে, ডাকাতি করে, যারা মানুষের লুট করে খায়- তাদের আয় বেড়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এত আগুন লাগছে কেন? কারণ এই ঘটনাগুলো ঘটছে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে। পরিবেশের বিপর্যয় কে করেছে? এই সরকার আজকে যেখানে জায়গা পায় সেখানে বিল্ডিং তৈরি করে দেয়। মার্কেট বানিয়ে দেয়। যাতে করে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা চাঁদা তুলতে পারে।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে মহাসচিব বলেন, আপনারা খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিএনপিকে? কিছু হলেই বিএনপি। সরকার উদোর পি-ি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে চায়! ওখানে তো ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সিটি কর্পোরেশনের পোশাক পরিহিত লোক এসেছিলেন। তারা সামনের ওভারব্রিজ গ্রিল মেশিন দিয়ে ভেঙে দিচ্ছিলেন। ওই কর্মীরা যখন গ্রিল মেশিনের তার লাগাতে গিয়েছিলেন। তখন শর্ট সার্কিট হয়েছিল। এটা ব্যবসায়ীরা নিজেরা দেখেছেন, তারা বলেছেন। তারপর সেখানে আগুন লেগেছে। সিটি কর্পোরেশন লোকেরা আগুন নেভানোর চেষ্টাও করেছেন। যখন আগুন নেভাতে পারেনি, তখন তারা পালিয়ে গেছে। এটা আমার কথা না। এটা সেখানকার ব্যবসায়ীদের কথা। সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বে আছে কে- এমন প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, দায়িত্বে আছেন আপনারা। আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছে। আগুন লাগার পেছনে আওয়ামী লীগ আছে।
তিনি বলেন যে দাবি উঠেছে, সারের দাম কমাতে হবে, তেলের দাম কমাতে হবে। আমাদের বাঁচতে দিতে হবে । সামনে আমাদের ভোটের অধিকার দিতে হবে। এই দাবিগুলোকে পাশ কাটানোর জন্য আর মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিকে অন্যদিকে নেয়ার জন্য আওয়ামী লীগই আগুন লাগিয়ে যাচ্ছে। ‘ধৈর্যের একটা সীমা আছে। পরিস্কার কথা সারের দাম কমাতে হবে। প্রতিবাদ করলে কি? গুলি, গ্রেফতার, মামলা, গায়েবী মামলা। তারা মামলায় নাম দেয় ৪০ জনের। আবার অজ্ঞাতনামা দেড় হাজার। এভাবে তারা ধরে নিয়ে যায় আর টাকা নেয়। মানুষের ওপর তাদের কোনো দয়া মায়া নেই। কারণ তারা জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হয় না। মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ আর সহ্য করবে না। পরিস্কার করে আমরা বলে দিয়েছি, এই সরকারকে সরাতে হবে। এই সরকার যতদিন থাকবে, ততদিন মানুষের ওপর অত্যাচার বাড়বে। আমাদের সাংবাদিকরা লিখতে এখন ভয় পায়! লেখার আগে চিন্তা করে কি লিখব! এটা লিখলে আমার নামে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা হবে কিনা। এবার আর সেটা চলবে না। আমরা সবাই একসাথে একযোগে বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য একসাথে নেমেছি। ইনশা আল্লাহ আমরা এই আন্দোলনে জয়ী হব।