চায়ের রাজ্যখ্যাত পর্যটন নগরী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকার প্রতিটি গাছে শোভা ছড়াচ্ছে রক্তলাল কৃষ্ণচুড়া। প্রকৃতিতেও এখন কৃষ্ণচূড়ার রঙ্গিন সুবাস বইছে। এ সুবাস ছুঁয়ে যাচ্ছে ফুল ও প্রকৃতি প্রেমীমানুষের হৃদয়। পাখির ডানায়, হাওয়ায়-হাওয়ায় উড়ছে তার লাবণ্য। রবিবার (৩০ এপ্রিল) সরজমিন ঘুরে দেখা যায় শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্রধান ফটকের গেটের পাশে এবং মহসিন অডিটোরিয়ামের এর সামনে নয়ন জুড়ানো এসব কৃষ্ণচূড়ার লাল আভায় হৃদয় কাড়ছে পথচারী ও প্রকৃতিপ্রেমিদের। রোদের তীব্রতাকে ছাপিয়ে চোখ ধাঁধানো এই সৌন্দর্য উপভোগ করেন স্থানীয়রাসহ পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীরা। এছাড়া শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কের দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে থাকা কৃষ্ণচূড়ার প্রতিটি গাছে এখন শোভা ছড়াচ্ছে রক্তলাল কৃষ্ণচুড়া। তপ্ত গ্রীষ্মের বার্তা নিয়ে ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া। সবুজ পাতার ফাঁকে উজ্জ্বল লাল রঙের কৃষ্ণচূড়ার অপূর্ব বাহারি দৃশ্য দেখে শ্রীমঙ্গলে আসা পর্যটক এবং পথচারীরা মুগ্ধ হচ্ছেন। শ্রীমঙ্গল ভানুগাছ রোডের বধ্যভূমি ৭১ এর সামনে থেকে শুরু করে কমলগঞ্জ উপজেলায় যাওয়ার পথে প্রান্তরে রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো কৃষ্ণচূড়ার মনকাড়া সৌন্দর্য সড়কের উভয় পাশের চা বাগানের সেই সবুজকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে কৃষ্ণচূড়ার মনকাড়া সৌন্দর্য। সবুজ চিকন পাতা। ফাঁকে লাল লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। কৃষ্ণচূড়ার লাল, কমলা, হলুদ ফুল এবং উজ্জ্বল সবুজ পাতা এক অন্যরকম দৃষ্টিনন্দন শোভা। ঠিক এমনি প্রকৃতি অপরূপ লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়ার ফুলের সাজে সাজিয়ে তুলেছে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়ক। যেকোনো বাসযাত্রী ও পথচারীদের হৃদয় কাড়ে নয়ন জুড়ানো এসব কৃষ্ণচূড়া। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রখর রোদের মধ্যে মাঝে মাঝে মিলছে শীতল হাওয়া। এর মধ্যেই সবুজের মাঝে টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়ায় সেজেছে মহাসড়কের দুই পাশ। এমন মনোমুগ্ধকর প্রকৃতির চিত্র দেখে মনে হবে লাল-সবুজের অভ্যর্থনা দিতে দাঁড়িয়ে আছে। যা দেখে কিছুক্ষণের জন্য হলেও প্রকৃতিপ্রেমীদের চোখ আটকে যায়। পথচারী আব্দুস সামাদ বলেন, কমলগঞ্জ থেকে শ্রীমঙ্গল বিটিআরআই এর সামনে নেমে যাই কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রচ- গরমে অস্বস্তি লাগছিল। শহর থেকে হেটে হেটে এখানে এসেছি, এই পথে যেতে দুই পাশে কৃষ্ণচূড়া ফুটে আছে। অনেক ভালো একটা জায়গা। যাঁরা রাস্তার দুই ধারে এই কৃষ্ণচূড়া লাগিয়েছেন, তাঁদের স্বাদুবাদ জানাই। চা শ্রমিক দীপ বুনার্জি বলেন, বাগানে কাজ করার সময় দেখি, এই সড়ক দিয়ে অনেক পথচারী যাতায়াতের সময় কিছু সময় দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন, হাঁটাহাঁটি করেন। এ ছাড়াও বাইরে থেকে অনেকেই আসেন এই সড়কে। শ্রীমঙ্গল আইডিয়াল স্কুল এর সহকারী প্রধান শিক্ষক বলেন, সাধারণত বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এ দুই মাস নিয়েই গ্রীষ্মকাল। আর গ্রীষ্মের ফুলের কথা বলতেই সবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে কৃষ্ণচূড়ার কথা। সুমিষ্ট রসাল ফলের জন্য গ্রীষ্মকাল এগিয়ে রয়েছে, তবে ফুলের দিক থেকেও অন্যসব ঋতুর তুলনায় এগিয়ে রয়েছে গ্রীষ্মকাল।তাই গ্রীষ্মকালকেও ফুল উৎসবের ঋতু বলা যায়। প্রকৃতিপ্রেমী মোঃ একরামুল কবীর বলেন কৃষ্ণচূড়া একটি জনপ্রিয় ফুল। নানা বৈশিষ্ট্যে দৃষ্টিনন্দন এ ফুলের কদর রয়েছে সব মহলেই। বিশেষ করে বাংলা কাব্য, সাহিত্য, সংগীত ও বিভিন্ন উপমায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের কথা বিস্তরভাবে উঠে এসেছে। ফুলটির রং এত তীব্র যে অনেক দূর থেকেই চোখে পড়ে। হঠাৎ দূর থেকে দেখলে মনে হবে, কৃষ্ণচূড়া গাছে যেন লাল রঙের আগুন লেগেছে।