আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, যাকে অন্য কোনো দেশ স্বীকৃতি দেয়নি, এবার তাদের সাথেই আলোচনায় বসলেন পাকিস্তান ও চীনের বিদেশমন্ত্রী। তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে গত শনিবার ইসলামাবাদে বৈঠকটি সম্পন্ন হয়। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে ওই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিলো। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করা ছাড়াও, চীনের বিদেশমন্ত্রী কিন গ্যাং ও পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি কৌশলগত আলোচনায় অংশ নেওয়ার পাশাপাশি বানিজ্যিক বিষয় নিয়ে কথাবার্তা সেরেছেন আফগান প্রতিনিধিদলের সঙ্গে। জাতিসংঘের মহাসচিব দেশের নারীদের উপর তালেবান সরকারের নিষেধাজ্ঞার নিন্দা করার কয়েকদিন পরে ইসলামাবাদ মুত্তাকিকে ভ্রমণের জন্য ছাড়পত্র দেয়। চীন এবং পাকিস্তান হল আফগানিস্তানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী, বেইজিং সীমান্ত জুড়ে থাকা বিশাল অব্যবহৃত খনিজ সম্পদের দিকে নজর রাখে এবং ইসলামাবাদ তাদের দীর্ঘ সীমান্তে বিশাল নিরাপত্তা ঝুঁকি থেকে সতর্ক থাকে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিদেশী বাহিনী প্রত্যাহার এবং পশ্চিমা-সমর্থিত সরকারের পতনের পর তালেবান ২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতা দখল করার পর থেকে আফগান প্রতিনিধিদলটি বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে অন্যতম উচ্চ-প্রোফাইলের অধিকারী ছিলো।
South Asian Strategic Stability Institute এর মহাপরিচালক মারিয়া সুলতান বলেছেন -” এই শীর্ষ সম্মেলনের সবচেয়ে বড় তাৎপর্য হল আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা ছাড়া কোনও আ লিক অর্থনৈতিক ভবিষ্যত সম্ভব নয়। এটিও গুরুত্বপূর্ণ যে একটি আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করা উচিত এবং এটি কেবল তখনই সম্ভব যদি কূটনৈতিক পথে সম্পর্ক পুনর্গঠনের কাজ করা হয়।” কর্মকর্তারা বলেছেন যে একদিনের সমাবেশে আফগানিস্তানের নিরাপত্তার উন্নতি এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বাড়াতে কীভাবে দেশটিকে সাহায্য করা যায় তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছিল। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং বলেছেন, বেইজিং এবং ইসলামাবাদ উভয়ই “আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে সক্রিয়ভাবে সহায়তা করতে প্রস্তুত”।
তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন- ”আমরা আশা করি যে তালেবান অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন এবং মধ্যপন্থা নীতি গ্রহণ করে তার প্রতিবেশীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে। ”কিন্তু সেইসাথে কিন সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “তালেবানদের তার প্রতিবেশীদের নিরাপত্তা উদ্বেগকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে এবং আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনীকে মোকাবেলা করার জন্য শক্তিশালী ব্যবস্থা গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।” এদিকে এই সপ্তাহের শুরুর দিকে, জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন এবং অন্যান্য ২০ টি দেশ ও সংস্থার দূতদের একটি বৈঠকে বলেছিলেন যে আফগানিস্তানে লক্ষ লক্ষ নারী ও মেয়েদের মুখ জোর করে বন্ধ করা হচ্ছে “। এছাড়াও এই সপ্তাহে, সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে আয়োজিত একটি বৈঠকে কাবুলের কোনও প্রতিনিধির উপস্থিতি ছাড়াই আফগানিস্তান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সূত্র : সাউথ চাইনা মর্নিং পোস্ট