কুমিল্লার তিতাসে মসজিদের জায়গা সংক্রান্ত দ্বন্ধের জেরে সীমানা প্রাচীর ও ঘরবাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার সকাল ৮টায় উপজেলার দক্ষিণ বলরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সকাল থেকে ওই স্থানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে আটক করা হয়েছে। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার দক্ষিণ বলরামপুর বাইতুন নূর জামে মসজিদের দানকৃত জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ ভূঁইয়া ও সরকার বংশের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে রবিবার সকাল ৮টায় সরকার বাড়ির লোকজন মসজিদের দানকৃত জায়গায় প্রবাসী শেখ সাবের বাড়ির সীমানা প্রাচীর ও দু’চালা একটি টিনের ঘর ভেঙ্গে ফেলে। এ নিয়ে উত্তেজনা তৈরী হলে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় খোকনের স্ত্রী রোজিনা বেগম ও গোলাম হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছে এবং সফি মিয়ার স্ত্রী রাজ মোহনকে আহতাবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে দুটি বাড়িতে কোন পুরুষ লোক অবস্থান করছেন না। শুধু মহিলারা বাড়িতে আছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ এই মসজিদের জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। কিছু দিন পর পর এক একটি ইস্যু নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ বাঁধে। গত মাসের ২৪ তারিখ ঈদের দুইদিন পর উভয় গ্রুপের সংঘর্ষে প্রায় ৭/৮জন আহত হয়। উক্ত ঘটনায় একাধিক মামলাও হয়েছে। সৌদি প্রবাসী শেখ সাবের স্ত্রী ফজিলতের নেছা জানান, দক্ষিণ বলরামপুর বাইতুন নূর জামে মসজিদ সংলগ্ন জায়গাটি আমরা ক্রয়সূত্রে মালিক। তবে তা নিয়ে দীর্ঘদিন আদালতে মামলা চলছিল। একাধিক রায় আমাদের পক্ষে। যখন আমরা জায়গার রায় পেয়েছি তখন অপরপক্ষ মসজিদের নামে উক্ত জায়গা দান করে এই ঝামেলার সৃষ্টি করেছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার বাড়ির লোকজন শুধু আমার সীমানা প্রাচীর ও ঘর ভাংচুর করেনি, তারা আমার বসতঘরে ঢুকে লুটপাট চালায়। আব্দুল করিমের মেয়ে সানজিদা আক্তার, শেখ ফরিদের স্ত্রী শাহিনা আক্তার ও হামিদ সরকারের মেয়ে তাসনিম হামিদ রিতা জানান, মসজিদের দানকৃত জায়গায় আমরা মাদ্রাসা নির্মাণ করবো। তাই গ্রামের লোকজন সকালে উক্ত জায়গা পরিস্কার করেছে। তারা পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, শেখ সাবের স্ত্রী ও তাদের লোকজনই তাদের বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। আমাদের লোকজন কোন কিছু লুটপাট করেনি। উক্ত ঘটনায় পুলিশ আমাদের একজনকে আটক করে নিয়ে গেছে, আরেকজন হাসপাতালে আছে। তিতাস থানার ওসি সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।