নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে নিজেও কেন্দ্রে ভোট দিতে যাননি। কোনো প্রচার প্রচারণাও ছিল না। কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টও নিয়োগ দেননি। কোনো পোস্টার ও লিফলেটও কোথাও ছিল না। তবুও বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হলেন গাজীপুর মেট্রো সদর থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান আজমল ভূইয়া। তিনি সাবেক গাজীপুর পৌরসভা ও বর্তমানে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে টানা ২০ বছর ধরে ওয়ার্ড কমিশনার/কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। গাজীপুর নগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ২৮ নম্বর ওয়ার্ড। নগর ভবন, গাজীপুর আদালত, গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা ও মহানগর বিএনপি-আওয়ামী লীগ কার্যালয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ ওয়ার্ডেই অবস্থিত।
বিপুল ভোটে নিশ্চিত বিজয় জেনেও দলের আদর্শের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে হাসান আজমল ভূইয়া গত ১৯ মে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। কিন্তু প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময়ের পর নির্বাচন বিধি অনুযায়ী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনো সুযোগ না থাকায় তার নাম ও প্রতীক ইভিএম মেশিনে থেকে যায়।
সাধারণ ভোটাররাও এই সুযোগ হাতছাড়া করেননি। তারা লাটিম প্রতীকে ভোট প্রয়োগ করলে হাসান আজমল ভূইয়া ৬ হাজার ১৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঘুড়ি প্রতীকের জাহিদ হোসেন পান ৩ হাজার ২১ ভোট।
হাসান আজমল ভূইয়া নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও সাধারণ ভোটাররা তাকে ছেড়ে সরে যাননি। ভোটার হাবিবুর রহমান বলেন, হাসান আজমল ভূইয়ার চেয়ে বেশি জনবান্ধব প্রতিনিধি আমাদের ওয়ার্ডে আর দ্বিতীয় কেউ নেই। আপদে-বিপদে তাকে সব সময় কাছে পাওয়া যায়। তিনি একটানা ২০ বছর ধরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি দায়িত্ব পালনকালে এলাকায় অনেক উন্নয়ন করেছেন। আমাদের ওয়ার্ডে তার বিকল্প কেউ নেই। তার নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর ঘোষণা আমরা সাধারণ ভোটাররা তাই মেনে নিইনি। আমরা চাই তিনি সব সময় আমাদের পাশে থাকুক। তাই আমরা তাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছি।
এদিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোটের দিন বৃহস্পতিবার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দ্রগুলো ঘুরে লাটিম প্রতীকের ব্যাজধারণকারী কাউকে পাওয়া যায়নি। কোনো কেন্দ্রেও লাটিম প্রতীকের কোনো এজেন্ট ছিল না। প্রার্থী হাসান আজমল ভুইয়ার আত্মীয়-স্বজনকেও কোনো কেন্দ্রে দেখা যায়নি। এমনকি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হাসান আজমল ভূইয়া নিজেও ভোট দিতে কেন্দ্রে যাননি বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হাসান আজমল ভূঁইয়া বলেন, সরে দাঁড়ানোর ঘোষণার পর আমার কোনো প্রচার-প্রচারণা ছিল না। এমনকি কেনো কেন্দ্রে আমি এজেন্টও দেয়নি। তবুও একটি মহলের প্ররোচণায় দু-একটি পত্রিকাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাকে নিয়ে অপপ্রচার হয়েছে, আমি নাকি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছি।