গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রানীগঞ্জে চলতি মৌসুমে লিচুর বাম্পার ফলন ও সঠিক মূল্য পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। গাছের ডালে থোকায় থোকায় ঝুলছে লাল লাল লিচু। লিচুর ভারে নুয়ে পড়েছে বেশিরভাগ গাছ। চারদিকে লিচুর মিষ্টি মধুর ঘ্রাণ। গাছের ডালে ডালে ভিড় করেছে মৌমাছি। এ অঞ্চলের আবহাওয়া লিচুর জন্য বেশ উপযোগী হওয়ায়, এখানে প্রচুর পরিমাণে লিচুর বাগান গড়ে উঠেছে। এখানকার লিচু রসালো ও স্বাদ বেশি হওয়ায় এর সুনাম রয়েছে সারা দেশজুড়ে। লিচু চাষ করে কাপাসিয়া উপজেলার প্রান্তিক চাষীদের অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। এতে অনেকের লিচু চাষের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সৃজিত লিচু বাগানে গেলেই থোকায় থোকায় লিচু নজরে আসে। মিষ্টি ও রসালো স্বাদের বিভিন্ন জাতের লিচুর সমাহার রয়েছে বাগান গুলোতে। এসব বাগানে বোম্বাই, কালিপুরী, চায়না-থ্রি এবং দেশী লিচুর সমারোহে ছেয়ে গেছে বাগান গুলো।২৭ মে উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রানীগঞ্জ বাজারসহ ফুলবারিয়া লিচুবাগানে গিয়ে দেখা গেছে,বাগান থেকে সংগ্রহ করা লিচু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠাতে প্রস্তুত করছে চাষীরা। প্রতিদিন এই এলাকা থেকে ৪-৫ টি ট্রাকভর্তি লিচু দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে বলে চাষীরা জানায়। বেশীর ভাগ গাছের লিচুই মোটামুটি পরিপক্ক হয়েছে। তবে এখনো কিছু গাছের লিচু কাঁচা রয়েছে। বাগান মালিক ও চাষীদের আশা,অল্প সময়ে অবশিষ্ট লিচু পরিপক্ক হয়ে লাল রং ধারণ করবে। লিচু বাগানের মালিক চাষী জানান, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে লিচু সহ বিভিন্ন মৌসুমী ফলের চাষ করে ভালোই চলছে তার সংসার। চলতি মৌসুমে তার বাগানে লিচুর ব্যাপক ফলন হওয়ায় এবং বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় ভীষণ খুশি। তিনি বলেন, স্থানীয় বাজারে প্রতি ১শ বোম্বাই, কালিপুরী লিচুর দাম ২শ থেকে ৩শ টাকা, চায়না-থ্রি ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা এবং দেশী লিচুর দাম ২০০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা এসে লিচু সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। চলতি বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় অনেক লিচু গাছেই নস্ট হয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানায়, কৃষকদের যদি সরকার কর্তৃক উন্নত মানের কৃষি সরঞ্জাম দেওয়া হয়, এতে কৃষকরা অনেক উপকৃত হবে। রানীগঞ্জে বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা এই মৌসুমী ফল চাষ করে থাকে। তারা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশে ও দেশের বাহিরে রপ্তানি করে থাকে এ-ই লিচু।ফলে কেবল মৌসুমী ফলের চাষাবাদ করেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন তারা। এ-বিষয়ে উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার বসাক জানান, এই অঞ্চলের কৃষকেরা অনেক পরিশ্রমী। ভালো ফলন পাওয়ার জন্য তারা অনেক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমিও সবসময় চেষ্টা করি, তাদের কৃষিকাজে পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করার জন্য। সম্প্রতি কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বিভিন্ন চাষীদের মৌসুমী ফল চাষে উদ্বুদ্ধ ও সহযোগীতা করে থাকেন।