সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
পুঁইশাক চাষে সফল সুফিয়া, আগ্রহী হচ্ছে অন্য কৃষকরাও অতিরিক্ত টোল আদায় করলেই ইজারা বাতিল-ভোলায় উপদেষ্টা সাখাওয়াত কৃতি ফিরোজীকে বাঁচাতে সাভারে চ্যারিটি কনসার্ট আওয়ামী লীগের সাথে দ্বন্দ্ব নাই, যারা অন্যায় করেছে তাদের বিচার চাই-আব্দুল আউয়াল মিন্টু জলঢাকায় গণঅধিকার পরিষদের গণসমাবেশ সোনারগাঁওয়ে মাসব্যাপি লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব শুরু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানে ৮৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আগৈলঝাড়া বিএনপি’র উদ্যোগে আনন্দ র‌্যালি পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্তুদের অবস্থান কর্মসূচি জামালপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ ভুট্টা চাষে দেশের শীর্ষে চুয়াডাঙ্গা: ৫৯,৬৫৬ হেক্টর জমিতে আবাদ

কবি আল মাহমুদের কবিতায় সুফিচেতনা

মুসা আল হাফিজ
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০২৩

মানুষের ঐতিহ্যসন্ধান মূলত তার অস্তিত্ব অনুসন্ধান করা। কিন্তু ঐতিহ্য সন্ধান পরিণতি পায় না আত্মসন্ধান ছাড়া। নিজেকে যখনই খুঁজেছে মানুষ, তাকে যেতে হয়েছে সত্তার ভেতরে। নিজের ভেতরে সত্য ও সত্তাকে তালাশ সুফিকবিতার একটি প্রবণতা, যা হৃদয়কে দেখে হৃদয়ের স্রষ্টা ও অধিপতির প্রেমমগ্নতার আয়নায়। যিনি স্রষ্টা, তিনি দয়াময় এবং প্রেমময়। তাঁর ভালোবাসার ব্যাখ্যা হচ্ছে জগতের সব মমতা, শুদ্ধ ও বুদ্ধ প্রেম, প্রেমিক-প্রেমাস্পদ। প্রাণে, প্রকৃতিতে, মানুষে ও জীবনে নিহিত প্রেম সে প্রেমেরই ছায়া। এগুলো সুফিকবিতার চোখে মাযাজ বা রূপক। প্রেমের হাকিকত বা সত্যসার হচ্ছে সেই চিরন্তনের শুরুহীন শেষহীন প্রেমনহর, যার জলকণা হচ্ছি আমরা, আমাদের জীবন। আল মাহমুদের কাব্যে দেহজ বা রূপক প্রেম প্রবল বিস্তৃতি নিয়ে অপ্রতিহত। কিন্তু সুফিপ্রেমের বয়ন ও বয়ান এরই মধ্যে সৌগন্ধ সমীরণ হয়ে হিল্লোলিত হয়েছে। যেখানে সুফিউপাদান স্পষ্ট এবং প্রায়ই লক্ষ্যসচেতন। কিন্তু নিখাঁদ সুফি কাব্যের উৎসারণ আল মাহমুদে বিরল বটে।
আল মাহমুদের ইসলামি পরিপ্রেক্ষিত প্রবাদপ্রতীম হলেও দীর্ঘকালীন কাব্যিক পর্যটনের পটভূমিতে তার কবিতা জাগিয়ে তোলে নানামাত্রিক বিচিত্রতা ও দ্বান্দ্বিকতার আভাস। এর মধ্যে যে প্রখর, সুমিত মগ্নচৈতন্য আল্লাহে সমর্পণের তাগিদ ও তাড়নায় ব্যাকুল, তা মনন ও সংবেদে রচনা করে ঋদ্ধ পটভূমি। দ্রুত ধাবমান তরঙ্গ হয়ে ছুটতে থাকে অনুভবের সব স্রোতে। অধ্যাত্মের ইন্দ্রজালভরা সীমান্তে আল মাহমুদের কাব্যের মরমিতা জ্বলে আর নেভে। কিন্তু একেবারে নির্বাপিত হয় না। বরং চেতনার গভীরতরো কোনো অনুভবের অপেক্ষায় থাকে, যেন সুফিভাবের উপলক্ষকে নিজের জ্বলে ওঠার শিখায় পরিণত করতে পারে। অতএব প্রাথমিক যে-কোনো সুফি অনুভবই আল মাহমুদের কবিতার সঙ্গে এক ধরনের আত্মীয়তাকে উদযাপন করে।
কাব্যের ভাষাক্ষেত্রে অপূর্ব এক সম্ভাবনার দরোজা খুলেছেন আল মাহমুদ। ছন্দ ও চিত্র নির্মাণে তিনি কৌশলী। আবহমানতার সঙ্গে করেছেন আধুনিকতার ঘটকালি। গ্রামীণ জীবনযাত্রা; সারল্য-বিস্ময়, নাগরিক বোধ; বিচ্ছিন্নতা-যান্ত্রিকতা, প্রকৃতি, মানবতা, যৌনচেতনা, চিরায়ত বাংলা প্রমুখ তার কবিতার প্রধান অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হলেও রুহানিয়্যত, মৃত্যুচেতনা, বিশ্বাসের বিভূতি ও ঐতিহ্য-অঙ্গীকার লীলালিপ্ত তার কবিতার গতরে ও ভেতরে, যা তার কাব্যকে বাংলা কবিতার ঐতিহ্যবাহী সুফিধারার সঙ্গে যুক্ত করে দেয়।
বাংলা সাহিত্যের বালকবেলায় সুফিতত্ত্বকে আশ্রয় করে উদ্ভূত ও বিকশিত হয়েছিল এই ধারা। যখন এদেশে মুসলিম শাসক, ওলামা, সুফি ও ধর্মান্তরিত স্থানীয় জনগণের সমন্বয়ে একটি নব্য মুসলিম সমাজ ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে। ইসলামের জীবনবাণী নবতরঙ্গের সৃষ্টি করে সমাজে। তৈরি হয় নতুন মানসিক চাহিদা, যা অবধারিতভাবে সুফিসাহিত্যের বিনির্মাণ কামনা করে। ইতোপূর্বে ফারসি, আরবি, তুর্কি ও পশতু সাহিত্যে যে সুফিসাহিত্যের তৈরি হয়েছে প্রশস্ত সম্ভার। রাবিয়া বাসারী, আবু সাঈদ আবুল খায়র, ফখরুদ্দীন ইরাকী, আবদুল করীম জিলি, হাকিম সানায়ী, ইবনে আরাবী, ইউনুস এমরে নিজামী গঞ্জাবী, আমীর খসরু, শেখ মুসলেহউদ্দীন সাদী, ফরিদউদ্দীন আত্তার, হাফিজ সিরাজী, জালালুদ্দীন রুমী, ওমর খৈয়াম, আবদুর রহমান জামী, ইবনুল ফরিদ প্রমুখের দিওয়ানে, মসনভিতে, গজলে, রুবাইয়াতে, খমসায় সুফিচেতনা ছিল বহমান। ফারসি ও আরবির একাত্মতা ও আত্মীয়তায় বাংলার মনোলোকের তীরে তার ঢেউ আছড়ে পড়ে। এ সাহিত্য চিরআত্মার সত্য। এর কোনো দেশকাল ছিল না। আল কোরআন ও নবীজীবনের কেন্দ্রীয় সৌহার্দ্যে সেই সাহিত্য-ঐতিহ্য এখানকার মুসলিম মনের পরমাত্মীয় হয়ে ওঠে। অবশ্য বাংলার কবিরা এর চিত্রায়ণ করেছেন একান্ত বাঙালি মেজাজ, প্রেক্ষাপট ও পরিবেশ-প্রতিবেশের নির্দেশে। কবিতায় ঘটেছে এরই চিত্রায়ণ।
তাতে সুফিতত্ত্ব বয়নের চেয়ে মানব প্রণয়কাব্য বন্দিত হয়েছে বেশি। যদিও কিছু কাব্যে বিচ্ছিন্নভাবে অধ্যাত্ম সাধনা ও তত্ত্বের বিবরণ আছে। মধ্যযুগে বাংলা ভাষায় সুফিতত্ত্ব বিষয়ে রচিত হয়েছে শাস্ত্রকাব্য ও পদাবলি। এতে প্রধানত সুফি সাধন প্রক্রিয়াই বর্ণিত হলেও সৃষ্টিতত্ত্ব, যোগতত্ত্ব, দেহতত্ত্ব, ধর্ম ও নীতিবিষয়ক বয়ানের বিস্তার রয়েছে। পরবর্তী সময়ে সুফিধারা বহমান এক ঊর্মিলা প্রবাহ হয়ে বাংলা ভাষায় আপন গতিপথ নিশ্চিত করেছে। যেখানে বিপুল সংখ্যক কবি বহু শতকের ধারায় নিজেদের ব্যক্তিগত আবেগ, অনুভূতি, ভাব, রস ও ভাষা সমন্বয়ে অগণিত পঙ্ক্তিতে ফুটিয়ে তুলেছেন আল্লাহ ও নবীবন্দনা, সত্যে সমর্পণ ও প্রেমভাষ্যের কাব্যসৌন্দর্য। এতে বিশ্বাসের প্রগাঢ?তা, ধর্মসাধনা, তত্ত্বচিন্তা এবং অন্তর্মুখী ভাবনার উন্মোচন ঘটেছে লোকজ উপাদানের হাত ধরে।
ঐতিহ্য ও লোকজ উপাদানের এ ধারায় আল মাহমুদ আধুনিক বাংলা কবিতার অতুলনীয় রাজ্যপাল। কবিতাকে লোকজন উপাদানে শৈল্পিক করে তোলা তার সহজাত গুণ। ফলে তার কাব্যে মায়ের মুখ, হলুদ পাখি, পাতার আগুন, রাতজাগা ছোট ভাইবোন, সাইকেলের ঘণ্টাধ্বনি, হাঁটুজল নদী, কুয়াশা-ঢাকা পথ, নাড়ার দহন, তিলের সৌরভ, মাছের আঁশটে গন্ধ, বাঁশঝাড়ে দাদার কবর, বইয়ের মলাট, অসুখী কিশোর, স্বাধীনতা, মিছিল, নিশান, দাঙ্গার আগুন, নিঃস্ব অগ্রজের কাতর বর্ণনা, চরের পাখি, হাঁসের ডিম, গন্ধভরা ঘাস, দড়িছেঁড়া হারানো বাছুর, গোপন চিঠির প্যাড, নীল খাম, ঢেউয়ের পাল ইত্যাদির ভেতর দিয়ে বয়ে যায় ভোরের প্রগাঢ? আজান। এরই মধ্যে কবিতা হয়ে ওঠে মক্তবের মেয়ে চুলখোলা আয়েশা আক্তার। আর কুয়াশার শাদা পর্দা দোলাতে দোলাতে ঘরে ফেরা কবি দেখেনÍ বৈঠকখানায় মুখ নিচু করে আব্বা পড়ছেন- ফাবি আইয়ে আলা ই-রাব্বিকুমা তুকাজ্জিবানৃ
আল মাহমুদ । চট্টগ্রাম বাতিঘর
আল মাহমুদ । ছবি: চট্টগ্রাম বাতিঘর
তাঁর কাব্যে সুফি-অঙ্গীকার
একদা বামপন্থায় সমর্পিত আল মাহমুদ ইসলামকে অঙ্গীকার করেন জীবনপাঠের ধারায়। ফলে তার কাব্যে দুটি বিশিষ্ট স্তর সবার জানা। ইসলামে তার প্রত্যাবর্তনের প্রেক্ষাপট কী?
আল মাহমুদ জানানÍ আমি এক বছর বিনা বিচারে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক থাকার সময় একখানা পবিত্র কোরআন আমার স্ত্রী আমাকে জেলখানায় দিয়ে এলে আমি তা অর্থসহ আদ্যোপান্ত পাঠ করা শুরু করি। আর প্রথম পাঠেই আমার শরীর কেঁপে ওঠে। এর আগে কোনো গ্রন্থ পাঠে আমার মধ্যে এমন ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়নি। যেন এক অলৌকিক নির্দেশে আমার মস্তক মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
মস্তক মাটিতে লুটিয়ে পড়ার আগেও আল মাহমুদ নিজের সত্তায় অনুভব করতেন শিশু আর পশুর বিরোধ। তখনই তিনি অনুভব করেন নিজের সত্তা থেকে কারা যেন খুঁটে খায় পরস্পরবিরোধী আহার! নুহের নৌকা তখনই বইছে তার কাব্যে, দেখা যাচ্ছে তসবির দানা। বিকাশের প্রথম পাদেই শোনা যায় তার উচ্চারণÍ বিকাশের প্রথম প্রহর থেকে আল মাহমুদের কাব্যে সুফিভাবের পদপাত ছিল প্রচ্ছন্ন। কালের কলসে বেজে ওঠে কবির উচ্চারণ তাকান, আকাশে অই অন্ধকার নীলের দ্যুলোকে এমন তারার কণা, যেন কোন স্থির বিশ্বাসীর
তসবিহ ছেঁড়া স্ফটিকের দানা!
শূন্য সৌরলোকে
পরীর চাঁদের নাও দোল খায়!
অলীক নদীর অস্থির পানির আভা স্পর্শ করে দূর বাতাসের অসীম সাহস।
(অসীম সাহসী)
সোনালি কাবিন দিয়ে বাংলা কবিতার সঙ্গে বাসর নিশ্চিত করছেন যখন, তখনই কবি জানাচ্ছেনÍ
কোথাও রয়েছে ক্ষমা, ক্ষমার অধিক সেই মুখ
জমা হয়ে আছে ঠিক অন্তরাল আত্মার ওপর!
আমার নখের রক্ত ধুয়ে গেলে
যেসব নদীর জল লাল
হয়ে যাবে বলে আমি ভয়ে দিশাহারা
আজ সে পানির ধারা পাক খেয়ে নামে
আমার চোখের কোণে
আমার বুকের পাশ ঘেঁষে!
(তোমার আড়ালে, সোনালি কাবিন)
এতকাল এ প্রকাশ ছিল ঐতিহ্য ও লোকায়ত উন্মোচন। কারাগারে কবির মনোজাগতিক যে উদ্ভাসন ঘটল আল কোরআনের আলোয়, তারপর অধ্যাত্ম সমর্পিত হলো বিশ্বাসে। বিশ্বাস অনূদিত হলো সুস্পষ্ট প্রকাশে। তখন থেকে তার কাব্যে সুফিচেতনা আর অনির্ণিত নয়। বরং তার উপস্থিতি সহজাত স্বাভাবিকতায় ক্রিয়াশীল, যা আপন হাতে রচনা করছে দ্বিতীয় ভাঙন, উড়ালকাব্য বা আরব্যরজনীর রাজহাঁস, করছে কদররাত্রির প্রার্থনা। আল মাহমুদ বলেছিলেন, সুফিমত আমার কবিতায় বিশেষ প্রভাব ফেলেছে! আর পবিত্র কোরআন আমার কবিতা লেখার প্রধান পাথেয়!
পৃথিবীর সর্বশেষ ধর্মগ্রন্থটি বুকের ওপর রেখে কবি যখন ঘুমিয়ে পড়লেন, তারপর তার চেতনালোকের মায়াবি পর্দা দুলে উঠল। যার ফাঁক দিয়ে ধরা পড়ে রহস্যময় স্বপ্ন। কবি চলে যান সেই মুহূর্তে, যখন নামুস জিবরাইল পৃথিবীর শেষ পয়গাম্বরকে আদেশ করেন, পাঠ করো। সেই পাঠের দ্যুতিতে স্নিগ্ধ হয়ে কবি জানালেন ঋদ্ধ অভিজ্ঞতাÍ
ঘুমের মধ্যে কারা যেন, মানুষ না জিন
আমার কবিতা পড়ে বলে ওঠে, আমিন, আমিন!
(সবুজ ঈমান)
অদৃষ্টবাদীদের রান্নাবান্না কাব্যগ্রন্থের হজরত মুহাম্মদ (সা.) কবিতায় তিনি লেখেনÍ
হেরার বিনীত মুখে বেহেশতের বিচ্ছুরিত স্বেদ
শান্তির সোহাগ যেন তার সেই ললিত আহ্বান,
তারই করাঘাতে ভাঙে জীবিকার কুটিল প্রভেদ
দুঃখের সমাজ যেন হয়ে যাবে ফুলের বাগান!
লাত মানাতের বুকে বিদ্ধ হয় দারুণ শায়ক
যে সব পাষাণ ছিল গঞ্জনার গৌরবে পাথর
একে একে ধসে পড়ে ছলনার নকল নায়ক
পাথর চৌচির করে ভেসে আসে ঈমানের স্বর!
সুফিকবিতা মানুষের পরিণতি নিয়ে ভাবিত হয়, অনন্তকালীন জিজ্ঞাসায় হয় তাড়িত। প্রকৃতির নিদর্শনগুলোতে নিহিত ইঙ্গিতগুলোকে অবলোকন করে বিশ্বাসের চোখ দিয়ে। আল মাহমুদে লক্ষ্য করা যায় এর স্বাক্ষর।
অনন্তকালের মধ্যে তুমি কি করে থাকবে?
যেখানে একটি নদী চলতে চলতে অদৃশ্য হয়ে যায়,
একটা পাখি উড়ে যায় এমন অসীম শূন্যতায়
মনে হয় নিজের দৃষ্টিই ফিরে এলো নিজের দিকে!
অনন্তকাল কি করে চুম্বনের শব্দ?
কোন পরিচিত বৃক্ষের সবুজ কি অনন্তকাল?
আমাদের বাড়ির পুকুর পাড়ে
সবনে গাছে একটি পাখি!
আমার সমস্ত সচেতন কালের মধ্যে এর পালক খোঁচানো
আমি অবলোকন করি!
(অনন্তকাল, অদৃষ্টবাদীদের রান্নাবান্না)




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com