শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০৩:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
চিতলমারীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রাণ নাশের হুমকি : থানায় জিডি গজারিয়ায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চমক দেখালেন মীনা খাগড়াছড়িতে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান আজিজ উদ্দিন বগুড়া ও জয়পুরহাটে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যারা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জামালপুর সদর উপজেলা পরিষদে বিজন কুমার চন্দরকে বিজয়ী ঘোষণা ডিমলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন মেলান্দহে দুগ্ধ সমবায় প্রকল্পের সদস্যদের মাঝে ঋণের চেক বিতরণ গলাচিপায় জেলেদের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণ তারাকান্দায় অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে বিএনপির ত্রাণ নুরে আলম সিদ্দিকী শাহীন নাজিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত

হজ্জ : গুরুত্ব ও ফযীলত

মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৪ জুন, ২০২৩

ভূমিকা : হজ্জ ইসলামের অন্যতম রুকন ও ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ। এটি একটি ফরয ইবাদত। যা সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের উপর ফরয। এর গুরুত্ব যেমন অপরিসীম তেমনি ফযীলতও সীমাহীন। পৃথিবীতে যত নেক আমল রয়েছে তন্মধ্যে হজ্জ শ্রেষ্ঠতম। রাসূল (ছাঃ) অন্য সকল আমলের উপর হজ্জের মর্যাদাকে পূর্ব ও পশ্চিম দিগন্তের দূরত্বের সাথে তুলনা করেছেন। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজ্জ পালনকারীকে গুনাহমুক্ত নবজাতকের ন্যায় বলা হয়েছে। কবুল হজ্জের পুরস্কার জান্নাত। হজ্জের প্রতিটি কর্ম সম্পাদনের জন্য রয়েছে পৃথক ফযীলত ও মর্যাদা। এই ইবাদতের মাধ্যমে বিশ্ব মুসলিম একত্রিত হওয়ার সুযোগ লাভ করে। নি¤েœ হজ্জের গুরুত্ব ও ফযীলত আলোচনা করা হ’ল।-
কুরআনের আলোকে হজ্জের গুরুত্ব :ছালাত, ছিয়াম ও যাকাতের মত হজ্জ পালন করা সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের উপর ফরয। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ্জ করা ঐ ব্যক্তির উপর ফরয করা হ’ল, যার এখানে আসার সামর্থ্য রয়েছে। আর যে ব্যক্তি তা অস্বীকার করে (সে জেনে রাখুক যে,) আল্লাহ জগদ্বাসী থেকে মুখাপেক্ষীহীন’ (আলে ইমরান ৩/৯৭)। এটিই হজ্জ ফরয হওয়ার মূল দলীল।[১] তিনি আরো বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ ও ওমরাহ পূর্ণ কর। কিন্তু যদি তোমরা বাধাপ্রাপ্ত হও, তাহ’লে যা সহজলভ্য হয়, তাই কুরবানী কর’ (বাক্বারাহ ২/১৯৬)। এ আয়াতটি হজ্জ ফরয হওয়ার পাশাপাশি ওমরাহ ফরয হওয়ারও দাবী রাখে, যে ব্যাপারে অধিকাংশ ছাহাবী ও ওলামায়ে কেরাম অভিমত ব্যক্ত করেছেন।[২] অন্যত্র তিনি বলেন, ‘আর তুমি মানুষের মাঝে হজ্জের ঘোষণা প্রচার করে দাও। তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং সকল প্রকার (পথশ্রান্ত) কৃশকায় উটের উপর সওয়ার হয়ে দূর-দূরান্ত হ’তে। যাতে তারা তাদের (দুনিয়া ও আখেরাতের) কল্যাণের জন্য সেখানে উপস্থিত হ’তে পারে এবং রিযিক হিসাবে তাদের দেওয়া গবাদিপশুসমূহ যবেহ করার সময় নির্দিষ্ট দিনগুলিতে তাদের উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে’ (হজ্জ ২২/২৭-২৮)। অত্র আয়াতসমূহে হজ্জ ফরয হওয়ার বিষয়টি সুস্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয়েছে।
হাদীছের আলোকে হজ্জের গুরুত্ব : হজ্জের গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্যে কয়েকটি হাদীছ নি¤েœ পেশ করা হ’ল। – ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপরে প্রতিষ্ঠিত (১) তাওহীদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান করা এ মর্মে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাঁর বান্দা ও রাসূল (২) ছালাত কায়েম করা (৩) যাকাত প্রদান করা (৪) হজ্জ সম্পাদন করা ও (৫) রামাযানের ছিয়াম পালন করা’।[৩]
আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণে বললেন, ‘হে জনগণ! তোমাদের উপর হজ্জ ফরয করা হয়েছে। অতএব তোমরা হজ্জ সম্পাদন কর। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! তা কি প্রতি বছর? তিনি নীরব থাকলেন এবং সে তিনবার কথাটি বলল। এরপর রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, আমি হ্যাঁ বললে তা ওয়াজিব হয়ে যাবে (প্রতি বছরের জন্য) অথচ তোমরা তা পালন করতে সক্ষম হবে না। তিনি পুনরায় বললেন, তোমরা আমাকে ততটুকু কথার উপর থাকতে দাও যতটুকু আমি তোমাদের জন্য বলি। কারণ তোমাদের পুর্বেকার লোকেরা তাদের অধিক প্রশ্নের কারণে এবং তাদের নবীদের সাথে বিরোধিতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অতএব আমি তোমাদের যখন কোন কিছু করার নির্দেশ দেই, তোমরা তা যথাসাধ্য পালন কর এবং যখন তোমাদের কোন কিছু করতে নিষেধ করি তখন তা পরিত্যাগ কর’।[৪] এ হাদীছটি স্পষ্টভাবে জীবনে একবার হজ্জ ফরয হওয়ার প্রমাণ বহন করে।
ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা আকরা‘ বিন হাবেস নবী করীম (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! হজ্জ কি প্রতি বছর ফরয না জীবনে একবারই ফরয? তিনি বললেন, না বরং হজ্জ জীবনে একবার ফরয। যে অধিক করবে তা তার জন্য নফল হবে’।[৫]
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইয়াজূজ ও মাজূজ বের হওয়ার পরও বায়তুল্লাহর হজ্জ ও ওমরাহ পালিত হবে’।[৬] হজ্জ এমন গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যে, পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতেও তা সম্পাদন করতে হয়। অন্য বর্ণনায় আছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন,لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى لاَ يُحَجَّ الْبَيْتُ ‘বায়তুল্লাহর হজ্জ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না’।[৭]
ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ্জের সংকল্প করে সে যেন অবিলম্বে তা আদায় করে। কারণ মানুষ কখনও অসুস্থ হয়ে যায়, কখনও প্রয়োজনীয় জিনিস বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং কখনও অপরিহার্য প্রয়োজন সামনে এসে যায়।[৮] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমরা দ্রুত ফরয হজ্জ সম্পাদন কর। কারণ তোমাদের কেউ জানে না কখন অপরিহার্য প্রয়োজন সামনে এসে যায়’।[৯] ইবাদত হিসাবে হজ্জ অধিক গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় রাসূল (ছাঃ) তা দ্রুত সম্পাদন করার নির্দেশ দিয়েছেন। ওমর (রাঃ) বলেন, যাদের সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ্জ সম্পাদন করবে না তারা ইহূদী ও নাছারা অবস্থায় মারা যাবে’।[১০] এর দ্বারা হজ্জের গুরুত্ব বুঝানো হয়েছে এবং ফরয ত্যাগকারীদেরকে হুমকী দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ এই নয় যে, তারা অমুসলিম হয়ে যাবে’।[১১]
হজ্জের ফযীলত : আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম মিল্লাতের উপর হজ্জ ফরয করেছেন। উদ্দেশ্য স্বীয় বান্দাদের ক্ষমা করে তাদেরকে জান্নাতের সুখময় স্থান দান করা। আর তিনি হজ্জের প্রতিটি কর্ম সম্পাদনের জন্য পৃথক পৃথক ফযীলতের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। রাসূল (ছাঃ) বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে হজ্জের ফযীলত ও মর্যাদা বর্ণনা করেছেন। সেগুলো নিম্নে পেশ করা হ’ল।-
হজ্জ পালনকারী নবজাতকের ন্যায় গুনাহমুক্ত : আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ করেছে। যার মধ্যে সে অশ্লীল কথা বলেনি বা অশ্লীল কার্য করেনি, সে হজ্জ হ’তে ফিরবে সেদিনের ন্যায় (নিষ্পাপ অবস্থায়) যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিলেন’।[১২] অর্থাৎ সে কাবীরা-ছাগীরা, প্রকাশ্য-গোপনীয় সকল গুনাহ থেকে ঐরূপ মুক্ত হয়ে ফিরে আসে। যেরূপ একজন শিশু গুনাহ মুক্ত হয়ে জন্মগ্রহণ করে।[১৩]
হজ্জের একমাত্র প্রতিদান জান্নাত : আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘এক ওমরাহ অপর ওমরাহ পর্যন্ত সময়ের (ছগীরা গুনাহের) কাফফারা স্বরূপ। আর জান্নাতই হ’ল কবুল হজ্জের একমাত্র প্রতিদান’।[১৪] ‘হজ্জে মাবরূর’ বা কবুল হজ্জ বলতে ঐ হজ্জকে বুঝায়, যে হজ্জে কোন গোনাহ করা হয়নি এবং যে হজ্জের আরকান-আহকাম সবকিছু (ছহীহ সুন্নাহ মোতাবেক) পরিপূর্ণভাবে আদায় করা হয়েছে। এতদ্ব্যতীত হজ্জ থেকে ফিরে আসার পরে পূর্বের চেয়ে উত্তম হওয়া এবং পূর্বের গোনাহে পুনরায় লিপ্ত না হওয়া কবুল হজ্জের বাহ্যিক নিদর্শন হিসাবে গণ্য হয়’।[১৫] আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বিদায় হজ্জের ভাষণে বলেছিলেন,… ‘হে লোকসকল! সত্বর তোমরা তোমাদের প্রভুর সঙ্গে মিলিত হবে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তোমাদের আমল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। অতএব সাবধান! তোমরা আজকের দিনের পর যেন পুনরায় পথভ্রষ্ট হয়ো না’।[১৬]
হজ্জ পূর্ববর্তী গুনাহকে ধ্বংস করে দেয় : ইবনু শামাসা আল-মাহরী (রহঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমরা আমর ইবনুল আছ (রাঃ)-এর মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দেখতে উপস্থিত হ’লাম। তখন তিনি দীর্ঘ সময় ধরে কাঁদলেন এবং দেয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে রাখলেন। এরপর তিনি বললেন, আল্লাহ যখন আমার অন্তরে ইসলামের অনুরাগ সৃষ্টি করে দিলেন, তখন আমি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে উপস্থিত হয়ে অনুরোধ জানালাম যে, আপনার ডান হাত বাড়িয়ে দিন, যাতে আমি বায়‘আত করতে পারি। রাসূল (ছাঃ) তাঁর ডান হাত বাড়িয়ে দিলেন। কিন্তু আমি আমার হাত গুটিয়ে নিলাম। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, কি ব্যাপার হে আমর? আমি বললাম, আমি শর্ত করতে চাই। তিনি বললেন, কি শর্ত করতে চাও? আমি বললাম, আল্লাহ যেন আমার (পিছনের সব) গুনাহ মাফ করে দেন। তিনি বললেন, হে আমর! তুমি কি জান না, ‘ইসলাম’ তার পূর্বেকার সকল পাপ বিদূরিত করে দেয় এবং ‘হিজরত’ তার পূর্বেকার সকল কিছুকে বিনাশ করে দেয়। একইভাবে ‘হজ্জ’ তার পূর্বের সবকিছুকে বিনষ্ট করে দেয়’?[১৭]
হাজীর সম্মানে পাথর, বৃক্ষরাজি, মাটি সবকিছুই তার সাথে তালবিয়া পাঠ করে : সাহল ইবনু সা‘দ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন কোন মুসলিম তালবিয়া পাঠ করে তখন তার ডান ও বামে পাথর, বৃক্ষরাজি, মাটি সবকিছুই তার সাথে তালবিয়া পাঠ করে। এমনকি পৃথিবীর এ প্রান্ত হ’তে ঐ প্রান্ত পর্যন্ত (তালবিয়া পাঠকারীদের দ্বারা) পূর্ণ হয়ে যায়’।[১৮]
হজ্জ দরিদ্রতা ও গোনাহ সমূহ বিদূরিত করে : আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমরা হজ্জ ও ওমরাহর মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রাখো (অর্থাৎ সাথে সাথে কর)। কেননা এ দু’টি মুমিনের দরিদ্রতা ও গোনাহ সমূহ দূর করে দেয়, যেমন (কামারের আগুনের) হাপর লোহা, স্বর্ণ ও রৌপ্যের ময়লা দূর করে দেয়। আর কবুল হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ব্যতীত কিছুই নয়’।[১৯]
শ্রেষ্ঠ জিহাদ হজ্জ : উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি আপনাদের সঙ্গে যুদ্ধ ও জিহাদে অংশগ্রহণ করব না? তিনি বললেন, তোমাদের জন্য উত্তম ও উৎকৃষ্ট জিহাদ হ’ল হজ্জ, কবূল হজ্জ। আয়েশা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) হ’তে এ কথা শোনার পর আমি আর কখনো হজ্জ ছাড়ব না’।[২০] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, আয়েশা (রাঃ) একদা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! মহিলাদের উপরে ‘জিহাদ’ আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ আছে। তবে সেখানে যুদ্ধ নেই। সেটি হ’ল হজ্জ ও ওমরাহ’।[২১] অপর এক বর্ণনায় এসেছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন,جِهَادُ الْكَبِيْرِ وَالصَّغِيْرِ وَالضَّعِيْفِ وَالْمَرْأَةِ الْحَجُّ وَالْعُمْرَةُ ‘বড়, ছোট, দুর্বল ও মহিলা সকলের জন্য জিহাদ হ’ল হজ্জ ও ওমরাহ’।[২২] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, এক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! إِنِّي جَبَانٌ، وَإِنِّيْ ضَعِيفٌ، فَقَالَ: هَلُمَّ إِلَى جِهَادٍ لَا شَوْكَةَ فِيْهِ: الْحَجِّ ‘আমি তো ভীতু এবং দুর্বল (আর আমার উপর জিহাদ ফরয)। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, ছুটে এসো এমন এক জিহাদের দিকে যেখানে কোন কষ্ট নেই। আর তা হ’ল হজ্জ’।[২৩]
অন্যতম শ্রেষ্ঠ আমল হজ্জ : আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’ল, কোন আমলটি সর্বোত্তম? তিনি বললেন, ‘শ্রেষ্ঠ আমল হ’ল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরে ঈমান আনা। বলা হ’ল, তারপর কি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। জিজ্ঞেস করা হ’ল, তারপর কি? তিনি বললেন, কবুল হজ্জ’।[২৪] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ আমল হ’ল এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা। অতঃপর আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। অতঃপর কবুল হজ্জ। যা সকল আমলের উপর এমন মর্যাদাবান যেমন পূর্ব দিগন্ত ও পশ্চিম দিগন্তের মধ্যে দূরত্ব রয়েছে’।[২৫]
হাজীগণ আল্লাহর মেহমান : আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহর মেহমান হ’ল তিনটি দল- আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধকারী, হজ্জকারী ও ওমরাহ্কারী’।[২৬] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘হজ্জ ও ওমরাহ পালনকারীগণ আল্লাহর মেহমান। তারা দো‘আ করলে তিনি কবুল করেন। তারা ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি তাদের ক্ষমা করে দেন’।[২৭] অপর বর্ণনায় রয়েছে, ‘তারা কোন কিছু চাইলে তিনি তা দেন’।[২৮]
ফেরেশতাদের সামনে হাজীদের প্রশংসা : আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আরাফার দিন ব্যতীত অন্য কোন দিন আল্লাহ এত অধিক পরিমাণ লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করেন না। ঐদিন আল্লাহ নিকটবর্তী হন। অতঃপর আরাফাহ ময়দানের হাজীদের নিয়ে ফেরেশতাদের নিকট গর্ব করেন ও বলেন, দেখ ঐ লোকেরা কি চায়’?[২৯] অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘ওরা আল্লাহর মেহমান। আল্লাহ ওদের ডেকেছেন তাই ওরা এসেছে। এখন ওরা চাইবে আর আল্লাহ তা দিয়ে দিবেন’।[৩০] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ দো‘আ হ’ল আরাফাহ দিবসের দো‘আ’।[৩১]

হজ্জের নিয়তকারীগণ কোন কারণে হজ্জ করতে সক্ষম না হ’লেও নেকী পাবে :
আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ্জ, ওমরাহ কিংবা জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হ’ল এবং রাস্তায় মৃত্যুবরণ করল, আল্লাহ তার জন্য পূর্ণ নেকী লিখে দিবেন’।[৩২]
হজ্জে মৃত্যুবরণকারীগণ ক্বিয়ামতের দিন তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উঠবে : ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘এক ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর সঙ্গে আরাফাতে অবস্থান কালে অকস্মাৎ সে তার সওয়ারী হ’তে পড়ে যান। এতে তাঁর ঘাড় মটকে গেল অথবা রাবী বলেন, ঘাড় মটকে দিল। (যাতে তিনি মারা গেলেন)। তখন আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বললেন, তাঁকে বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও এবং দু’কাপড়ে তাঁকে কাফন দাও; তাঁকে সুগন্ধি লাগাবে না এবং তার মস্তক আবৃত করবে না। কেননা আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামতের দিন তাঁকে তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উত্থিত করবেন’।[৩৩]
হাজীদের প্রতিটি পদচারণায় নেকী অর্জিত হয় ও গুনাহ বিদূরীত হয় : ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহর সাতটি ত্বাওয়াফ করবে, এই সময় প্রতি পদক্ষেপে আল্লাহ তার জন্য একটি করে নেকী লিখেন এবং একটি গুনাহ বিদূরীত করেন এবং একগুণ মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।[৩৪]
হজ্জের প্রতিটি বিধান সম্পাদনের জন্য পৃথক মর্যাদা ও নেকী: ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে মিনার মসজিদে বসা ছিলাম। এমন সময় একজন আনছার ও ছাক্বীফ গোত্রের একজন লোক এসে সালাম দিল। অতঃপর বিভিন্ন প্রশ্ন করল… তাদের জওয়াবে রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি যখন বায়তুল হারাম তাওয়াফের উদ্দেশ্যে বের হও, তোমার এবং তোমার উটের প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহ তার জন্য একটি করে নেকী লিখেন এবং তোমার থেকে একটি গুনাহ মিটিয়ে দেন। তওয়াফের পর তোমার দু’রাক‘আত ছালাত আদায় বানী ইসমাঈল গোত্রের একটি গোলাম আযাদ করার সমতুল্য। এরপর ছাফা-মারওয়ায় সাঈ করা সত্তরটি গোলাম মুক্ত করার সমতুল্য। তোমার সন্ধ্যায় আরাফায় অবস্থান করা- এই দিন আল্লাহ তা‘আলা প্রথম আকাশে নেমে আসেন এবং ফেরেশতাদের সামনে গর্ব করে বলেন, আমার বান্দারা দূর-দূরান্ত হ’তে এলোমেলো হয়ে আমার নিকট এসেছে। তারা আমার রহমতের প্রত্যাশা করে। যদি তোমাদের গুনাহ বালির পরিমাণ বা বৃষ্টির ফোঁটা বা সমুদ্রের ফেনার পরিমাণও হয় তবুও আমি তা ক্ষমা করে দিব। হে আমার বান্দারা! তোমরা কল্যাণের দিকে ধাবিত হও, তোমাদের জন্য ক্ষমা রয়েছে। তাদের জন্যও ক্ষমা রয়েছে যাদের জন্য তোমরা সুফারিশ করবে। আর তোমার প্রতিটি নিক্ষিপ্ত কংকর যা তুমি নিক্ষেপ কর তা ধ্বংসাত্মক আমলের জন্য কাফফারা স্বরূপ। আর তোমার কুরবানীটি আল্লাহর নিকট তোমার জন্য ভান্ডার। আর তোমার মাথা মুন্ডন যার প্রতিটি চুলের বিনিময়ে তোমার জন্য রয়েছে একটি নেকী এবং এর মাধ্যমে তোমার একটি গুনাহ বিদূরীত হবে। আর তোমার বায়তুল্লাহর বিদায়ী তওয়াফ যেটি তুমি করবে, এতে তোমার কোন গুনাহ থাকবে না। ফেরেশতা এসে তোমার কাঁধে হাত রেখে বলবে, ভবিষ্যতের জন্য তুমি আমল করতে থাক, কারণ তোমার অতীতের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে’।[৩৫]

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, আল্লাহ আরাফার ময়দানে ফেরেশতাদের বলবেন, আমার বান্দারা কি উদ্দেশ্যে এসেছে? তারা বলে, তারা আপনার সন্তুষ্টি ও জান্নাত লাভের প্রত্যাশা করে। তখন আল্লাহ বলেন, আমার নিজের ও সৃষ্টি জগতের কসম করে বলছি, যুগের পর যুগ, বৃষ্টির ফোটা এবং বালির পরিমাণ অসংখ্য বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম। আর তোমার কংকর নিক্ষেপের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, অতঃপর কোন ব্যক্তি জানে না তাদের জন্য চোখ জুড়ানো কি জিনিস লুকিয়ে রাখা হয়েছে, তারা যা করত, তার বিনিময় স্বরূপ’ (সাজদাহ ৩২/১৭)। আর তোমার মাথা মুন্ডন- তোমার যে চুলটি মাটিতে নিক্ষিপ্ত হয় সেটি ক্বিয়ামতের দিন তোমার জন্য আলোকবর্তিকায় পরিণত হবে। আর তোমার কা‘বার বিদায়ী তওয়াফে তুমি গুনাহ থেকে এমনভাবে মুক্ত হবে যেমন তোমার মা তোমাকে গুনাহ মুক্ত অবস্থায় জন্ম দিয়েছে’।[৩৬]
বায়তুল্লাহ তাওয়াফের ফযীলত :আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করবে ও শেষে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করবে, সে যেন একটি গোলাম আযাদ করল’।[৩৭] তিনি বলেন, ‘তাওয়াফ হ’ল ছালাতের ন্যায়। তবে এই সময় প্রয়োজনে যৎসামান্য নেকীর কথা বলা যাবে’।[৩৮]
হাজারে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানী স্পর্শ করার ফযীলত : ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রুক্নে ইয়ামানী ও হাজারে আসওয়াদ (কালো পাথর) স্পর্শ করবে, এ দু’টি তার সমস্ত গোনাহ ঝরিয়ে দিবে’।[৩৯] তিনি হাজারে আসওয়াদের ব্যাপারে আরো বলেন, ‘আল্লাহ ক্বিয়ামতের দিন হাজারে আসওয়াদকে উঠাবেন এমন অবস্থায় যে, তার দু’টি চোখ থাকবে, যা দিয়ে সে দেখবে ও একটি যবান থাকবে, যা দিয়ে সে কথা বলবে এবং ঐ ব্যক্তির জন্য সাক্ষ্য দিবে, যে ব্যক্তি খালেছ অন্তরে তাকে স্পর্শ করেছে’।[৪০] রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, ‘হাজারে আসওয়াদ’ প্রথমে দুধের চেয়েও সাদা অবস্থায় জান্নাত থেকে অবতীর্ণ হয়। অতঃপর বনু আদমের পাপ সমূহ তাকে কালো করে দেয়’।[৪১]
রুকনে ইয়ামানী ও মাকামে ইবরাহীম সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘রুক্নে ইয়ামানী ও মাকামে ইবরাহীম দু’টি জান্নাতী ইয়াকূত পাথর। আল্লাহ এ দু’টির আলোকে নির্বাপিত করেছেন। যদি তিনি নির্বাপিত না করতেন তাহ’লে এ দু’টির মাধ্যমে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যবর্তী স্থান (পৃথিবী) আলোকিত হয়ে যেত’।[৪২]
অন্যত্র রয়েছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘রুক্নে ইয়ামানী ও মাকামে ইবরাহীম দু’টি জান্নাতের ইয়াকূত পাথর। যদি আদম সন্তানের গুনাহ এ দু’টিকে স্পর্শ না করত, তাহ’লে এ দু’টির মাধ্যমে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যবর্তী স্থান (পৃথিবী) আলোকিত হয়ে যেত। আর যদি কোন দৈহিক বা মানসিক রোগী এ দু’টিকে স্পর্শ করে তাহ’লে তাকে সুস্থতা দান করা হবে’।[৪৩]

উল্লেখ্য, পাথরের নিজস্ব কোন ক্ষমতা নেই। আমরা কেবলমাত্র রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতের উপর আমল করব। যেমন ওমর ফারূক (রাঃ) উক্ত পাথরে চুমু দেওয়ার সময় বলেছিলেন, ‘আমি জানি যে, তুমি একটি পাথর মাত্র। তুমি কোন উপকার বা ক্ষতি করতে পারো না। তবে আমি যদি আল্লাহর রাসূলকে না দেখতাম তোমাকে চুমু দিতে, তাহ’লে আমি তোমাকে চুমু দিতাম না’।[৪৪] ওমর ফারূক (রাঃ) উক্ত পাথরে চুমু খেয়েছেন ও কেঁদেছেন’।[৪৫]
যমযমের পানি পান করার ফযীলত : ত্বাওয়াফ শেষে দু’রাক‘আত ছালাতান্তে মাত্বাফ থেকে বেরিয়ে পাশেই যমযম কুয়া। সেখানে গিয়ে যমযমের পানি বিসমিল্লাহ বলে দাঁড়িয়ে পান করবে ও কিছুটা মাথায় দিবে।[৪৬] যমযমের পানি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘ভূপৃষ্ঠে সেরা পানি হ’ল যমযমের পানি। এর মধ্যে রয়েছে পুষ্টিকর খাদ্য এবং রোগ মুক্তি’।[৪৭] অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘এটি বরকত মন্ডিত’।[৪৮] রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, ‘এই পানি কোন রোগ থেকে আরোগ্যের উদ্দেশ্যে পান করলে তোমাকে আল্লাহ আরোগ্য দান করবেন। এটি পানের মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করলে আল্লাহ তোমাকে আশ্রয় দিবেন। আর তুমি এটা পরিতৃপ্তি বা পিপাসা মিটানোর জন্য পান করলে আল্লাহ সেটিই করবেন’।[৪৯] রাসূল (ছাঃ) যমযমের পানি বহন করে নিয়ে যেতেন। অতঃপর রোগীদের মাথায় ঢালতেন এবং তাদের পান করাতেন।[৫০] বস্ত্ততঃ যমযম হ’ল আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহে সৃষ্ট এক অলৌকিক কুয়া। যা শিশু ইসমাঈল ও তাঁর মা হাজেরার জীবন রক্ষার্থে এবং পরবর্তীতে মক্কার আবাদ ও শেষনবী (ছাঃ)-এর আগমন স্থল হিসাবে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে সৃষ্ট হয়েছিল।
বায়তুল্লায় ছালাত আদায়ের ফযীলত : জাবের (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘অন্যত্র ছালাত আদায়ের চেয়ে আমার মসজিদে (মসজিদে নববীতে) ছালাত আদায় করা এক হাযার গুণ উত্তম এবং মসজিদুল হারামে ছালাত আদায় করা অন্য মসজিদে ছালাত অপেক্ষা এক লক্ষ গুণ উত্তম’।[৫১]
উপসংহার : হজ্জ একটি ইবাদত, যা আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও বিশেষ মর্যাদা লাভ করা যায়। তাই প্রত্যেকের হজ্জ পালন করা উচিত। আয়েশা (রাঃ) হজ্জের বিধান জানার পর কখনো হজ্জ ত্যাগ করেননি। হজ্জের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকে এর কার্যাবলী সম্পাদন করে বাড়ি ফিরা পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপে পৃথক পৃথক ফযীলত ও মর্যাদা রয়েছে। রাসূল (ছাঃ) আয়েশা (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বলেন, ‘তোমার কষ্ট ও খরচের পরিমাণের উপর তোমার ছওয়াব প্রাপ্তি নির্ভর করবে’।[৫২] সুতরাং আমাদের উচিত হজ্জ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে এই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতটি সম্পন্ন করা। আল্লাহ আমাদের সকলকে এর গুরুত্ব ও ফযীলত বুঝে তদানুযায়ী আমল করার তাওফীক দান করুন- আমীন!
তথ্য সূত্র: [১]. তাফসীরে ইবনু কাছীর ২/৮১, অত্র আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য। [২]. তাফসীরে ইবনু কাছীর ১/৫৩০-৫৩১, অত্র আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য। [৩]. বুখারী হা/৮; মুসলিম হা/১৬; মিশকাত হা/৪। [৪]. মুসলিম হা/১৩৩৭; মিশকাত হা/২৫০৫; ইরওয়া হা/৯৮০। [৫]. আবুদাউদ হা/১৭২১; ইবনু মাজাহ হা/২৮৮৬;আহমাদ হা/২৬৪২; দারেমী হা/১৭৮৮, সনদ ছহীহ। [৬]. বুখারী হা/১৫৯৩; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৩৬৮। [৭]. বুখারী হা/১৫৯৩; ইবনু হিববান হা/৬৭৫০; ছহীহাহ হা/২৪৩০। [৮]. ইবনু মাজাহ হা/২৮৮৩; আবুদাউদ হা/১৭৩২; ছহীহুল জামে‘ হা/৬০০৪। [৯]. আহমাদ হা/২৮৬৯; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১১১; ইরওয়া হা/৯৯০। [১০]. বায়হাকী, সুনানুল কুবরা হা/৮৪৪৪; ইবনু আবী শায়বাহ হা/১৪৬৭০; আবু নাঈম, হিলয়াতুল আওলিয়া ৯/২৫২, সনদ ছহীহ। [১১]. শায়খ বিন বায, ফাতাওয়া নূরুন আলাদ-দারব ১৭/৮। [১২]. বুখারী হা/১৫২১; মুসলিম হা/১৩৫০; মিশকাত হা/২৫০৭।
[১৩]. ইবনু হাজার, ফাতহুলবারী ৩/৩৮২। [১৪]. বুখারী হা/১৭৭৩; মুসলিম হা/১৩৪৯; মিশকাত হা/২৫০৮। [১৫]. ফৎহুল বারী ৩/৪৪৬; হা/১৫১৯-এর ব্যাখ্যা। [১৬]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৬৫৯; শারহুন নববী আলা মুসলিম ৯/১১৯, ১৩৪৯ হাদীছের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য। [১৭]. মুসলিম হা/১২১; ইবনু হিববান হা/২৫১৫; মিশকাত হা/২৮। [১৮]. তিরমিযী হা/৮২৮; মিশকাত হা/২৫৫০; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৭৭০। [১৯]. তিরমিযী হা/৮১০; নাসাঈ হা/২৬৩০; মিশকাত হা/২৫২৪; ছহীহাহ হা/১২০০; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১০৫। [২০]. বুখারী হা/১৮৬১; আহমাদ হা/২৫৫৮৪১; মিশকাত হা/২৫৩৪।
[২১]. ইবনু মাজাহ হা/২৯০১; মিশকাত হা/২৫৩৪; ইরওয়া হা/৯৮১;ছহীহ আত-তারগীব হা/১০৯৯।
[২২]. নাসাঈ হা/২৬২৬; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১০০। [২৩]. মু‘জামুল কাবীর হা/২৯১০, আওসাত্ব হা/৪২৮৭; ছহীহুল জামে‘ হা/৭০৪৪; ছহীহ আত-তারগীব হা/১০৯৮। [২৪]. বুখারী হা/১৫১৯; মুসলিম হা/৮৩; মিশকাত হা/২৫০৬। [২৫]. আহমাদ হা/১৯০৩২; মু‘জামুল কাবীর হা/৮০৯; ছহীহুল জামে‘ হা/১০৯১; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১০৩। [২৬]. নাসাঈ হা/২৬২৫; ছহীহুল জামে‘ হা/৭১১২; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১০৯; মিশকাত হা/২৫৩৭। [২৭]. ইবনু মাজাহ হা/২৮৯২; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১০৯; মিশকাত হা/২৫৩৬। [২৮]. ইবনু মাজাহ হা/২৮৯৩; ছহীহাহ হা/১৮২০; ছহীহুল জামে‘ হা/৪১৭১; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১০৭। [২৯]. মুসলিম হা/১৩৪৮; মিশকাত হা/২৫৯৪; ছহীহাহ হা/২৫৫১। [৩০]. ইবনু মাজাহ হা/২৮৯৩; ছহীহাহ হা/১৮২০। [৩১]. তিরমিযী হা/৩৫৮৫; মিশকাত হা/২৫৯৮; ছহীহ আত-তারগীব হা/১৫৩৬; ছাহীহাহ হা/১৫০৩। [৩২]. বায়হাকী, শু‘আবুল ঈমান হা/৪১০০; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১১৪; ছহীহাহ হা/২৫৫৩ ; মিশকাত হা/২৫৩৯। [৩৩]. বুখারী হা/১২৬৬; মুসলিম হা/১২০৬; মিশকাত হা/১৬৩৭। [৩৪]. ইবনু হিববান হা/৩৬৯৭; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১৪৩; মিশকাত হা/২৫২৮। [৩৫]. মু‘জামুল আওসাত্ব হা/২৩২০; বাযযার হা/৬১৭৭; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১১২; মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/৫৬৪৮, সনদ হাসান। [৩৬]. মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/৫৬৫১; মু‘জামুল আওসাত্ব হা/২৩২০; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১১৩। [৩৭]. ইবনু মাজাহ হা/২৯৫৬; ছহীহাহ হা/২৭২৫; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৩৭৯; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১৪২। [৩৮].তিরমিযী হা/৯৬০; মিশকাত হা/২৫৭৬; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১৪১। [৩৯]. মু‘জামুল কাবীর হা/১৩৪৩৮; ছহীহুল জামে‘ হা/২১৯৪। [৪০]. তিরমিযী হা/৯৬১; ইবনু মাজাহ হা/২৯৪৪; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১৪৪; মিশকাত হা/২৫৭৮। [৪১]. তিরমিযী হা/৮৭৭; মিশকাত হা/২৫৭৭; ছহীহাহ হা/২৬১৮; ছহীহুল জামে‘ হা/৪৪৪৯; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১৪৬। [৪২]. তিরমিযী হা/৮৭৮; ছহীহুল জামে‘ হা/১৬৩৩; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১৪৭। [৪৩]. বায়হাকী, সুনানুল কুবরা হা/১২৮৭,৯০১১; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১৪৭। [৪৪]. বুখারী হা/১৫৯৭; মুসলিম হা/১২৭০; মিশকাত হা/২৫৮৯।
[৪৫]. বায়হাক্বী ৫/৭৪ পৃঃ, সনদ জাইয়িদ। [৪৬]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৪২৬৮। [৪৭]. ত্বাবারাণী, মু‘জামুল আওসাত্ব হা/৩৯১২; ছহীহাহ হা/১০৫৬; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৩২২। [৪৮]. মুসলিম হা/২৪৭৩; আহমাদ হা/২৪৫৬৫; ছহীহাহ হা/১০৫৬। [৪৯]. দারাকুৎনী হা/২৭৭২; হাকেম হা/১৭৩৯; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১৬৪। [৫০]. ছহীহাহ হা/৮৮৩; ছহীহুল জামে‘ হা/৪৯৩১। [৫১]. তিরমিযী হা/৩৯১৬; আহমাদ হা/১৪৭৩৫; ইবনু মাজাহ হা/১৪০৪; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৮৩৮; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১৭৩। [৫২]. দারাকুৎনী হা/২৭৬২; ছহীহ আত-তারগীব হা/১১৪৬।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com