কমতে শুরু করেছে কাঁচা মরিচের ঝাল। এবার সব রেকর্ড ভেঙে ঝিনাইদহে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে এক হাজার শনিবার (০১ জুলাই) ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা শহরের বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম। অথচ শনিবারের থেকে কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমেছে তবুও ৪৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ঢাকায়। যা ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে প্রতিকেজি আলুতে ৫ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রোববার (২ জুলাই) নগরীর আগারগাঁও ও বিএনপি বাজারসহ কয়েকটি কাঁচা বাজার ঘুরে এমন তথ পাওয়া গেছে। তবে গতকালের থেকে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচের দাম ১২০ টাকা কমেছে। বিএনপি বাজারে সবজি বিক্রেতা বাচ্চু শিকদার বলেন, শনিবার কাঁচা মরিচ ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। তবে আজকে ৪৮০ টাকা। পাইকারি বাজারে কমছে। আলু ও বেগুনের দাম বাড়তি। আগারগাঁও কাঁচা বাজারে প্রতিটি লাউ ৪০, ফুলকপি ৪০ ও বাঁধাকপি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গতকালও একই দামে বেচাকেনা হয়েছিল। কুমড়ার জালি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সবজির বাজার কিছুটা স্থিতিশীল। বিভিন্ন সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, টমেটো দেশি প্রতিকেজি ১৫০, ভারতীয় টমেটো ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিকেজি পটল ৪০, বেগুন ১০০ থেকে ১১০, ঢেঁড়স ৬০, ঝিঙা ৬০, চিচিঙ্গা ৬০, পেঁপে ৬০, লাউ ৬০, মুলা ৬০, কচুর মুখী ১০০, শসা ৫০ থেকে ৬০, দেশি গাজর ৮০ ও চায়না গাজর ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আগারগাঁও এলাকার সবজি বিক্রতা জুয়েল মোল্লা বলেন, কাঁচা মরিচের দাম কিছু কমতি। সবজির দাম একই আছে। তবে হঠাৎ করেই আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়তি।
এদিকে, পাবনার বেড়া পৌর এলাকার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন রতন আচার্য। সাধারণত প্রতি শুক্রবার তিনি সপ্তাহের বাজার করেন। এ জন্য আজও শুক্রবার হওয়ায় তিনি কাঁচাবাজারসহ নিত্যপণ্য কিনতে সকালে বেড়া বাজারে আসেন। কিন্তু যখন এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচা মরিচ কিনতে গেলেন, তখন দাম শুনেই হতভম্ব হয়ে পড়েন তিনি। কারণ, তাঁর কাছে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম চাওয়া হয় ৬০০ টাকা। তাই বাধ্য হয়ে এক পোয়ার পরিবর্তে ৩০ টাকায় ৫০ গ্রাম মরিচ কেনেন। মরিচ কেনার পর রতন আচার্য কৌতুহলবশত গুনে দেখেন, মাঝারি আকারের ২১টি কাঁচা মরিচ পেয়েছেন। তার মানে প্রতিটি মরিচের দাম পড়েছে ১ টাকা ৪৩ পয়সা, মানে প্রায় দেড় টাকা।
রতন আচার্য বলেন, ‘বাজারে প্রতিটি জিনিসেরই দাম বেশি। এর মধ্যে কাঁচা মরিচের দাম হিসাব করলে একেকটার দাম পড়েছে প্রায় দেড় টাকা। এ অবস্থায় মরিচ খাওয়া বাদ দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখতেছি না।’ বেড়া বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মো. সেরাই বলেন, ‘ঈদের আগের দিনও ৪০০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বেচছি। আর আজকেই হয়া গেল ৬০০ টাকা। আজ সকালে পাইকারি হাটের থিক্যা ৫৫০ টাকা কেজি দরে মরিচ কিন্যা আনছি। কৃষকেরা হাটে খুব কম মরিচ আনতেছে। এই জন্য দাম এত বেশি। ৫০ গ্রাম মরিচ মাপলে গুনতিতে ২০ থেকে ২১টা হতেছে।’
পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলায় সপ্তাহ দুয়েক ধরে কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতি কেজির দাম বেড়ে ৬০০ টাকায় উঠে গেছে। দুই উপজেলার কাঁচামাল ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতারা জানান, এর আগে কখনোই এত দামে কাঁচা মরিচ বিক্রি হতে দেখেননি তাঁরা। এ দুই উপজেলা অন্যতম উৎপাদন এলাকা হওয়া সত্ত্বেও অতিরিক্ত দামে কাঁচা মরিচ বিক্রি হওয়ার জন্য কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ফলন বিপর্যয়কে দায়ী করেছেন। সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলা কাঁচা মরিচ উৎপাদনের এলাকা হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে সাঁথিয়া উপজেলায় এবার ২ হাজার ৯৪ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। কৃষক ও উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুই উপজেলায় মরিচের আবাদ শুরু হয় ফেব্রুয়ারির শেষ দিক থেকে। পুরো জুলাই মাসে খেত থেকে মরিচ পাওয়া যায়। এরপর বৃষ্টি ও বর্ষায় মরিচগাছগুলো মরে যেতে থাকে। কিন্তু এবার প্রথমে এপ্রিল ও মে মাসে খরা দেখা দেয় এবং সম্প্রতি অতিবৃষ্টি শুরু হয়। যে কারণে বেশির ভাগ মরিচগাছের মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে জন্য অধিকাংশ গাছেই মরিচের ফলন নেই বললেই চলে।
বেড়া পৌর এলাকার বড়শিলা গ্রামের মরিচচাষি সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করছিল্যাম। কিন্তু প্রচ- খরায় বেশির ভাগ গাছ নষ্ট হয়া গেছে। গাছগুল্যা কুনুরকমে টিক্যা থাকলেও তাতে মরিচ খুব কম আসতেছে।’ সাঁথিয়া উপজেলার ঘুঘুদহ নতুনপাড়া গ্রামের মরিচচাষি রাজিবুল ইসলাম বলেন, ‘সোয়া বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করছি। শুরুতে মরিচের ভালো ফলন হলেও পরে খরা আর প্রচ- গরমে মরিচগাছগুলো কুঁকড়ায়া যায়। এতে ফুল আসাই বন্ধ হয়া যায়। গত ২০ দিন ধইর্যা জমির থ্যা কুনু মরিচ তুলব্যার পারি না। তবে গাছে আবারও ফুল আসা শুরু হইছে। আশা করতেছি শিগগিরই আমাগরে এলাকায় মরিচের অভাব দূর হবি।’
সাঁথিয়া উপজেলার করমজা চতুর হাটের কাঁচা মরিচের আড়তদার বেংকু মিয়া বলেন, ‘আমাগরে এই হাটে স্বাভাবিক অবস্থায় দৈনিক তিন-চার শ মণ কাঁচা মরিচ ওঠে। অথচ আজ ১৫ মণের মতো মরিচ উঠিছে। জমিতে ফলন না থাকায় মরিচ কম উঠতেছে। আজ হাটে পাইকারিতেই ৫২০ থেকে ৫৩০ টাকা কেজি দরে মরিচ বিক্রি হইছে।’ সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা যথাক্রমে সঞ্জীব কুমার গোস্বামী ও নুসরাত কবীর আলাদা আলাপে প্রথম আলোকে বলেন, খরার কারণে এবার মরিচের উৎপাদন কম হয়েছে। তবে গাছে এখন ফুল আসছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শিগগিরই ফলন বেশ বাড়বে। আরও এক থেকে দেড় মাস পর্যন্ত এ এলাকায় মরিচ পাওয়া যাবে।
কমছেই না কাঁচা মরিচের ঝাল। এবার সব রেকর্ড ভেঙে ঝিনাইদহে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে এক হাজার শনিবার (০১ জুলাই) ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা শহরের বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম। দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। এবার সব রেকর্ড ভেঙে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হয়েছে এক হাজার টাকায়। স্থানীয় সংবাদকর্মী চ ল মাহমুদ জানান, শনিবার শৈলকুপার হাটে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি মরিচ ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই মরিচ খুচরা পর্যায়ে ১ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। তবে হাজার টাকায় মরিচ বিক্রির সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে দুপুরের পর মরিচের দাম কমে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শৈলকুপা ছাড়াও জেলা শহরের নতুন হাটখোলা, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুরে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজিতে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে মরিচের এই আকাশছোয়া দামে বিপাকে পড়েছেন নি¤œ আয়ের মানুষ।
আশাদুল ইসলাম নামের একজন বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, সারাদিন যে টাকা আয় করি তার মধ্যে বাজারে গিয়ে ১ হাজার টাকা দামে কাঁচা মরিচ কিনতে গেলে অন্য বাজার করা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মরিচের দাম হাজার টাকা; এটা অবাস্তব মনে হচ্ছে। কিন্তু উপায় নেই। খেতে হলে তো কিনতেই হবে।
আব্দুর রশিদ নামের এক দিনমজুর বলেন,আমরা দিনে আয়ই কত করি! ৮০০ বা ১ হাজার টাকায় যদি মরিচ কিনতে হয়; তাহলে তো অন্য কিছু কেনা সম্ভব না। এখানে সিন্ডিকেট কাজ করছে।
শৈলকুপা হাটের ব্যবসায়ী সোলাইমান হোসেন বলেন, বেশি দামে মরিচ কেনায়, বেশি দামে বিক্রি করছি। আমাদের কিছু করার নেই। বাজারে মরিচের পরিমাণ খুবই কম। যা পাওয়া যাচ্ছে; তার দামও বেশি। আর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আজগর আলী বলেন, চলতি মৌসুমে জেলার ৬ উপজেলায় ১ হাজার ৭২৪ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। তবে বর্ষা মৌসুম হওয়ার ফলে আধিকাংশ জমির মরিচের গাছ নষ্ট ও ধরণ কমে যাওয়ার ফলে দাম বেশি। এদিকে মরিচের ঊর্ধ্বমুখী বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার ২৫ জুন থেকে মরিচ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। তবু কমছে না মরিচের দাম। এরমধ্যে দুইদিন আমদানির পর ঈদের কারণে আপাতত বন্ধ রয়েছে মরিচ আমদানি।
বাগেরহাটে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মরিচের দাম। কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়।
নিত্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙার চেষ্টা চলছে: নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির পিছনে জড়িত সিন্ডিকেট ভাঙার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি।
মরিচের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়া নিয়ে যা বলছেন কৃষকরা: কাঁচা মরিচের দাম নিয়ে কয়েকদিন ধরেই জনমনে অস্বস্তি চলছে। গত দুই দিন ধরে সেই অস্বস্তি অনেকটা অসন্তুষ্টিতে পরিণত হয়েছে। রবিবার (১ জুলাই) কুড়িগ্রামের বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০০-৫২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ভরা মৌসুমে কেন এত দাম? জেলার মরিচের ক্ষেত ঘুরে, চাষিদের সঙ্গে কথা বলে এর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন এই প্রতিবেদক। গতকাল রবিবার বিকালে কুড়িগ্রাম সদরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের খালিশা কালোয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রায় ১০ একর জায়গা জুড়ে মরিচের ক্ষেত। কয়েকটি জমি থেকে কৃষকরা মরিচ সংগ্রহ করে তা আগত পাইকারের কাছে বিক্রি করছেন। কৃষক ও পাইকারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমের এই সময়ে ক্ষেতে যে পরিমাণ মরিচের ফলন হওয়ার কথা কৃষকরা সেই পরিমাণ ফলন পাচ্ছেন না। উৎপাদন কম হওয়ায় এবং চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে। এ ছাড়াও আমদানি না হওয়ার দাম বাড়ার কারণ বলছেন কৃষকরা। জমি থেকে ফসল উত্তোলন করে ক্ষেতেই প্রতি মণ মরিচ ১৫-১৬ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন কুড়িগ্রামের কৃষকরা।
কৃষক মুনতাসির রহমান বলেন, ‘আমি ৬০ শতাংশ জমিতে মরিচ আবাদ করেছি। গত কয়েকদিন আগের টানা খরার কারণে মরিচের গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, পাতা কুকড়ে গিয়েছিল। যে পরিমাণ জোয়ার (ফুল) আসার কথা তা আসেনি। ফলে এই সময়ে যে পরিমাণ ফলন হওয়ার কথা তা হয়নি। উৎপাদন কম হওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’ ‘আমি আজ মাত্র দেড়-দুই মণ মরিচ তুলতে পেরেছি। অথচ আমার এই ৬০ শতক জমি থেকে অন্তত ৬-৭ মণ মরিচ পাওয়ার কথা। এখন বৃষ্টি পেয়ে গাছ সতেজ হয়েছে, জোয়ারও এসেছে। কয়েকদিন পর ফলন বেড়ে যাবে। তখন দামও কমে যাবে।’ যোগ করেন এই কৃষক।
মরিচের উৎপাদন নিয়ে একই কথা জানান কৃষক নরেশ চন্দ্র ও নিজাম উদ্দিন। তারা বলেন, ‘কয়েকদিন আগের খরার কারণে গাছে তেমন ফুল ছিল না। বর্তমানে ক্ষেতে মরিচ কম। বাইরে থেকে মরিচ আমদানি নেই। উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা বাড়ায় দাম বেশি।’
দাম কমার সম্ভাব্য সময় জানতে চাইলে এই কৃষকরা বলেন, ‘বৃষ্টির পানি পাওয়ার পর গাছ সতেজ হইছে। প্রচুর পরিমাণে জোয়ারও আসতেছে।এই ফলনটা ওঠা শুরু করলে দাম কমে যাবে। সেটাও ১০-১৫ দিন সময় লাগবে। আর এর মধ্যে মরিচ আমদানি হলে আগেই কমে যাবে। আবার অতিবৃষ্টিতে গাছ ও ফসল নষ্ট হলে দাম পতন হবে না বরং আরও বাড়তে পারে।’
কৃষক নরেশ চন্দ্র বলেন, ‘ জমির মধ্যে মরিচের ধরতি (ফলন) নাই। গাছে ফল নাই। অতিরিক্ত খরার কারণে ফলন হয় নাই। এখন বৃষ্টির কারণে গাছ ভালো হইছে, জোয়ার আসছে। এই ফল পাওয়া গেইলে তখন দাম কমতে পারে।’
আরেক কৃষক আবু সায়েম বলেন, ‘আজ (রবিবার) এই মাঠ থেকে মাত্র ১০-১২ মণ মরিচ ওঠানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এই সময় এই মাঠে অন্তত ৫০-৬০ মণ মরিচ পাওয়ার কথা। কয়েকদিন আগের টানা গরম আর খরায় প্রত্যাশিত ফলন পাওয়া যাচ্ছে না। এখন বৃষ্টি হওয়ার কারণে গাছে জোয়ার আসছে। তবে অতিবৃষ্টি হলে আবারও গাছের ক্ষতি হতে পারে। তখন আবার দাম কমার সম্ভাবনা কম থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ ক্ষেত থেকে প্রতি মণ মরিচ ১৫-১৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাইকাররা এগুলো জেলার বাইরে পাঠাবেন। ঘাটতি ও পরিবহন খরচ মিলে তারা যে দামে বিক্রি করবেন তাতে প্রতি কেজি ৭০০-৮০০ টাকা পড়ে যাবে।’
লালমনিরহাট থেকে মরিচ কিনতে আসা পাইকার আপেল বলেন, ‘আমরা প্রতি মণ মরিচ ১৫-১৬ হাজার টাকা কিনলাম। এই মরিচ জেলার বাইরে পাঠাবো। ক্ষেতে বেশি দামে কিনলে আমরা তো কম দামে বেচতে পারবো না!’ কুড়িগ্রাম শহরের পৌর বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রবিবার প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০০-৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, কয়েকদিনের মধ্যে মরিচ আমদানি না হলে এই দাম আরও বেড়ে যাবে। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, ‘খরায় যেমন ফুল কম এসেছিল তেমনি এখন বৃষ্টিতে গাছে ফুল আসছে। অতিবৃষ্টিতে এই ফুল আবারও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তবে এই সময়ে কাঁচা মরিচের এই দাম অস্বাভাবিক।’