সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৮ পূর্বাহ্ন

মার্টিনেজকে দেয়া গেল না একটা জার্সিও, উপেক্ষিত ফুটবলাররা

স্পোর্টস ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ৫ জুলাই, ২০২৩

বাংলাদেশের মানুষের ফুটবল উন্মাদনায় মুগ্ধ হয়ে এ দেশে এসেছিলেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। কারো আমন্ত্রণে নয়, নিজ উদ্যোগেই এসেছিলেন এদেশের মানুষের ফুটবল প্রেম, আবেগ-উন্মাদনা স্বচক্ষে দেখতে। তবে যা দেখতে এসেছিলেন, তা না দেখেই ফিরতে হলো তাকে। ফিরতে হলো তাকে একরাশ আক্ষেপ নিয়ে।
এই দেশের মানুষের ফুটবলের প্রতি ভালোবাসার জোয়ার আর দেখা হলো না তার। স্পনসর প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতায় সাধারণ জনতা ঘেঁষতে পারলেন না মার্টিনেজের কাছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত কিছু মুখ আর রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আবদার মেটাতে মেটাতেই সাড়ে ১০ ঘণ্টার বাংলাদেশ সফর শেষ হয়েছে এমিলিয়ানোর।
এই পর্যন্ত হয়ত মানা যায়। তবে একজন বিশ্বমানের ফুটবলারকে এ দেশে এনে ফুটবল থেকেই দূরে রেখেছে স্পনসর প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফ) কোনো কর্মকর্তা তো বটেই, বাফুফে সভাপতি ও দেশের সর্বকালের সেরা ফুটবলার সালাউদ্দিনকেও আমন্ত্রণ জানায়নি স্পনসর প্রতিষ্ঠানটি। তাছাড়া কোনো ফুটবলার কিংবা ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাউকেই দেখা যায়নি এমিলিয়ানোর সান্নিধ্যে। দেখা যায়নি দেশের বর্ষীয়ান ক্রিকেট সংগঠকদের কাউকে। তারচেয়েও বড় লজ্জার ঘটনা, দাঁড়িয়ে থেকেও বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবলারদের এমিলিয়ানোর দেখা না পাওয়া।
অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া একটু দেখা করার জন্য এমিলিয়ানোর গাড়ির কাছে অপেক্ষা করছিলেন, এমনকি সংবাদকর্মীরাও বারবার দায়িত্বশীলদের জামাল ভূঁইয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিলেন, তবে তাতেও মন গলেনি তাদের। এমিলিয়ানোর দেখা পাননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। অথচ বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক তিনি। তাকে তো আলাদা করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কথা ছিল মার্টিনেজের সাথে। একই অভিজ্ঞতা জাতীয় দলের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকুর। অথচ গোল্ডেন গ্লাভস জয়ী আর্জেন্টিনাইন এই গোল কিপার থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শই নিতে পারতেন জিকু।
এমনকি গণমাধ্যমের সাথেও কথা বলার সুযোগ দেয়া হলো না মার্টিনেজকে। সেই কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যার বৃষ্টিতে ভেজে প্রায় ১২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে সংবাদকর্মীদের প্রাপ্তি বাংলাদেশ ছাড়ার বেলায় মার্টিনেজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইন্সটাগ্রাম একটা আবেগঘন পোস্ট। ওই একটা পোস্ট থেকেই কিছু লেখার খোরাক পেয়েছেন তারা। বাকি সময়টা কেঁটেছে বলা যায় অপেক্ষা করেই। তবে ইন্সটাগ্রাম পোস্টে বাংলাদেশের আতিথিয়েতায় মুগ্ধ বলেই জানিয়েছেন মার্টিনেজ। তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে অসাধারণ একটা সফরে এসেছিলাম আমি। এ দেশের মানুষের যতœ, ভালোবাসা ও অতুলনীয় আতিথেয়তা আমার হৃদয় জয় করেছে। আমি নিকট ভবিষ্যতে এই সুন্দর দেশটিতে আবারো আসতে চাই। আমি এই দেশে আমার হৃদয়ের একটা অংশ রেখে যাচ্ছি। আমি বাংলাদেশের বাজপাখি হতে পেরে মুগ্ধ।’
মার্টিনেজ মুগ্ধ হলেও আক্ষেপটা থেকে গেল সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদের। নিজেদের ফুটবল প্রেম দেখানোর সুযোগই পেল না তারা। ফলে একটা ভুল ধারণা নিয়েই হয়ত আর্জেন্টিনা ফিরে যাবেন তিনি। গিয়ে হয়ত মেসি-মারিয়াদের গল্প শোনাবেন, ‘আমরা দূর থেকে অনেক সময় যা কিছু দেখি আর শুনি, সব সত্য নয়। বাংলাদেশ ফুটবলকে ভালোবাসে, তবে উন্মাদ প্রেমী নয়।’ অথচ আমরা ফুটবলের উন্মাদ প্রেমিক ছিলাম। কিন্তু এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে আমাদের ফুটবলারদের সাথে পরিচিত করানো তো দূরের কথা, জাতীয় দলের একটা জার্সিও উপহার দিতে পারলাম না আমরা তাকে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com