বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০২৩

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা আশ্রয় ক্যাম্পগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, মৌসুমি বৃষ্টিপাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। রোহিঙ্গারা বলছেন, ঘনবসতি এবং অপরিচ্ছন্নতার কারণে মশার উপদ্রব বেড়েছে। ইতোমধ্যে ক্যাম্পগুলো ডেঙ্গুর হট স্পট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ক্যাম্পে ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পাওয়া দুরূহ হয়ে পড়বে।
তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ডেঙ্গুর ছড়িয়ে পড়া কমাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ক্যাম্পে তৎপর রয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সাধারণত জুন-জুলাই মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকে এবং অক্টোবরে কমে আসে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক আগেই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে।
কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলতি বছরে এ পর্যন্ত এক হাজার ৫৪০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন তিন জন। কক্সবাজারের ৩৩টি ক্যাম্পের মধ্যে উখিয়ার চারটি ক্যাম্পে ডেঙ্গু আক্রান্তের হার বেশি। কারণ হিসেবে সিভিল সার্জন কার্যালয় বলছে, প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে, পুরনো খাল ও জলাশয়ের কারণে এসব ক্যাম্পে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জানুয়ারিতে ১৭১, ফেব্রুয়ারিতে ২৬১, মার্চে ৩৬৭, এপ্রিলে ২১১, মেতে ১৯৮ এবং জুনে ৩৩০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগের বছরে ক্যাম্পে ১৫ হাজার ৩৫২ রোহিঙ্গা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ফাহিম আহমেদ ফয়সাল বলেন, ‘শরণার্থী শিবিরগুলোতে ডেঙ্গু মোকাবিলায় এ পর্যন্ত সাড়ে তিন লাখ মশারি বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্যাম্পে ডেঙ্গু রোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ বিভিন্ন প্রচারণা চালানো হচ্ছে।’
সরেজমিন দেখা যায়, টেকনাফের জাদিমুড়া, শালবন ও লেদা রোহিঙ্গা শিবিরে অধিকাংশ ড্রেন থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এসব ড্রেনের পাশে বসে সময় কাটাতে দেখা গেছে রোহিঙ্গা শিশুদের। এ সময় শালবন ক্যাম্পে তিন জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে ড্রেন পরিষ্কার করতে দেখা গেছে।
কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘ক্যাম্পে এত ঘনবসতি যে এখানে ডেঙ্গু থেকে বাঁচার উপায় নেই বললেই চলে। জনসংখ্যা অনুযায়ী শিবিরগুলোতে পর্যাপ্ত টয়লেট নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিক দিয়েও ক্যাম্পগুলো অনেক পিছিয়ে।’
জানতে চাইলে কক্সবাজারের ক্যাম্পের একটি সংস্থার ওয়াশ সেক্টর সমন্বয়কারী মোস্তফা সাদেক বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে আশ্রয় শিবিরের ড্রেন, আবর্জনা ফেলার ডোবা এবং স্থির জলের পয়েন্টগুলো পরিষ্কার রাখা হচ্ছে।’ টেকনাফের শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. কালাম বলেন, ‘ড্রেন অপরিষ্কার থাকায় ক্যাম্পে আগের তুলনায় মশা বেড়েছে। অন্যদিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। কারণ তারা ড্রেনের পাশে বসে খেলাধুলা করে সময় কাটায়।’
একই ক্যাম্পে বসবাস করেন নুর নাহার। তিনি বলেন, ‘আমার ঘরে ছয়টি শিশু আছে। তাদের মধ্যে দুজনের কাল থেকে প্রচ- জ্বর। প্রাথমিক চিকিৎসার পরও অবস্থার উন্নতি হয়নি। ধারণা করছি, হয়তো তারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। গত বছর আমার পরিবারের দুই সদস্য ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল।
এদিকে, গত তিন সপ্তাহে সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। চলতি বছরের জুন মাসের শুরুর দিকে (৯ জুন পর্যন্ত) দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৮৬৫ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ২১ জন। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী সোমবার আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁডিয়েছে ৯ হাজার ১৯৩ জনে এবং মৃতের সংখ্যা ৫৬। উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে রোহিঙ্গাদের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয় না।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com