বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘এই জমিন আল্লাহর, আইনও চলবে আল্লাহর।’ গতকাল শুক্রবার (৭ জুলাই) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা জেলা দক্ষিণ আয়োজিত মহিলা বিভাগের এক ভার্চুয়াল ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, মানুষের তৈরি আইনের কাছে মাথানত করা বড় ধরনের শিরক। তাই আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিরকের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও জেলা আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি এ বি এম কামাল হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ঢাকা জেলা সভাপতি ডা. শহিদুজ্জামান, জেলা নায়েবে আমির শাহিনুর ইসলাম ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি মাঈনুল ইসলাম প্রমুখ।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, মহাগ্রন্থ আল কোরআন বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়েত। মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বিশ্বমানবতার মুক্তির মহাসনদ হিসেবে নাযিল করা হয়েছে এই মহিমান্বিত কিতাব। সূরা যুমারের ১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘এই কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহর পক্ষ থেকে।’ কিন্তু সুইডেনে দূর্বৃত্তরা কোরআন পুড়িয়ে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। মূলত, তারা কোরআন পোড়ায় বরং নিজেদের কপালই পুড়িয়েছে। জামায়াতে ইসলামীসহ বিশ্ব মুসলিম এই নিন্দনীয় ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে। তিনি ন্যাক্কারজনক ঘটনার যথাযথ প্রতিবাদ জানাতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
তিনি বলেন, সরকার আবারো অতীতের মতো পাতানো ও ষড়যন্ত্রের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু তাদের মনে রাখা উচিত এদেশে আর কখনো দিনের ভোট রাতে হবে না। তাই অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নতুন নির্বাচন দিতে হবে। আর জুলুমবাজ সরকারের পতানের লক্ষ্যে দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি সরকারকে জুলুম-নির্যাতনের পথ পরিহার করে অবিলম্বে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ শীর্ষ নেতাদের মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
ডা. শহিদুজ্জামান বলেন, আল্লাহ আমাদের ওপর দ্বীনে হক্ব প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালানোকে অত্যাবশ্যকীয় করে দিয়েছেন। তাই আমাদের ওপর অর্পিত এ দায়িত্ব কোনোভাবেই পাশ কাটানোর সুযোগ নেই। মূলত, আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব মেনে তার বিধানের যথাযথ অনুসরণ ও তা ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রে যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠার মধ্যেই রয়েছে বিশ্বমানবতার সর্বাঙ্গীন কল্যাণ। তিনি ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে আত্মগঠন করে আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জনের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
মাঈনুল ইসলাম বলেন, বর্তমান অবস্থায় ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ঘরে বসে থাকার সুযোগ সুযোগ নেই বরং দ্বীনের হক্বের দাওয়াতে প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে। নিজেকে ইসলামী আন্দোলনের যোগ্যতর করে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই দ্বীনের বিজয় সহজতর হয়ে উঠবে। সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন বলেন, আল্লাহর নিকট কোরবানির রক্ত, গোস্ত কিছুই পৌঁছে না। শুধু পৌঁছে তাকওয়া। তাই ত্যাগ ও কোবানীর মানসিকতা নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ময়দানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি আগামী দিনের সকল কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণের জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি