প্রিন্স হ্যারির বিচার দাবি করেছে আফগানিস্তান শাসনকারী তালেবান। ২০১২-১৩ সময়কালে আফগানিস্তানে অ্যাপাচে হেলিকপ্টারের কো-পাইলট এবং গানার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এই ব্রিটিশ রাজপুত্র ২৫ আফগানকে হত্যার কথা স্বীকার করার প্রেক্ষাপটে এই দাবি তোলা হলো।
সম্প্রতি প্রকাশিত স্মৃতিকথা ?’স্পেয়ারে’ ডিউক অব সাকেক্স লিখেছেন যে তিনি দুই ডজন তালেবান উগ্রবাদীকে নির্মূল করেছেন। আর এজন্য তিনি সন্তুষ্টও নন, আবার লজ্জিতও নন।
অবশ্য দোহায় তালেবান রাজনৈতিক অফিসের প্রধান সুহাইল শাহিন সম্প্রতি আরব নিউজের ‘ফ্রাঙ্কলি স্পিকিং’ অনুষ্ঠানে বলেন, প্রিন্স হ্যারির উচিত তার কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হওয়া।
ক্যাটি জেনসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠিানে তিনি বলেন, ‘তারা দাবি করে যে তারা গণতান্ত্রিক দেশ। তারা মানবাধিকারের কথা বলে। আর তারাই এমন কাজ করেছে।’ তিনি নিরীহ আফগানদের কেবল হত্যাই নয়, এজন্য গর্ববোধ করায় প্রিন্স হ্যারির নিন্দা করেন। শাহিন বলেন, হ্যারি যাদেরকে হত্যা করেছেন, তারা ‘শত্রু যোদ্ধা’ নন। তারা নিরীহ গ্রামবাসী। তিনি হ্যারিকে বিচারের আওতায় আনার দাবি করে বলেন, ‘তাদের আইনের অর্থ যদি হয়ে থাকে মানবাধিকার রক্ষা করা, তবে তাকে আদালতের সামনে হাজির করা উচিত। তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন যে তিনি ২৫ জনকে হত্যা করেছেন। এটা একটা অপরাধ।’ প্রিন্স হ্যারি বলেন, ২০১৩ সালে তার আফগানিস্তান মিশনের শেষ দিকে এসব হত্যাকা- ঘটে। তিনি তার শিকারদের ?’দাবার বোর্ড থেকে ঘুঁটি সরানো’ হিসেবে দাবি করে লিখেছেন, ‘খারাপরা ভালোদের হত্যা করার আগেই তাদের শেষ করা হয়েছে।
সাক্ষাতকারে শাহিন বলেন, নিরীহ আফগানদের কেবল প্রিন্স হ্যারিই হত্যা করেননি। আরো অনেক সৈন্য এমন কাজ করেছে। এমন অনেক ঘটনা আছে। অনেক পরিবার তাদের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়েছে। মাঠে কাজ করার সময় নিরীহ লোকজন, গ্রামবাসী, কৃষকদের হত্যা করার হাজার হাজার ভিডিও আছে।
তিনি বলেন, অন্য কোনো দেশে এমনটা হলে বিচারের দাবি জানানো হতো। শাহিন বলেন, ‘আপনাদের দেশে এমনটা হলে কী হতো? আপনারা কি বিচারের দাবি তুলতেন না? মানুষ হিসেবে বিষয়টি উত্থাপন করা আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব।’ আফগানিস্তানে ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসে তালেবান। এর আগে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্য বাহিনী দেশটি থেকে সরে যায়। আফগানিস্তানে হাজার হাজার ব্রিটিশ সৈন্য নিয়োজিত ছিল। ২০০১ থেকে ২০১৪ সালে তাদের কার্যক্রম শেষ হওয়া পর্যন্ত ৪৫০ জনের বেশি ব্রিটিশ সৈন্য নিহত হয়।
প্রিন্স হ্যারি এক দশক ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। তিনি আফগানিস্তানে ছিলেন দুই দফায়।