রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৪ অপরাহ্ন

এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০২৩

খুলনায় তারুণ্যের সমাবেশে মির্জা ফখরুল
‘ন্যাড়া বেলতলায় একবারই যায়, বারবার নয়’ মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। এদের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। এ সময় তিনি সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘সময় আছে পদত্যাগ করুন।’ গতকাল সোমবার (১৭ জুলাই) বিকেলে খুলনায় তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল এ সমাবেশের আয়োজন করে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘হিরো আলমকে ওরা সহ্য করতে পারে না। এই সরকারের সন্ত্রাসীরা তাকে বের করে দিয়েছে, শুধু তাই নয় তাকে হামলা করেছে। এই সরকার আবার বলে এদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সব কিছু তামাশায় পরিণত করেছে এই আওয়ামী লীগ। সব কিছু নষ্ট করেছে।’ ‘ন্যাড়া বেলতলায় একবারই যায়, বারবার নয়’ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এদের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। এদের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। সময় আছে পদত্যাগ করেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। দফা এক, দাবি এক- শেখ হাসিনার পদত্যাগ।’
আমরা এই বাংলাদেশ চাইনি এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দিয়েছিলেন উনারা যদি বেঁচে থাকতেন, তাহলে বলতেন, এই দেশের জন্যে আমরা যুদ্ধ করিনি।’ তিনি বলেন, ‘আমি খুশি হতাম যদি এখানে আমাদের আন্দোলনে যারা হত্যার শিকার হয়েছেন, প্রাণ হারিয়েছেন তাদের ছবি দিয়ে ফেস্টুন, ব্যানার থাকতো। আমি শহীদদের গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি। শ্রদ্ধা করি আমাদের কারান্তরীণ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। তিনি এদেশের গণতন্ত্রের জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করছেন।’
‘এই আওয়ামী লীগের আজকে শুধু পোশাকটা পাল্টেছে, তারা আগের মতো একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালাচ্ছে। গুম, খুন করে সব অর্জন ভেস্তে দিয়েছে,’ বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি স্বজন হারানো মানুষের কথা আর আর্তনাদ শুনছিলাম, ভাবছিলাম কী জবাব দিব ওদের কাছে। আমরা কি এই জন্যে এই রাষ্ট্র তৈরি করেছিলাম?’

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আবারো পাঁয়তারা করছে একতরফা নির্বাচন করার জন্য। এজন্যে কিছু তোষামোদকারী সৃষ্টি করেছে এই আওয়ামী লীগ। এরা সেই সব ব্যবসায়ী, যারা সব মানুষের রক্ত শুষে নিয়েছে। এরা ব্যাংকগুলো খেয়ে ফেলেছে। সব টাকা পাচার করে দিয়েছে।’

‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সমস্ত সম্পদ লুটে নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সংকটকাল উপস্থিত হয়েছে,’ বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন ৯০ টাকাতেও চাল পাওয়া যায় না। অথচ তারা বলেছিল ১০ টাকা সের চাল খাওয়াবে। সেদিকে এ সরকারের লক্ষ্য নেই। ওদের লক্ষ্য কিভাবে লুট করে পাচার করা যায়।’

তিনি বলেন, ‘কথা বলার এখন সময় নেই, এখন শুধু কাজ আর কাজ। যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে তাদেরকে বিতাড়িত করতে হবে। না হলে এ বাংলাদেশটাই থাকবে না।’

এই সরকার দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘হায়রে অভাগার বাংলাদেশ! স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশের মানুষকে বিপদে ফেলে বিদেশে ভ্রমণে গেছে। এদের বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটুও ভালোবাসা নেই।’

এ তারুণ্যের সমাবেশ লাঞ্ছিত, নির্যাতন ও হত্যার শিকার হওয়া স্বজনরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা উপস্থিত নেতাকর্মীদের কাছে আর্তনাদ করে তাদের স্বজন হারানো বিচার চান।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের সঞ্চালনায় যুবদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।

এছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারি হেলাল, খুলনা মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম মনা, খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমির এজাজ খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার উপস্থিত ছিলেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com