বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে রাখা আওয়ামী সরকার তাদের কোনো প্রতিপক্ষ রাখতে চায় না। তাই বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এ ফরমায়েশি রায় দেয়া হয়েছে। দেশের জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে এমন ফরমায়েশি রায় দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, অবৈধ আওয়ামী সরকারের ফরমায়েশি রায়ের আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। গতকাল ঢাকা মহানগর বিশেষ দায়রা জজ আদালতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার সহধর্মিনী ডাঃ জুবাইদা রহমানকে সাজা দেয়াটা আওয়ামী দুঃশাসনের কোনো ব্যতিক্রমী ঘটনা বলে কারো মনে হয়নি। বিচার বিভাগের দলীয় করণের এটা আর একটি নিকৃষ্ট নজির। তারেক রহমান এবং তার স্ত্রীকে যে সাজা দেয়া হবে এ নিয়ে কারো সংশয় ছিল না। কারণ আওয়ামী কর্তৃত্ববাদী শাসনে বিরোধী দলের প্রধান নেতাদের নির্মূল করতে যেভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা হয়, সেই নীলনকশা ধরেই সরকারপ্রধান এগিয়ে যাচ্ছেন। রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে রাখা আওয়ামী সরকার তাদের কোনো প্রতিপক্ষ রাখতে চায় না। সরকারপ্রধান নিজেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী রাখতে চান। সেজন্য আইন আদালত ও প্রশাসনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে রাজনৈতিক প্রধান প্রতিপক্ষকে নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর হয়েছেন। আজ এই ফরমায়েশি রায় দেয়ার ঘটনা দেশকে গণতন্ত্র শূন্য করার ধারাবাহিক চক্রান্তের অংশ।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানসহ দেশজুড়ে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র নব্য বাকশালী দুঃশাসনকে চিরস্থায়ী রাখতে। সেজন্য আইন আদালতকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের এক দমনযন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। ন্যায়বিচার করার কারণে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে মামলা থেকে খালাস দেয়ায় বিচারক মোতাহার আর দেশে থাকতে পারেননি। সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বিচার বিভাগে সরকারি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ‘গানপয়েন্টে’ দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের সময় রামদা, লাঠিসোঁটা ও রড নিয়ে হামলা করে আওয়ামী ক্যাডার’রা যা মানুষের হাতে হাতে মোবাইলে ভিডিওতে দৃশ্যমান হয়েছে। অথচ মামলা হয় বিএনপির কয়েক বছর আগে মৃত, কারাবন্দী ও বিদেশে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের নামে। মামলা দেয়ার পুলিশী তামাশা এখন সর্বমহলে হাস্যকর বিষয় হয়ে উঠেছে। মৃত বিএনপি নেতাকে ‘গায়েবি জীবিত’ করে গায়েবি মামলা দেয়া যেন এখন পুলিশের নিত্যদিনের রুটিনে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী নেতাদের চেতনার স্তরে সুবিচার বলে কোনো জায়গা নেই। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই রায় যে শেখ হাসিনার নির্দেশ মোতাবেক হয়েছে তার বড় প্রমাণ আদালতে প্রায় ৪৯ লাখ মামলার জট থাকলেও আলোর গতিতে চলেছে এই মামলার কার্যক্রম। রাত ৮টা ৯টা পর্যন্ত একতরফাভাবে সাজানো সাক্ষীকে দিয়ে শেখানো বুলি বলানো হয়েছে আদালতে। একমাসে এই মামলাটির জন্য প্রতিদিন শুনানি করে ৪২ জন সাক্ষী দ্রুত গতিতে নিজেরা নিজেরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছেন। আমাদের আইনজীবীরা এ ধরনের অস্বাভাবিক বিচার কার্যের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করতে গেলে তাদের ওপর পুলিশ ও সরকারদলীয় আইনজীবীরা একাধিকবার হামলা চালিয়েছে। তাদেরকে আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। গোটা দেশবাসী অবাক বিস্ময়ে হতবাক হয়ে প্রত্যক্ষ করেছে কিভাবে তামাশার বিচারের নামে ক্যামেরা ট্রায়াল চালানো হয়েছে। আজকের ফরমায়েশি রায় সরকারপ্রধানের হিংসা ও আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ। দেশজুড়েই যখন আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে জনগণের মধ্যে যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে বিভ্রান্ত করতে অবৈধ আওয়ামী সরকারের এটি একটি কূটচাল। একদফার চলমান আন্দোলনকে নেতৃত্বশূন্য করতে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে প্রতিহিংসা মেটানো হয়েছে। যেমনটি করেছে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাদ-দিয়ে। বিনাশ ও সংকীর্ণতার পথ অবলম্বন করে তারা ন্যায়বিচারকে দেশান্তরিত করেছে। দেশের জনগণ বিচারের নামে এই প্রহসন, এই ফরমায়েশি রায় ঘৃণ্যাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, আপনারা জানেন, ২০০৭ সালে তথাকথিত ওয়ান ইলেভেনের জরুরি সরকার প্রতিপক্ষ দমনে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে জিয়া পরিবারকে হেয় এবং রাজনৈতিক পরিমন্ডল থেকে উচ্ছেদ করার গভীর চক্রান্তে মেতে বাংলাদেশের অগণন মানুষের সমর্থনধন্য দেশনায়ক তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা: জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণরুপে মিথ্যে, বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগে মামলাটি দিয়েছিল। কারণ তথাকথিত জরুরি সরকার ছিল বর্তমান আওয়ামী লীগেরই আন্দোলনের ফসল। জরুরি সরকারের সময়ে শেখ হাসিনার নামে ১৫টি দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির মামলা করা হলেও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর প্রধানমন্ত্রী পদের ক্ষমতা ব্যবহার করে অনুগত বিচারপতিদের দিয়ে সবগুলো মামলা প্রত্যাহার করিয়ে নেন শেখ হাসিনা। কোনো মামলায় তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়নি। অথচ তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের এই মামলা চলার মতো কোনো আইনগত ভিত্তি-উপাদান না থাকা সত্ত্বেও হিংসা চরিতার্থ করার আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দিয়ে শেখ হাসিনা তার নীলনকশা কার্যকর করার জন্য চটজলদি জোড়াতালি দিয়ে প্রতিহিংসা পূরণের রায় বের করা হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনার মামলায় অভিযোগ করেছেন যে, জনাব তারেক রহমান সম্পদ বিবরনীতে প্রদর্শিত, কিন্তু জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সর্বমোট ৪,৮১,৫৩,৫৬১.৩৭ (চার কোটি একাশি লাখ তিপ্পান্ন হাজার পাঁচশত একষট্টি টাকা সাইত্রিশ পয়সা) টাকা সম্পদ অর্জন করেছেন। যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক, সাজানো ও ভিত্তিহীন। জনাব তারেক রহমান ও জিয়া পরিবারের ভাবমূর্ত্তি ক্ষুন্ন করবার এবং জনাব তারেক রহমানকে হয়রানী ও হেনস্থা করবার জন্যই এই সাজানো মামলা ও কাল্পনিক অভিযোগপত্র দায়ের করা হয়েছে, কারণ দুদক কর্তৃক অভিযোগ করা সম্পদ জ্ঞাত ও প্রদর্শিত। নি¤েœ জনাব তারেক রহমান এর সম্পদের যথাযথ বিবরণসহ ব্যাখ্যা প্রদান করা হইল- ১। বাড়ি নং- ৩/বি, ব্লক-এন ই (ডি), গুলশান, ঢাকায় ১ বিঘা ১০ কাঠা ১১ ছটাক জমিসহ বাড়ী ১/৩ অংশ, মূল্য ৩৩/- (তেত্রিশ) টাকা। যাহা রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত জ্ঞাত ও প্রদর্শিত। ২। ৩৮ নং খতিয়ান সাইলাকান্দি, বগুড়ায় ২.০১ একর জমি, মূল্য ৩,৪৫,০০০/- (তিল লক্ষ পঁয়তাল্লিশ হাজার) টাকায় ক্রয়কৃত, জ্ঞাত ও প্রদর্শিত। ৩। টি এম এন্টারপ্রাইজ ব্যবসায়ীক মূলধন ২,৭০,৮০১/- (দুই লক্ষ সত্তুর হাজার আটশত এক) টাকা জ্ঞাত ও প্রদর্শিত (বর্তমানে ব্যবসাটি বিলুপ্ত এবং মুলধন অবসায়ীত) ৪। ড্যান্ডি ডায়িং লিঃ ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকার শেয়ার জ্ঞাত ও প্রদর্শিত (বর্তমানে ব্যবসা বিলুপ্ত)। ৫। রহমান গ্রুপ এর ১৮,৫০,০০০/- (আঠার লক্ষ পঁঞ্চাশ হাজার) টাকার শেয়ার (রহমান নেভিগেশন ও রহমান শিপার্স লিঃ) যাহা জ্ঞাত এবং প্রদর্শিত (বর্তমানে ব্যবসা বিলুপ্ত) ৬। রহমান শিপার্স বিডি লিঃ এর ১০০টি শেয়ার রহমান গ্রুপ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত, তাই অভিযোগটি মিথ্যা ও বাতিলযোগ্য। উল্লেখ্য যে, রহমান শিপার্স বিডি লিঃ এর নামে লঞ্চগুলো ঋন করে করা হয়েছিল যা সময় সীমার মধ্যে পরিশোধীত। তাই এখানে আইনের কোন ব্যত্যয় ঘটে নাই। ৭। ইউনিটেক্স এ্যাপারেল লিঃ এর ১৫০টি শেয়ার রহমান গ্রুপ এর অন্তর্ভূক্ত। উল্লেখ্য যে, সকল কোম্পানীর সংক্ষিপ্ত নামকরন রহমান গ্রুপ। যাহা জ্ঞাত ও প্রদর্শিত। ৮। সঞ্চয়পত্র মূল্য ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা যাহা জ্ঞাত ও প্রদর্শিত। ৯। এফ.ডি.আর রূপালী ব্যাংক লিঃ মূল্য ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা যাহা জ্ঞাত ও প্রদর্শিত। ১০। ঢাকা ব্যাংক লিঃ বনানী শাখায় স্থিতি ২৮,১৬২/- (আটাশ হাজার একশত বাষট্টি) টাকা যাহা জ্ঞাত ও প্রদর্শিত। ১১। এবি ব্যাংক লিঃ স্থিতি ৬,২৯০/- (ছয় হাজার দুইশত নব্বই) টাকা, যাহা জ্ঞাত ও প্রদর্শিত। ১২। এবি ব্যাংক কাওরান বাজার শাখায় ৪৭,২৩৭/- (সাতচল্লিশ হাজার দুই শত সাইত্রিশ) টাকা, সাউথইষ্ট ব্যাংক প্রিন্সিপাল শাখায় ৪,২১০/- (চার হাজার দুইশত দশ) টাকা এবং এবি ব্যাংক নবাবপুর শাখায় ২,৫৪৯/- (দুই হাজার পাঁচশত ঊনপঞ্চাশ) টাকা, হিসাবগুলো যেক্সথ হিসাব জনাব তারেক রহমানের ১/৩ অংশ। সম্পদ বিবরনীতে এই টাকা প্রদর্শিত আছে যাহা জ্ঞাত এবং প্রদর্শিত। ১৩। হাতে নগদ ৪০,১০৭/- (চল্লিশ হাজার একশত সাত) টাকা জ্ঞাত ও প্রদর্শিত। ১৪। স্বর্ন ৫ তোলা মূল্য ২,৯৫০/- (দুই হাজার নয়শত পঞ্চাশ) টাকা, জ্ঞাত ও প্রদর্শিত। ১৫। আসবাবপত্র মুল্য ১,৭৯,৫০০/- (এক লক্ষ ঊনআশি হাজার পাঁচশত) টাকা জ্ঞাত ও প্রদর্শিত। তারেক রহমান এর সম্পদ নয় দায়িত্বপ্রাপ্ত- ১। দৈনিক দিনকাল পত্রিকা অধ্যাপক মাজিদুল ইসলামের কাছ থেকে চুক্তির মাধ্যমে জনাব তারেক রহমান এর নামে হস্তান্তরিত হয়। হস্তান্তরিত মূল্য ৪, ১৫, ২৪, ৫৬৪. ১১ (চার কোটি পনের লাখ চব্বিশ হাজার পাঁচশত চৌষট্টি টাকা এগার পয়সা) টাকা। উল্লেখ্য, দৈনিক দিনকাল তারেক রহমানের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। উক্ত পত্রিকা এবং সম্পদ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির। এখানে তারেক রহমানের নিকট চুক্তির মাধ্যমে দায়িত্ব হস্তান্তরিত হয়েছে তিনি শুধুমাত্র প্রকাশকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাছাড়া তারেক রহমান কখনো এর মালিকানা দাবি করেন নাই এবং তার ব্যক্তিগত আয়কর নাথিতে প্রদর্শন করেন নাই। উক্ত দিনকাল স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসাবে আয়কর নথিভূক্ত এবং আলাদা টি.আই.এনভুক্ত যার নিয়মিত আয়কর বিভাগে রিটার্ন প্রদান করা হয়। তাই উক্ত দিনকাল পত্রিকা সংক্রান্ত অভিযোগ সম্পূর্ন মনগড়া উদ্দেশ্য প্রণোদিত, হয়রানির নামান্তর এবং সর্ব আইনে বাতিলযোগ্য।
সম্পদ নয়-
১। বসুন্ধরা গ্রুপের বারিধারা প্রকল্পে কন্যা জাইমা রহমানের নামে ১০ কাঠা জমি তারেক রহমানের ক্রয়কৃত নয়, কোন টাকা পরিশোধ করা হয় নাই, কোন প্রকার দলিলে সহি স্বাক্ষর নাই। উক্ত জমি তারেক রহমান বা কন্যা জাইমা কখনো দাবি করেন নাই। যাহা দুর্নীতি দমন কমিশনে পূর্বেই অবহিত করা হয়েছে। তাই এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ও সর্ব আইনে বাতিলযোগ্য। ২। গাজীপুর সদর থানাধীন ৬৬ শতাংশ জমি জনাব তারেক রহমানের নামে। এই জমি জনাব তারেক রহমান ক্রয় করেন নাই। এই জমি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। তারেক রহমান কোনো দিন এই জমি দাবী করেন নাই। এই রকম কোন দলিলে জনাব তারেক রহমান কখনই সহি স্বাক্ষর করেন নাই, যাহা দুর্নীতি দমন কমিশনে পূর্বেই অবহিত করা হয়েছে। তাই এই অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা, ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ও সর্ব আইনে বাতিলযোগ্য। ৩। গাজীপুর সদর থানাধীন ১২.৫ শতাংশ জমি তারেক রহমান এর নামে। এই জমি তারেক রহমান ক্রয় করেন নাই। এই জমি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। তারেক রহমান কোন দিন এই জমি দাবী করেন নাই। এই রকম কোন দলিলে জনাব তারেক রহমান কখনই সহি স্বাক্ষর করেন নাই, যাহা দুর্নীতি দমন কমিশনে পূর্বেই অবহিত করা হয়েছে। তাই এই অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা, ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ও সর্ব আইনে বাতিলযোগ্য।
চার্জশীট-
১। চার্জশীটে উল্লেখ করা হয় তারেক রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। যা কাল্পনিক, বানোয়াট, সাজানো ও ভিত্তিহীন। ২। যদিও মামলার এজহারে জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ৪,৮১,৫৩,৫৬১.৩৭ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগ করেছেন। পূর্বেই যাহার যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে জনাব তারেক রহমান একটি টাকাও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ দখল করেন নাই। উক্ত অভিযোগ সর্ব আইনে বাতিলযোগ্য। কিন্তু চার্জশীটে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জবান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সর্বমোট ২,৭৪,৯৩,০৮৭/- (দুই কোটি চুয়াত্তর লক্ষ তিরানব্বই হাজার সাতাশি) টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ দখলে রাখার অভিযোগ করে চার্জশীট দাখিল করেছেন। যাহা সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন, যাহা বহাল থাকার উপায় নাই এবং উক্ত অভিযোগ পুরোপুরি বাতিলযোগ্য। ৩। চার্জশীটে উল্লেখ করা হয়েছে বসুন্ধরায় কন্যা জাইমা রহমান এর কথিত জমি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে বসুন্ধরায় কোন জমির বিষয় জানা নাই, কখনো দখল বা দাবী করা হয় নাই। দলিলে কোন প্রকার সহি স্বাক্ষর নাই। যাহা পূর্বেই দুদককে অবহিত করা হয়েছে। তাই উক্ত অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন, যাহা বহাল থাকিবার উপায় নাই এবং উক্ত অভিযোগ পুরোপুরি বাতিলযোগ্য। ৪। চার্জশীটে দৈনিক দিনকাল এর মালিকানা জনাব তারেক রহমান বলে উল্লেখ করেছেন। যাহা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে ক্সদনিক দিনকাল প্রত্রিকাটি বি এন পি’র দলীয় পত্রিকা। যাহার মালিক বি এন পি জনাব তারেক রহমান প্রকাশক এর দায়িত্ব পালন করেছেন, যেমনি ছিলেন অধ্যাপক মাজিদুল ইসলাম। তাই দৈনিক দিনকাল এর দায় সম্পদ সবই উক্ত প্রতিষ্ঠানের, জনাব তারেক রহমান নয়। চার্জশীটে আরো উল্লেখ করা হয়েছে তিনি ২২/১১/১৯৯৮ ইং থেকে ১৬/০৫/২০০২ইং তারিখ পর্যন্ত ১,৭৪,১৮,৩৫০/- টাকা বিনিয়োগ করেছেন। যাহা মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও কল্পনা প্রসূত, কারণ যেহেতু পত্রিকাটি বিএনপির দলীয় পত্রিকা, জনাব তারেক রহমান দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকাশক, সেহেতু উক্ত টাকা পত্রিকা প্রকাশের জন্য বিভিন্ন শ্রেনীর নেতা কর্মীর কাছ থেকে অনুদান হিসেবে গ্রহণ করেছেন এবং পত্রিকার হিসাবের খাতায় জমা দিয়েছেন। প্রকাশক হিসেবে তার নাম এসছে মূলত: পাতা-৫ তিনি ব্যক্তিগতভাবে একটি টাকাও বিনিয়োগ করেন নাই। যাহা তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতেও প্রদর্শন করা নাই। তাই এই অভিযোগ সম্পূর্ন ভিত্তিহীন বিধায় বহাল থাকিবার উপায় নাই। চার্জশীটে উল্লেখ আছে জনাব তারেক রহমান পত্রিকাটি দেখাশুনা করিতেন। চার্জশীটে আরো উল্লেখ করা হয়েছে জনাব তারেক রহমান দৈনিক দিনকালে ১,৬৪,৯৮,৩৫০/- টাকা ঋণ দিয়েছেন। যাহা একেবারে মিথ্যা, ভিত্তিহীন, সাজানো ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। কারন তিনি একটি টাকাও ঋন প্রদান করেন নাই। প্রকাশক হিসাবে বিভিন্ন লেনদেনে ব্যবসায়িক ঋন জনাব তারেক রহমান এর নামে উল্লেখ হয়েছে। ব্যক্তিগত ভাবে তিনি কোন ঋন প্রদান করেন নাই। তাই অভিযোগটি সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন এবং উক্ত অভিযোগটি পুরোপুরি বাতিলযোগ্য। ৫। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে রহমান গ্রুপ নামে জনাব তারেক রহমান বিভিন্ন কোম্পানিতে ১৮,৫০,০০০/- টাকা শেয়ার ক্রয় করেছেন। যাহার মধ্যে ২০৫০ শেয়ারও অন্তর্ভুক্ত, তাই এই অভিযোগ বহাল থাকিবার উপায় নাই এবং উক্ত অভিযোগটি পুরোপুরি বাতিলযোগ্য। ৬। চার্জশীটে এ বি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক এ টাকা কথা বলা হয়েছে, যাহার মোট অংক ৩৪,৪৫২/- টাকা এবং যেক্সথ ব্যাংক হিসাবে এবি ব্যাংক কাওরান বাজার, সাইথইষ্ট ব্যাংক প্রিন্সিপাল শাখা এবং এবি ব্যাংক নবাবপুর শাখায় ১/৩ অংশে ১৭,৯৯৯/- টাকা। যাহা সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন এবং উক্ত অভিযোগটি পুরোপুরি বাতিলযোগ্য। ৭। শহীদ মইনুল রোডের বাড়ি সংস্কারে দুই দফায় ৩৪,০০,০০০/- টাকা খরচ করেছেন। যাহা জনাব তারেক রহমান তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে প্রদর্শন করেছেন। অথচ চার্জশীটে একবার ২১,০০,০০০/- টাকা আরেকবার ৩৫,০০,০০০/- টাকার তথ্য গোপনের স্ববিরোধী বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। যাহা সম্পুর্ন ভিত্তিহীন যা কোন ভাবেই বহাল থাকিবার উপায় নাই এবং উক্ত অভিযোগটি পুরোপুরি বাতিলযোগ্য। পরিশেষে চার্জশীটের সমস্ত অভিযোগ সম্পর্কে উল্লেখ করতে চাই যে, জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে উল্লেখিত কথিত ২,৭৪,৯৩,০৮৭/- টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগপত্রটি পুরোপুরি মিথ্যা, কাল্পনিক, সাজানো, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। যাহা জনাব তারেক রহমান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ও গণতন্ত্র রক্ষার নির্ভীক নেতৃত্ব জিয়া পরিবারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করবার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। তাই এই মামলা সম্পূর্ণ বাতিলযোগ্য। মির্জা ফখরুল বলেন, গত ২৯ মে, ২০০৭ ইং তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশন বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান সাহেবকে পরিবারসহ তাঁর সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করতে বলেন। জনাব তারেক রহমান সাহেব জেলে বন্দী থাকা অবস্থায় ৭ জুন, ২০০৭ তারিখে সম্পদের হিসাব বিবরণী দুদকে দাখিল করেন । উক্ত হিসাব বিবরণী দাখিলের পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০০৭ তারিখে জনাব তারেক রহমান সাহেব ও তাঁর স্ত্রী প্রখ্যাত চিকিৎসক ডাঃ জুবাইদা রহমান এবং তার শাশুড়ি নৌ বাহিনীর সাবেক প্রধান মরহুম রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান সাহেবের স্ত্রী সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জ্ঞাত আয় বর্হিভূত ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে ৩১ আগষ্ট, ২০০৮ ইং তারিখে দুদক আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। উক্ত চার্জশীটে দুর্নীতি দমন কমিশন ডাঃ জুবাইদা রহমানের নামে প্রাইম ব্যাংক, বনানী শাখা, ঢাকায় যথাক্রমে ২৫ লক্ষ টাকা ও ১০ লাখ টাকা মোট ৩৫ লাখ টাকা মূল্যমানের ২ টি ঋউজ খোলা হয়েছে বলে নথিতে উল্লেখ করে এবং দুদক দাবি করে যে, উক্ত ৩৫ লক্ষ টাকা মূল্যমানের ২টি ঋউজ প্রকৃত পক্ষে জনাব তারেক রহমান সাহেবের জ্ঞাত আয় বহির্ভুত অর্থ দ্বারা খোলা হয়েছিল এবং এজন্য ডাঃ জোবায়দা রহমান তার স্বামী জনাব তারেক রহমান সাহেবকে কথিত অবৈধ সম্পদ অর্জনে ও সংরক্ষণে সহায়তা করেন মর্মে অভিযোগ আনয়ন করেন। প্রকৃত পক্ষে ডাঃ জোবায়দা রহমান এই অর্থ (৩৫ লাখ টাকা) তাঁর মাতা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর কাছ থেকে উপহার (এরভঃ) হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন এবং গত ৩১.০৭.২০০৫ ইং তারিখে তিনি উক্ত উপহার হিসেবে প্রাপ্ত টাকা ঢাকাস্থ প্রাইম ব্যাংক বনানী শাখায় ২ টি ঋউজ খোলেন যেগুলোর মূল্যমান যথাক্রমে ২৫ লক্ষ টাকা ও ১০ লক্ষ টাকা সর্বমোট ৩৫ লক্ষ টাকা। এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যে, ডাঃ জুবাইদা রহমান উক্ত ৩৫ লক্ষ টাকা যে উপহার হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন তা ২০০৫ -২০০৬ এবং ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরের তাঁর ব্যক্তিগত ট্যাক্্র রিটার্নে উল্লেখ করেছিলেন। অর্থ্যাৎ তিনি তাঁর মায়ের নিকট থেকে উপহারস¦রুপ গ্রহনকৃত ৩৫ লক্ষ টাকা যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই করারোপিত করে ২০০৫-২০০৬ এবং ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরের ট্যাক্্র রিটার্নফরমে যথাযথভাবে সন্নিবেশিত করেছিলেন । উক্ত ২০০৫-২০০৬ এবং ২০০৬-২০০৭ সনের ট্যাক্্র রিটার্নের সত্যায়িত কপি দালিলিক প্রমান হিসেবে দুদক এবং আদালতে দাখিল করা সত্তে¦ও আজ শুধুমাত্র রাজ?নতিক উদ্দেশ্যেই তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি না দিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে এই মামলাটি অব্যাহত রেখেছে। আপনারা জানেন যে, ডাঃ জোবায়দা রহমান দেশের একজন খ্যাতনামা মেধাবী চিকিৎসক, তাঁর মরহুম পিতা ছিলেন নৌ বাহিনীর প্রধান। তিনি শুধুমাত্র সাবেক রাষ্টপতি এবং স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমান বীরোত্তম এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পুত্রবধু এবং জনাব তারেক রহমান সাহেবের স্ত্রী হওয়ার কারণেই আজকে সম্পূর্ণ চক্রান্তমূলক, অন্যায় এবং বেআইনীভাবে এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি তাঁর ট্যাক্স রিটার্নে উল্লেখিত ৩৫ লাখ টাকার ঘোষণা করা সত্ত্বেও তা আমলে না নিয়ে নিয়ন্ত্রিত আদালত সরকারের ফরমায়েশী রায় দেয়া হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ঠিকানা ও মানুষের প্রানপ্রিয় নেতা তারেক রহমানের রাজনৈতিক উত্থান সহ্য করতে পারছে না আওয়ামী লীগ। ঈর্ষা-প্রতিহিংসায় জ্বলেপুড়ে যাচ্ছেন জবরদস্তি করে জনগণের ঘাড়ে চেপে বসা শেখ হাসিনা। তাঁকে বিনাশ এবং তাঁর জনপ্রিয়তা ও উজ্জল ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য হেন অপকর্ম নেই যা করছে না এই ভোটারবিহীন সরকার। তিনি বাংলার মানুষের ভাগ্য বদলের লড়াইয়ে প্রধান দিশারী। তাঁর অনন্য দেশপ্রেম, জনকল্যানে মনোযোগ, ধীশক্তি, প্রজ্ঞা, দুরদৃস্টি, সততা আর বিচক্ষনতা এক ব্যাপক গণভিত্তি লাভ করেছে। সেই কারণেই শেখ হাসিনা টার্গেট করেছে তারেক রহমানকে।
তিনি আরো বলেন, ইতোপূর্বে কয়েকটি মিথ্যা মামলায় তারেক রহমানকে ফরমায়েশী রায়ে সাজা প্রদান করা হয়েছে। ইতিপূর্বে তারেক রহমান একটি মামলায় নি¤œ আদালতে খালাস পেয়েছিলেন। মানিলন্ডারিং মামলায় তারেক রহমানকে সাজা দেয়ার জন্য বিচারক মোতাহার হোসেনকে সরকারের লিখিত রায়ে সই করার জন্য তৎকালীন আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক এবং যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা অস্ত্র দিয়ে তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। সরকারের অন্যায় হুকুম অমান্য করে বিচারক হিসেবে সঠিক রায় দেয়ার ফলে মোতাহার হোসেন বর্তমানে বিদেশে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। সেই রায় উচ্চ আদালতে টেনে নিয়ে ওই মামলায় হাইকোর্ট তারেক রহমানকে সাত বছর সশ্রম সাজা ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা করে। এই অবৈধ সরকার ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরার মামলায় তারেক রহমানকে জড়িত দেখিয়েছে বিচার ও আইনের সকল নিয়ম কানুন লংঘন করে। এইসব মামলার এফআইআর বা চার্জশীটে তারেক রহমানের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। এমনকি একজন আসামীকে ৪ শ’ দিনের অধিক রিমান্ডে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে অচেতন অবস্থায় একটি জবানবন্দী জোগাড় করলেও পরে তিনি কোর্টে তা প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু আজ্ঞাবহ আদালত তা প্রত্যাহার না করে নির্দোষ তারেক রহমানকে অভিযুক্ত দেখিয়ে বিচারের নামে প্রহসন করেছে। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ষোড়শ সংশোধনীর রায় মনোপুত না হওয়ায় সরকারের সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশে তাকে অপমান অপদস্ত করে অস্ত্রের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেন। এসব ঘটনায় বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশে ভেঙ্গেপড়া বিচার ব্যবস্থার স্বরুপ উন্মোচিত হয়েছে। কোনো বিচারক সরকারের হুকুমের বাইরে গিয়ে ন্যায়বিচার করার সাহস হারিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির বহুল আলোচিত হত্যা মামলা আদালতে তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য ৯৯ বার পেছানো হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ৭৩ বার পেছানো হয়েছে। এরকম বহু আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর মামলা হিমাগারে ফেলে রেখে দেশনায়ক তারেক রহমান ও তার সহধর্মিনী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে এই সাজানো মিথ্যা মামলার কার্যক্রম ১মাস ২০ দিনে শেষ করা ও আদেশ দেওয়ার মানে হলো জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে নির্মূল করা। প্রধানমন্ত্রী হিংসার প্রয়োগে দ্বিধা করেননি। ২১ আগস্ট মামলায় তারেক রহমানকে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্দোলনের ফসল মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের সময়ও এ মামলার চার্জশিটে তারেক রহমানের নাম ছিল না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাদের একান্ত অনুগত, বিশ্বস্ত ও দলীয় লোক আব্দুল কাহার আকন্দকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয় শুধু তারেক রহমানকে উক্ত মামলায় জড়িত করার জন্য।
তিনি বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের একজন বিপুল জনপ্রিয় জাতীয় নেতা। দল পরিচালনায় তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠিত। তাঁর দক্ষতা, যোগ্যতা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা অনন্য। তার নেতৃত্বে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। অন্যদিকে ডা. জুবাইদা রহমান একদিকে যেমন জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ অন্যদিকে তিনিও দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী বর্ণাঢ্য পরিবারের সন্তান। মেধাবী চিকিৎসক জুবাইদা রহমান পড়ালেখা করেছেন সেরা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে। তাঁর পিতা মরহুম মাহবুব আলী খান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান। সুতরাং তারেক রহমান ও ডা: জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলার রায় জনগন মানে না। এসব করে বিএনপির চলমান আন্দোলন দমন করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী, আপনি হিংসার পথে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের মজলুম নেতা তারেক রহমানকে নতজানু করতে পারবেন না। আজকে সরকার নিয়ন্ত্রিত আদালতের মাধ্যমে তারেক রহমান এবং তার সহধর্মিনী ডাঃ জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি রায় প্রদানের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাজা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।