সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেশি প্রতিষ্ঠান। আগের দিনের মতো আজও মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী রাখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে তথ্যপ্রযুক্তি বা আইটি খাত এবং খাদ্য খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। অপরদিকে দাম কমার তালিকায় নেতৃত্ব দিয়েছে গত কয়েক মাস ধরে শেয়ারবাজারে আলোচনায় থাকা বিমা খাত। এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দামে ঢালাও পতন হয়েছে। এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরু থেকেই দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাতে থাকে আইটি ও খাদ্য খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এ দুই খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। আইটি ও খাদ্য খাতের পাশাপাশি লেনদেনের শুরুতে বেশিরভাগ বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ে। তবে লেনদেনের শেষদিকে বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দামে ঢালাও পতন হয়। এতে একদিকে দাম বাড়ার তালিকা ছোট হয়, অন্যদিকে কমে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। অবশ্য আইটি ও খাদ্য খাতের কল্যাণে শেষ পর্যন্ত সূচক ঊর্ধ্বমুখী থেকেই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে আইটি খাতের ৬টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২টির। খাদ্য খাতের ১১টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ৫টির দাম কমেছে। আর বিমা খাতের ৬টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৪০টির দাম কমেছে। এ তিন খাতের এমন চিত্রের দিনে ডিএসইতে সব খাত মিলে ৭৮ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৭টির। আর ১৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এরপরও দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩৪২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৩৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫৪৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৯২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিটের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩০ কোটি ২৯ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফুয়াং ফুডের ২৩ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২১ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্টের। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, জেমিনি সি ফুড, ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, মেট্রো স্পিনিং এবং এমারেল্ড অয়েল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৬৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৭টির এবং ৬৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।