ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নের ফুলবাড়ি সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইটার (সিএইচসিপি) বৈশাখী আফরোজ ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে ক্লিনিকটি পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় জনসাধারণ তার বিরুদ্ধে সকাল ১০ টার পরে ক্লিনিকে আসা ও বেলা ১ টার আগে পরে চলে যাওয়া, মাঝে মধ্যে ক্লিনিক বন্ধ রাখা, নিজ আত্মীয়দের প্যাকেট ভরে ঔষধ দেওয়াসহ অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ তোলেন। সরজমিনে ফুলবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিকে সকাল ৯ টায় যেয়ে দেখা যায়, ক্লিনকটির মূল ফটকে তালা দেওয়া। এর কিছুক্ষণ পরে দুই এক জন করে রোগীরা ক্লিনিকে আসতে শুরু করেন।
মা রোগীরা কোলে বাচ্চা নিয়ে ঘন্টার উপর দাড়িয়ে থাকতে থাকতে অনেকটা বিরক্ত হয়ে দরজার সামনেই বসে পড়েন। ঘড়ির কাটা যখন ১০ টা ২৭ মিনিট তখন সিএইচসিপি বৈশাখী আফরোজ ক্লিনিকে প্রবেশ করেন। এ সময় অনেক মহিলা রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, ডাক্তার আপা কালকেও (১ আগস্ট) আসেন নি। আজও আসলেন দেরি করে। হাজিরা খাতায় দেখা যায়, জুলাই মাসের ৩০ ও ৩১ এবং আগস্ট মাসের ১ তারিখ উপস্থিতির স্বাক্ষর নেয় সিএইচসিপি বৈশাখী আফরোজের। আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষের চিকিৎসার আশ্রয়স্থল হলো ফুলবাড়িয়ার এই কমিউনিটি ক্লিনিক। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী নিয়মিত এই ক্লিনিকের সেবা নিতে আসেন।এর মধ্যে অনেকেই ক্লিনিক টি বন্ধ থাকায় সেবা না নিয়েই ফিরে যান। কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা এই সিএইচসিপি স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতিনিয়ত অনিয়ম করে গেলেও স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন খোঁজ খবর রাখেন না বলেও স্থানীয়রা জানান। চিকিৎসা নিতে আসা ফুলবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ কুমারের সাথে কথা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, বৈশাখী আফরোজ নিয়মিত দেরি করে আসেন এবং আগে চলে যান। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৯ টা থেকে ক্লিনিক চালু করার কথা থাকলেও তিনি প্রতিনিয়ত ১০ টার পরে আসেন। আবার দুপুর ১ টা বাজার পরপর বন্ধ করে চলে যান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এভাবেই এই ক্লিনিকটি চালাচ্ছেন। এগুলো দেখার কেউ নেয়। কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনার জন্য গঠিত স্থানীয় সিজি ও সিএসজি কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য ফয়জুর রহমান বাবু বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপির দেরিতে আসা ও সময় শেষ হওয়ার আগে চলে যাওয়ার ব্যাপারে আমি একাধিকবার তাকে সতর্ক করলেও তিনি কর্ণপাত করেন না। তার অনিয়মের কারণে আমার এলাকার মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ব্যাপারটি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবো। বারোবাজার ফুলবাড়িয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি বৈশাখী আফরোজ এর কাছে অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আজ একটু দেরি হয়েছে। হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর না করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একসাথে অনেকগুলো দিনের স্বাক্ষর করি। ১ আগস্ট আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ রিপোর্ট জমা দিতে গিয়েছিলাম, একারণে ক্লিনিক বন্ধ ছিল। কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলমগীর হোসেন জানান, সিএইচসিপি যদি অনিয়ম ও দায়িত্বের অবহেলা করে থাকেন তাহলে অবশ্যই তা খতিয়ে দেখে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।