বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে এক নিরীহ যুবককে ইতালী পাঠানোর কথা বলে লিবিয়া পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পরিবার। পরিবারের দাবি, চুক্তি অনুযায়ী ১১ লক্ষ টাকা দিয়েও তার ছেলেকে ইতালী না পাঠিয়ে লিবিয়া পাচার করা হয়েছে। দরিদ্র পরিবারটি ১১ লক্ষ টাকা দিয়ে যেমন নিঃশ্ব হয়েছে তেমনি ছেলের সন্ধান না পেয়ে পরিবারের সদস্য এখন পাগল প্রায় অবস্থা। ঘটনাটি ঘটেছে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার কচুবুনিয়া গ্রামে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোঃ রাজীব শেখের(২৩) পিতা মোঃ শহীদুল ইসলাম(৫৫) বাদী মোড়েলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে জানা যায়, মোড়েলগঞ্জ উপজেলার কচুবুনিয়া গ্রামের সবুর ফরাজীর(৬০) ছেলে রাসেল ফরাজী(৩৫) দেশের বাহিরে থাকে। চলতি বছরের প্রথম দিকে সবুর ফরাজী আমার পরিবারকে জানায় তার ছেলে ইতালীর কিছু ভিসা পাঠাবে। সে আমার ছেলেকে ইতালী পাঠানোর জন্য প্রস্তাব দেয়। ইতালী যাওয়ার জন্য ১২ লক্ষ টাকা লাগবে আর প্রতি মাসে প্রায় ২ লক্ষ টাকা আয় করা যাবে বলে আমাদের জানান। আমি অত্যন্ত দরিদ্র হওয়ায় প্রথমে তার প্রস্তাবে রাজী হইনি। পরবর্তীতে মোঃ সবুর ফরাজী ও তার পুত্রবধু তাহিদা বেগম একাধিকবার আমাদের বাড়িতে আসে কৌশলে আমার ছেলেকে রাজি করায়। আমি পৈত্রিক সম্পত্তির ১৫ শতাংশ জায়গা বিক্রি করি, কৃষি ব্যাংক থেকে লোন উত্তলন করি, জমি চুক্তি বাবদ টাকা ধার করি ,ইজি বাইক বিক্রি করি ও ০৮ টি গরু তাদেরকে প্রদান করি। তাহাদের ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাকিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন দফায় ৮লক্ষ টাকা ও গরু বিক্রি বাবদ ৩ লক্ষ টাকা সর্বমোট ১১ লক্ষ টাকা প্রদান করি। কিন্তু তাহারা আমার পুত্রকে ইতালি না নিয়ে লিবিয়ায় পাচার করেছে। সেখানে তাহাকে অনেক নির্যাতন করে এবং বলে যে বাড়িতে টাকার কথা বল। আমাদের বাড়িতে আরও টাকা দিতে হবে না হলে ইতালি যেতে পারবিনা। প্রায় ২ মাস পর্যন্ত আমার পুত্রের সহিত আমাদের কোন যোগাযোগ নাই। আমি মোঃ সবুর ফরাজী ও তাহিদা বেগম এর কাছে আমার ছেলের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা আমাদের সহিত খারাপ আচারন করে। তারা প্রভাবশালী হওয়াতে ১লা আগস্ট মোঃ সবুর ফরাজী ও তাহিদা বেগমসহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন লোক আমাদের বাড়িতে বেআইনীভাবে প্রবেশ করে আমাদেরকে অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমাকে গলা ধাক্কা দেয়। আমি এর প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকি প্রদান করে। মোঃ শহীদুল ইসলাম আরো জানান, আমার ছেলে মোঃ রাজীব শেখ এর আয় দিয়ে আমাদের পরিবার চলত। এখন আমরা সবকিছু ধ্বংস করে নিঃস্ব,সর্বশান্ত হয়ে পড়েছি। আমরা আমাদের প্রাননাশের আশংকায় আছি এবং পরিবার পরিজন নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছি। তিনি বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের কাছে আহবান জানান। এ বিষয়ে মোড়েলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সাঈদুর রহমান বলেন,অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।