মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

কক্সবাজারে প্রতিদিন ধরা পড়ছে ৫০০ টন মাছ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৩

বৈরী আবহাওয়া ও নিষেধাজ্ঞা শেষে কক্সবাজারের জেলেরা এখন স্বস্তিতে। সাগর থেকে ট্রলার বোঝাই করে ইলিশ আর হরেক রকমের মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরছেন তারা। আর ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখরিত হয়ে উঠেছে জেলার প্রতিটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র।
শুধু ইলিশই নয়; ছোট বড় সব ট্রলারে ধরা পড়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। সরকারি নিষেধাজ্ঞা আর বৈরী আবহাওয়ায় সাগরে না যাওয়ায় সমুদ্রে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদন বেড়েছে বলে মনে করছেন গবেষকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকালে কক্সবাজারের ফিশারি ঘাট, টেকনাফ শামলপুর ঘাটসহ কয়েকটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে দেখা যায়, ট্রলার ভর্তি মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরছেন জেলেরা। বেশি মাছ ধরা পড়ায় দামও একটু কমেছে। একটি মাঝারি সাইজের ১কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১৩০০ টাকা করে কেনা-বেচা হচ্ছে। তবে কয়েকদিন আগে সেই একই সাইজের মাছের দাম ছিলো দ্বিগুণ।
কক্সবাজার ফিশারি ঘাটের ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, ‘গত কয়কেদিনের চেয়ে আজকে অনেক বেশি মাছ পড়েছে। বেশি মাছ পড়ায় দামও একটু কমেছে। ১ কেজি ওজনের একটি ইলিশের দাম ১৩০০ টাকা চলছে। যা কিছুদিন আগেও ২০০০ টাকার উপরে ছিলো।’
ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘অনেক বেশি মাছ পড়েছে। প্রতিটি ট্রলার ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা করে মাছ বিক্রি করছে আজকে। কোনো ট্রলার খালি আসছে না। সব ট্রলারে মাছ পড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। আমি এবং আমার শেয়ার হোল্ডাররা মিলে দেড় কোটি টাকার ইলিশ কিনেছি।
এদিকে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে ট্রলার থেকে মাছ নামিয়ে বেচা-কেনার পর মাছগুলো বরফের সঙ্গে ককশিট ও ঝুড়ি ভর্তি করে পরিবহনযোগে দেশের নানা প্রান্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ব্যবসায়ী শাহেদুল ইসলাম শহিদ বলেন, ‘আমরা এক ট্রাক মাছ কিনেছি। যেখানে ৩৪০টি ইলিশের ককশিটের বক্স রয়েছে। এসব মাছ ঢাকা, যাত্রাবাড়ি, কাওরান বাজার, আব্দুল্লাহ পুর, ফরিদপুর, মাওয়া এবং রাজশাহীসহ নানা জায়গায় যাবে।’
ইলিশ ছাড়াও কক্সবাজারের প্রতিটি নৌঘাট অন্যান্য প্রজাতির মাছে সয়লাব হয়েছে। লইট্যা, ফাইস্যা, চাপিলা, পোয়া মাছসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ বোঝাই করে সাগর থেকে ফিরছেন জেলেরা।
টেকনাফের শামলাপুর ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা কূলে এসে জাল থেকে মাছ আলাদা করছেন। এ ঘাটে বেশির ভাগ চাপিলা মাছ ধরা পড়েছে। মাছগুলো প্রতি মণ ৫০০০ টাকা বিক্রি করছেন জেলেরা। পরে সেগুলো বাজারে তুলে খুচরা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে এগুলো ককশিট ও ঝুড়ি ভর্তি করে অনেক ব্যবসায়ী দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
শামলাপুর ঘাটের নৌকা মালিক সমিতির সভাপতি বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘দীর্ঘদিন নিষেধাজ্ঞার পরে জেলেরা অনেক আশা নিয়ে সাগরে যায়। আল্লাহ সকলের আশা পূরণ করেছেন। কোনো নৌকা খালি আসেনি। অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি মাছ নিয়ে ঘাটে ভিড়েছেন জেলেরা। মাছ বেশি পড়ায় দামও কমেছে। এতে ক্রেতারাও খুশি।’
শামলাপুর বাজারে মাছ কিনতে আশা মমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘আজকে দাম একটু কমেছে। চাপিলা মাছ কিনেছি কেজি প্রতি ১৩০ টাকা করে। অন্যদিন সেই মাছ ১৮০ টাকায় কিনতে হতো। লইট্যা কিনেছি ১০০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগেও ২৫০ টাকা কিনেছি। মাছ পড়লে আমাদের জন্য ভালো হয়। কম দামে বিভিন্ন ধরণের মাছ কিনতে পারি।’ এদিকে ট্রলার ভর্তি মাছ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলেদের মুখে। তারা বলছেন, সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে সেখানে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ বেড়েছে। এভাবে মাছ পড়লে এবং দাম ভালো থাকলে আমাদের ঘরের অভাব দূর হবে।
জেলে দলিলুর রহমান বলেন, ‘এই পেশা ছাড়া আমাদের আর কোনো পেশা নেই। মাছ পড়লে পেটে ভাট না পড়লে মাথায় হাত। যখন মাছ পড়ে না তখন ঋণ করে সংসার চালাতে হয়। আবার মাছ বেশি পড়লে সেই ঋণ পরিশোধ করে সংসারের অভাব কিছুটা দূর করা যায়। এভাবে মাছ পড়তে থাকলে ইনশা’আল্লাহ্ অভাব থাকবে না ঘরে। আজ মাছ বিক্রির পর আবার রওনা দেবো সাগরে।’ কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান বলেন, ‘দীর্ঘদিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকা এবং নিম্নচাপের কারণে জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে যেতে পারেনি। এসময় সাগরে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের উৎপাদন বেড়েছে এবং মাছের সাইজও বড় হয়েছে। তাই দীর্ঘ বিরতির পর সাগরে যখন জেলেরা মাছ আহরণে যান তখন ট্রলার ভর্তি মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরতে পারছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘কক্সবাজার জেলায় প্রতিদিন ৫০০ টনের মতো মাছ ধরা পড়ছে। তন্মধ্যে ৬০ শতাংশই ইলিশ।’- রাইজিংবিডি.কম




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com