বান্দরবানের লামায় গত ৬ থেকে ৯ আগস্ট টানা ৪ দিনের অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে লামা পৌর এলাকায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা ও পাহাড় ধস পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার (১৯ আগস্ট) লামা প্রেস ক্লাব হল রুমে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করেছেন লামা পৌর সভার মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম। পৌর মেয়র বলেন, লামা পৌর এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ব্যাপক। টানা বর্ষনে আকস্মিক বন্যায় লামা বাজারের ১ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পানিতে প্লাবিত হয়, দোকানের ৭০ ভাগ মালামাল নষ্ট হয়ে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুক্ষিন হন। সাড়ে ৪ হাজার ঘর বাড়ি, ফসলি জমি সহ বিদ্যুৎসংযোগ ক্ষতিগ্রস্ত। রাস্তা-ঘাট সহ উন্নয়ন মূলক বিভিন্ন অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে প্রায় ১শত বিঘার উপরে চাষকৃত জমির শাক-সবজি পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমি (ধান) বন্যার কবলে পড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রায় ১৮ শত কৃষক পরিবার এই অর্থনৈতিক চাপে পড়ে অনেক দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। তিনি বলেন, বন্যা এতই ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, লামা বাজার ও আশ পাশে ৯ ফুট থেকে ২৫/৩০ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ৪ দিন যাবৎ পানিবন্দি থাকে পৌর এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। পাহাড় ধস হয় প্রায় শতাধিক। বিধস্ত হয়েছে পাকা সড়ক ও গ্রামীণ রাস্তাঘাট। পানিতে তলিয়ে যায় অসংখ্য পুকুর/দীঘি/খামার ও মৎস্য হ্যাচারি এছাড়া বন্যায় স্কুল, কলেজ, সরকারি বেসরকারি অফিস’সহ বিভিন্ন অবকাঠামো। ৯০ ভাগ রিংওয়েল বন্যা প্লাবিত হয়েছে। অসংখ্য গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগী বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। পৌর এলাকায় ১২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৫শত পরিবারের মানুষ আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। মেয়র জানিয়েছেন, লামার ইতিহাসে স্মরণকালের এ ভয়াবহ বন্যায় লামা পৌরসভা এলাকায় শত কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বন্যা পরবর্তী এখন পর্যন্ত পৌর এলাকায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ, বান্দরবান জেলা প্রশাসন, লামা উপজেলা পরিষদ এর সহযোগিতায় বন্যায় ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ দের মানবিক সহায়তা করা হয়েছে। আর ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এম.পি সহযোগিতা করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পৌর মেয়র। এসময় উপস্থিত ছিলেন, লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ কান্তি দাশ, পৌর প্যানেল মেয়র মোঃ হোসেন বাদশা, লামা পৌরসভার উপ-সহকারি প্রকৌশলী জুলকার নাঈম মানিক, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ রফিক, গণমাধ্যম কর্মী, পৌর কাউন্সিলর বৃন্দ প্রমূখ।