শরৎ মানে নিল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর কাশফুলের সুভ্রতা। ভাদ্র-আশ্বিন দু‘মাস শরৎকাল। ষড়ঋতুর বাংলাদেশে ঋতুর পালাবদলে এখন চলছে শরৎকাল। আগষ্ট মাসের মধ্য ভাগ থেকে অক্টোবরের মধ্য ভাগ পর্যন্ত এ সময়ের প্রকৃতি যেন কাশফুলে মেতে উঠে। শরতে পালকের মতো নরম ও ধবধবে সাদা রঙের এমনই স্নিগ্ধতায় জড়িয়ে কাশফুল স্মৃতিতে দোলা দেয়। প্রকৃতিতে যখন শরৎকাল আসে তখন কাশফুলই প্রথম জানিয়ে দেয় তার আগমণী বার্তা। কাশফুল মূলত ছন গোত্রীয় এক ধরনের ঘাস। যার আদি নিবাস রোমানিয়ায়। ঘাস জাতীয় উদ্ভিদটি উচ্চতায় সাধারণত ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। ঘাসটির চিরল পাতার দু‘পাশ বেশ ধারালো। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, পাহাড় কিংবা গ্রাম-গঞ্জের উঁচু জায়গায় কাশফুল জন্মাতে দেখা যায়। উপজেলার ১নং ইউনিয়নস্থ বেড়িবাঁধ সংলগ্ল সৈয়দপুরে সারি সারি কাশফুলের রাজত্বে প্রকৃতি যেন অপরূপ সাজে মেতে উঠে। কাশফুলের ছোঁয়ায় পর্যটক স্পট না হওয়া সত্ত্বেও স্থানটি ভ্রমণপ্রেমীদের আগমণে মূখর হয়ে উঠেছে প্রতিটি বিকাল। পূর্বাংশের উপকূলে কৃষকদের সব্জি ক্ষেত আর পশ্চিমাংশে উত্তাল জলরাশি ও জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্যের সাথে যোগ হয়েছে বেড়ীবাঁধে দোল খাওয়া কাশফুলের মনোরম দৃশ্য। সৈয়দপুরে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক আসছেন গ্রাম রক্ষা বাঁধের বিশাল অংশ জুড়ে সারি সারি কাশফুলের সৌন্দর্য দেখতে। সৈয়দপুর বেড়িবাধেঁ সাদা ফুলের এ চাদর দেখতে স্বল্প পরিসরের পারিবারিক ভ্রমণে এসে কাশফুলের সৌন্দর্য ও মাধুর্যের অপরূপ স্বাক্ষী হয়েছেন সীতাকুণ্ড উন্নয়ন আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য রেহেনা সুলতানা চন্দনা। তিনি জানান, পেশাগত কর্মব্যস্থতার মাঝে কোথাও ঘুরে বেড়ানোর সময় ও সুযোগ খুব একটা হয় না। ছুটির দিনে সুযোগ পেয়ে ছুটে এসেছি কাশফুলের বেড়ীবাঁধে। তিনি আরো জানান, সৈয়দপুরে গ্রাম রক্ষা বাঁধের উপর সারি সারি কাশবন আর আকাশে সাদা মেঘের ভেসে বেড়ানোর চমৎকার দৃশ্য দেখতে খুবই ভালো লাগছে। সন্ধ্যা নামার আগ মহুর্তে বাঁধে কাশফুলের দৃশ্য খুবই নান্দনিক। স্বল্প পরিসরের ভ্রমণে এসে আজ অফুরন্ত আনন্দ পেয়েছি। কাশফুলের মাঝ দিয়ে ভ্রমনপ্রেমীরা এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়ায়। তারুণ্যের সঙ্গে শিশু-কিশোরদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। বিকাল বেলা সাইকেল নিয়ে ঘুরতে আসে অসংখ্য ভ্রমণপ্রেমী। ভ্রমণে এসে বাঁধের সৌন্দর্য ও মাধুর্যে দারূণ মুগ্ধ চট্টগ্রাম জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবি অ্যাডভোকেট মোঃ নিজাম উদ্দিন, অ্যাডভোকেট আবু হায়দার মোঃ নাসির, অ্যাডভোকেট মোঃ মিজান ও অ্যাডভোকেট মোঃ তৌফিক উদ্দিন। ভ্রমণপ্রেমীরা আইনজীবিরা জানান, শরতের এ সময়টাতে সৈয়দপুরের বেড়িবাঁধে কাশফুলে ছেয়ে যায় পুরো এলাকা। মনোরম দৃশ্যটি দেখতে খুব ভালো লাগে। তারা আরো জানান, কাশফুল গ্রাম-বাংলার চিরচেনা শরতের নান্দনিক স্নিগ্ধ ফুল। কিন্তু সে কাশবন এখন আগের মতো চোখে পড়ে না। যা খুবই দুঃখজনক। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুল্লাহ জানান, শরৎ মানে নিল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর কাশফুলের সুভ্রতা। কাশফুল ছন গোত্রীয় এক ধরনের নান্দনিক ঘাস। উচ্চতায় ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা ঘাস জাতীয় উদ্ভিদটির চিরল পাতার দু‘পাশ বেশ ধারালো। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, পাহাড় কিংবা গ্রাম-গঞ্জের উঁচু স্থানে চিরচেনা স্নিগ্ধ কাশফুলের জন্মস্থান।