রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১০:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
শিরকের শাস্তি থেকে বাঁচার উপায় গজারিয়া জমে উঠেছে শেষ মুহূর্তের প্রচার কেশবপুরে উন্নয়ন কর্মকান্ডে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক মতবিনিময় সভা গ্রামবাংলার খেলাধুলার একটি ঐতিহ্য ছিল এসব কাঠের খেলনা গজারিয়াবাসীর সেবা করাই রুহুল আমিনের লক্ষ্য আনারস প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব আঃ হককে চায় সর্বস্তরের জনগণ গলাচিপা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির মানববন্ধন জামালপুরে পল্লীবিদ্যুতের অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের অঙ্গীকার আছে

দুর্গাপুরে ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠির নারী শ্রমিকরা মজুরী বৈষম্যের স্বীকার

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী (গারো, হাজং) নারী শ্রমিকদের চলতি ইরি-বোরো চাষের মৌসুমে কদর বাড়লেও মজুরী বাড়েনি। সকাল-সন্ধ্যা জমিতে ধান রোপনের কাজ করে তারা পাচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। অপর দিকে একই সঙ্গে কাজ করে একজন পুরুষ শ্রমিক পাচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। এ নিয়ে বৃহঃস্পতিবার (২৪ আগস্ট) উপজেলার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন গ্রামে আমন ধানের ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পুরুষদের সাথে তাল মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন আদিবাসী নারী শ্রমিকগন। অত্র এলাকায় পুরুষ বাঙ্গালী ও আদিবাসী শ্রমিকদের পাশাাশি নারী আদিবাসী শ্রমিকদের বেশ চাহিদা রয়েছে। আদিবাসী নারী শ্রমিকদের অভিযোগ পুরুষদের সাথে সমান ভাবে কাজ করেও তারা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না। জীবনের অনেকটা সময় নারী শ্রমিক হিসেবে কাজ করেও মজুরি প্রাপ্তির বেলায় বৈষম্যের স্বীকার হতে হয় তাদের। পুরুষ শ্রমিকরা মাঝে মধ্যে কাজে ফাঁকি দিলেও নারীরা কোন সময়ই কাজে ফাঁকি দেয় না। তবুও কেনো এ বৈষম্য তা বোঝতে পারে না সহজ সরল নারী আদিবাসী শ্রমিকগণ। ভবানীপুর গ্রামের আদিবাসী নারী শ্রমিক সুমলা হাজং বলেন, বীজ তলা তৈরী থেকে ধানের চারা রোপন, নিড়ানী, ধান কাটা, মাড়াই সহ কৃষি সংশ্লিষ্ট সকল কাজই পুরুষদের চেয়ে কোন অংশে কম করিনা। তবে দুঃখের বিষয় মজুরী দেয়ার বেলায় পুরুষদের চেয়ে ২শ টাকা কম দেয়া হয়। এটা মান তে কষ্ট হয় আমাদের। সদর ইউনিয়নের বারোমারী গ্রামের বিনুতা হাজং। স্বামী, ৩ মেয়ে ও ৩ ছেলে নিয়ে তার সংসার। দুবেলা দুমুঠো খাবারের জন্য পুরুষ শ্রমিকদের সাথে সমান তালে কষ্ট করতে হয়। অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করার পাশাপাশি সন্তানদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে নিজের কিছু জমি আছে সেগুলোতেও কাজ করতে হয়। তবে ফসলের মাঠে পুরুষদের সাথে সমান ভাবে কাজ করেও মজুরী পাওয়ার সময় পুরুষদের চেয়ে কম পাই এটা ভাবতে কষ্ট হয়। গোপালপুর গ্রামের কৃষক জমির উদ্দিন বলেন, বন্যার ভয়ে নানা সমস্যা ও শত ব্যস্তাতার মধ্যেও এলাকায় আমন ধান চাষ শুরু করা হয়েছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগনের পরামর্শ ক্রমে জমিতে সার, কিটনাশক দিয়ে জমি প্রস্ততও করা হচ্ছে। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় পুরুষদের পাশাপাশি নারী আদিবাসী শ্রমিকগনও মাঠে কাজ করে থাকে। তবে মজুরী প্রদানের বেলায় একটু কম-বেশ করে থাকেন অনেক কৃষকই। বারোমারি গ্রামের শিক্ষক মি. সুপলার বলেন, একই সাথে পুরুষ ও আদিবাসী নারী শ্রমিকরা সমান কাজ করেও মজুরীতে বৈষম্য, এটা খুবই দুঃখ জনক। মজুরী বৈষম্যের বিষয়টি সামনের গ্রাম সভায় তুলে ধরবো। আমি আমার ক্ষেতে রোপন কাজে সকলকে সমান মজুরী প্রদান করে থাকি। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান জানান, সীমান্তবর্তী গ্রামের বেশির ভাগ আদিবাসী নারী শ্রমিকগণ ফসলের মাঠে কাজ করেন। আমাদের পক্ষ থেকে আদিবাসী নারীদের সাবলম্বী করে তোলার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণসহ কৃষিবিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। সামনে আরো প্রশিক্ষণ দেয়া হবে যাতে নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য গড়তে পারে।
তিনি আরো জানান, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১৬ হাজার ২শত ৪৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার হেক্টরের মতো রোপন শেষ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৪ হাজার এবং বাকী জমিতে অন্য জাতের আমন ধানের চাষ হয়েছে। কোন প্রকার প্রাকৃতিক সমস্যা না হলে অত্র উপজেলায় এবার বাম্পার ফলন হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com