সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২১ অপরাহ্ন

তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামীদের গ্রেফতার করা হয়-পুলিশসপার সাইফুল ইসলাম

আলতাফুর রহমান আলতাফ লালমনিরহাট :
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৩

তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাত্র ২৪ ঘন্টায় ক্লুলেস হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার ও রহস্য উদঘাটন করেছে আদিতমারী থানা পুলিশ। রবিবার সকাল ১১টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ জানালেন পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম। পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান. গত ২০ আগষ্ট/২৩ ইং তারিখ জেলার আদিতমারী থানার ভাদাই ইউনিয়নের আরাজি দেওডোবা গ্রামের খুরশীদ আলমের ছেলে অটোচালক আঃ রাশিদ(৪৫) প্রতিদিনর ন্যায় সকাল আনুঃ ৯টার সময় অটো (মিশুক) নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়ে যায়। প্রতিদিন রাতে বাড়ি ফিরলেও সেদিন বাড়ীতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় তাকে খোজাখুজি করে না পেয়ে আদিতমারী থানায় একটি সাধারন ডায়রী করে। এর সুত্র ধরে আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক ও ওসি তদন্ত রঢিকুল ইসলাম ছায়া তদন্তে মাঠে নামে। পরের দিন ২১আগষ্ট/২৩ ইং তারিখ সকাল আনুঃ সাড়ে ১০টার সময় জনৈক্য ব্যাক্তি আঃ রাশিদের ভাতিজা লোকমান হাকিমের মোবাইল ফোনে জানান যে, অত্র থানার সারপুকুর কান্শ্বেরপাড়া বাবুর বাজারের পশ্চিম পার্শে ডাকাতপাড়া সাদা ব্যীজের মাঝামাঝি স্থানে রক্ত লেগে আছে এবং তার পার্শে একজোড়া সেন্ডেল ও একটি লাল কাপড়ের অংশ ব্রীজের উপরে পড়ে আছে। লোকমান ও তার ছেলে বিষটি আদিতমারী থানায় জানালে অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক ওসি তদন্ত রফিকুল ইসলাম সঙ্গীয় পোর্স নিয়ে ঘটনা স্থলে পৌছে ব্রীজে লেগে থাকা রক্ত, লাল কাপরের অংশ ও সেন্ডেল উদ্ধার করে। এ সুত্র ধরে স্থানীয়দের সহায়তায় ব্রীজ হতে ৩০ ফিট দক্ষিনে প্রবাহমান ভেটেশ্বর নদী থেকে আঃ রাশিদের লাশ উদ্ধার সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্ত করা হয়। ময়না তদন্তে আঃ রাশিদের মাথায় ভারী অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এ ঘটনায় আদিতমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার ভাই। মমলাা নং ১৫ তারিখ ২১/৮/২৩ইং। ধারা ৩৬৫/৩০২/৩৭৯/২০১/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।এরপর হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে থানা পুলিশ পলিশ। সুপার জানান, তথ্য প্রযুক্তি ব্যাবহার করে ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামী শনাক্ত করে থানা পুলিশ। এর পর আসামীর বাড়ী অত্র থানার ভাদাই ইউনিয়নের খারুভাঞ্জ গ্রামে শামসুল হক বাবুর বাড়ীতে অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু তাকে বাড়ীতে পাওয়া না গেলে পুলিশ থানা এলাকার বিভিন্ন দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সিডিআর পর্যবেক্ষন ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যাবহার করে নিশ্চিত হয় যে, বাবু সহ ৩জন ঐ দিন রাত আনুমানিক ৯টার সময় আঃ রাশিদের অটো ভাড়া করেছিল। সোর্স, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, ঐরাত হতে বাবুরা এলাকায় নাই তারা ঢাকায়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার একটি অভিযানিক দল নিয়ে আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। আসামীরা দ্রুত তাদের অবস্থান পরিবর্তন করায় র‌্যাব ১৩ এর মাধ্যমে র‌্যাব ১১ নরসিংদীর সহায়তা নেয় পুলিশ। ২৩আগষ্ট/২৩ ইং তারিখ সন্ধা আনুঃ৯টার সময় গাজীপুর কোনাবাড়ী এলাকা হতে হত্যাকান্ডে জড়িত আসামী সিরাজুল ইসলাম পিতা মমিনুল ইসলাম,মাতা ময়না বেগম,শামসুল হক বাবু পিতা মৃত মোন্তাজ আলী ওরফে মোন্তাজ ডাকাত মাতা ছালেহা বেগম, মোস্তাফিজার রহমান মুন্না পিতা আঃ মতিন মাতা গোলাপী বেগম মোমিনুল ইসলাম পিতা নাজিম উদ্দীন মাতা আমেনা বেগম সর্ব সং খারুভাঞ্জ ৩নং ওয়ার্ড থানা আদিতমারী জেলা লালমনিরহাট কে গ্রেফতার করা হয়।পুলিশ সপার জানান, উদ্দেশ্য ছিল রাশিদের অটোটি ছিনতাই করার। পুর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামী সিরাজুল ইসলাম, শামসুল হক বাবু, মোস্তাফিজুর রহমান ভাদাই ইউনিয়নের ভেটেশ্বর নদীর কান্তেশ্বর পাড়া ব্রীজে যাওয়ার জন্য রাশিদের সাথে ভারা ঠিক করে । রাশিদ ১শ টাকা ভাড়া চায় কিন্তু ঠিক হয় ৮০টাকা। এর পর অটোতে করে তারা কান্শ্বের ব্রীজের কাছে পৌছিলে অটো থেকে নেমে তারা রাশিদকে ১শ টাকার একটি নোট দেয়। রাশিদ ২০টাকা ফেনত দেয়ার জন্য পকেটে হাত দিলে পিছন দিক থেকে লোহার রড় দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর তারা রাশিদ কে নদীতে ফেলে দিয়ে অটো নিয়ে চলে যায়। গ্রেফতারকৃত আসামীরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, ঘটনার দিন বিকেল ৫টার সময় আসামীরা খারুভাঞ্জ স্কুল মাঠে অটো ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। সে মোতাবেক আসামী সিরাজুল মিলনবাজার ভাংরীর দোকান হতে একটি লোহার রড কিনে ঘটনা স্থল কান্শ্বের ব্রীজের উপরে শুকাতে দেওয়া কাশখড়েড় নীচে লুকিয়ে রাখে। এরপর আদিতমারী বুড়ির বাজারে এসে সহযোগী অপর আসামীদের সাথে একত্রিত হয়ে রাশিদের অটো ৮০টাক ভাড়া করে কান্তেশ্বর ব্রীজে যায়। সেখানে অটো থামিয়ে ভাড়া দেয় ১শ টাকা। অটোচালক কুড়িটাকা ফেরত দিতে পকেটে হাত দিয়ে টাকা বের করলে আসামী শামসুল হক বাবু সব টাকা কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়,এ সুযোগে সিরাজুল লুকিয়ে রাখা লোহার রড হাতে নিয়ে রাশিদের মাথার পিছনে স্বজোরে পরপর দুবার আঘাত করে। এর ফলে অটোচালক রাশিদ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মাথা ফেটে রক্ত ঝড়তে থাকে। বিপরীদ দিক থেকে অন্য একটি অটো আসতে দেখে তড়িঘড়ি করে রাশিদকে নদীতে ফেলে দেয়। এরপর আসামীরা টাকা, মোবাইল এবং অটো নিয়ে মোস্তফি বাজারে গিয়ে ভাংরীর দোকানে অটোটি বিক্রয়ের চেষ্টা করে। কাগজপত্র না থাকায় সেখানে দোকানদার ও স্থানীয় লোকদের সন্দেহ হলে তারা অটোটি ফেলে কৌশলে পালিয়ে ঢাকায় যায়। মাত্র ২৪ ঘন্টায় এ হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতার করায় মাননীয় পুলিশ সুপার ও আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ এবং ওসি তদন্ত রফিকুল ইসলাম কে ধন্যবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী ও ভিকটিমের পরিবার।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com