পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বোদা পৌর শহরের থানাপাড়ার মেধাবী দরিদ্র ছাত্র নব কুমার দাস দারিদ্র্যতাকে জয় করে প্রথম শ্রেনীতে এমএ পাস করেছেন। সে সম্প্রতি ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধীনে ঠাকুরগাঁও সরকারী কলেজ থেকে ইতিহাস বিভাগে প্রথম শ্রেণী পেয়ে মার্ষ্টাস পাস করেছে। নব কুমার ২০১৯ সালে জিপিএ-৩.২৮ পেয়ে অনার্স পাস করেন। ২০১৩ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৪.১৯ ও ২০১৫ সালে ৩.৫০ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। এখন তার লক্ষ বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ভাল একটি সরকারী চাকুরী পাওয়ার। দরিদ্র্য পরিবারের ৩ ভাই বোনের মধ্যে দ্বিতীয় নবকুমার। তাঁর বাবা একজন দিন মুজুর। টানাপোড়ানে বাবার এই সামন্য আয়ে সংসার চলে না। লেখাপড়ার খরচ জোগানো বাবার জন্য কষ্টকর। এ জন্য সে নিজের অদম্য প্রতিভা নিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে এবং বাবা ও ভাই বোনদের আর্থিকভাবে সাহায্য করতে একটি ফলের দোকান শুরু করে। সে বোদা পৌর শহরের নিউমার্কেটের সামনে ফুটপাতে ফল বিক্রি করে সংসার ও লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে শত প্রতিকুলতায় যুদ্ধ করে পড়াশোনা করে ভাল কিছু করতে চায় নব কুমার। এ ব্যাপারে নব কুমার বলেন, সততা ও ন্যায়- নৈতিকতা ধরে রেখে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছি। দারিদ্র্যতা আমার অহংকার, কষ্ট করে বড় হতে চাই এবং দরিদ্র সমাজে আলো ছড়াতে চাই। নব কুমারের লেখাপড়ার রেজাল্ট শুনে তার বাবা দেবেন দাস খুবেই খুশি। নব কমারের বাবা বলেন, তার ছেলে নিজে দোকান করে পড়াশোনা চালাচ্ছে পাশাপাশি নিজের চেষ্টা ও অন্যের সহায়তা করে এতদুর আসতে পেরেছে। সারাদিন ফলের দোকান করে গভীর রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করত। নব কুমার আরো জানান, বোদা পাইলট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক রবিউল আলম সাবুল স্যার আমাকে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে সব সময় আগ্রহ উদ্দীপনা ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। এই সাফল্য আমার একার নয়। পরিবার, শিক্ষক, শুভানুধ্যায়ীদের, যারা আমাকে সবসময় উৎসাহ যুগিয়েছেন, দিক-নির্দেশনা দিয়ে পাশে থেকেছেন। আমি তাদের কাছে ঋণী হয়ে থাকলাম। আমি সবার কাছে দোয়া চাই। সমাজে প্রতিষ্টিত হয়ে ভাল কিছু করতে চাই।