উজানের পানি নেমে আসায় বেড়ে গেছে কাপ্তাই হ্রদের পানি। এর ফলে পানিতে তলিয়ে গেছে রাঙামাটির আইকনিক ঝুলন্ত সেতু। গতকাল রোববার সকাল ৯ টার দিকে সেতুর পাটাতন স্পর্শ করে হ্রদের পানি। দুর্ঘটনা এড়াতে সেতু নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন সেতুর উপর পর্যটকদের চলাফেরা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেতুটি প্রায় ৬ ইি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এদিকে সেতু ডুবায় সেতু দেখতে আসা পর্যটকরা ফিরছেন হতাশ হয়ে। চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা রাহুল সাহা (২৫) বলেন, জীবনে প্রথম রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু দেখতে আসলাম। এসে দেখি এ অবস্থা। তাই এ দৃশ্য আমাকে হতাশ করেছে। এটি যেন আমার দুর্ভাগ্য মনে হচ্ছে। পর্যটন বোট ঘাট ইজারাদার মো রমজান বলেন, সেতু ডুবে যাওয়ায় আজ আমাদের কোন বোট ভাড়া হয়নি। গত ৫ দিন ধরে আমাদের আয় কমেছে। পানি না কমলে আমাদের আয় কমে যাবে।
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের তথ্য মতে, প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের অধিক পর্যটক উঠে ঝুলন্ত সেতুতে। এতে আয় বাড়ে পর্যটন কর্পোরেশনের।
কর্পোরেশনের রাঙামাটি ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, সেতু ভেসে না উঠলে পর্যটনে লোকসান হবার পাশাপাশি পর্যটক কমবে বলছে পর্যটন কর্পোরেশন। এ বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
রাঙামাটিতে কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক প্রকৌশলী জানান, বর্তমানে হ্রদে ১০৫.৬৬ ফুট পানি রয়েছে। এটি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। পানির লেভেল ১০৭ ফুট হলে পানি ছাড়ার কথা চিন্তা করা হবে। এখনো পানি ছাড়ার চিন্তাভাবনা নেই। বর্তমানে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২০৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। হ্রদে পানি বাড়লে উৎপাদনও বাড়ে। উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালে সেতুটি নির্মাণ করে পর্যটন কর্পোরেশন। এর পর এ সেতুটি আরও উচুতে স্থানান্তরের কথা বলা হলেও উচুতে স্থানান্তর হয়নি। ১৯৬০ সালে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে নির্মাণ করা হয় কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। কর্ণফুলী, কাচালং, মাইনী, চেঙ্গী, রাইংখ্যং নদীর পানি বাঁধ দিয়ে আটকে রাখায় ৭২৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এ তলিয়ে যাওয়া অংশকে কাপ্তাই হ্রদ বলা হয়। শুকনো মৌসুমে পানি কমলে নৌ পথে দুর্ভোগ বাড়ে। বর্ষায় পানি বাড়লে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায়। এতেও দুর্ভোগ বাড়ে।