ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আয়ু আর মাত্র ৩০ দিন বলে মন্তব্য করেছেন যুগপৎ আন্দোলনের শরিক জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। তিনি বলেন, বিরোধী দলগুলোর চলমান জনসম্পৃক্ত যুগপৎ আন্দোলনে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এই সরকারের পতন ঘটবে। এরপর নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হবে। সেই সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়সংলগ্ন আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে একদফার যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. ফরহাদ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমেরিকা সফর প্রসঙ্গে ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, আর একবার ক্ষমতায়
থাকার জন্য শেখ হাসিনা আমেরিকায় গিয়ে ধরনা দিচ্ছেন। তবে আমেরিকা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, তারা আগামীতে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। সুতরাং সরকারের পতন সন্নিকটে।
সরকারকে অবিলম্বে একদফা মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় জনগণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করবে। তখন ক্ষমতাসীনরা পালানোর পথ পাবে না।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে ড. ফরহাদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। অবিলম্বে তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। নইলে বেগম জিয়ার কিছু হলে সারাদেশে আগুন জ্বলবে। তিনি খালেদা জিয়ার পাশাপাশি কারাবন্দি আলেম-ওলামাসহ গণতন্ত্রকামী সবার মুক্তি দাবি করেন।
ড. ফরহাদ বলেন, এই সরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পায়।
কারণ, সরকার জানে- সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা ৩০টির বেশি আসন পাবে না। তবে যত ছলচাতুরিই করা হোক না কেন, দলীয় সরকারের অধীনে এদেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের এই সমন্বয়ক বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায় না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট দাবি আদায় ছাড়া রাজপথ ছাড়বে না।
এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, জাগপার সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহাদাত, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী, বিকল্পধারার মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির চেয়ারম্যান সুকৃতি কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ ন্যাপের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম ইউসুফ, এনপিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নবী চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা মো. ফখরুজ্জামান, জাগপার কেন্দ্রীয় নেতা ডা. আওলাদ হোসেন শিল্পী, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী বলেন, অবিলম্বে গণদাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। নইলে চলমান আন্দোলনে আপনাদের পতন ঘটিয়ে দাবি আদায় করা হবে।
এস এম শাহাদাত বলেন, আজকে গণতন্ত্র ধ্বংস করে বিএনপিসহ বিরোধী দলের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু হামলা-মামলা, অত্যাচার-নির্যাতন করে লাভ হবে না। এই সরকারকে যেতেই হবে। কারণ, এদের পতনের জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আগামীতে আর কোনো নির্বাচন হবে না বলে দাবি করেন তিনি।
এম এন শাওন সাদেকী বলেন, এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে।
সুকৃতি কুমার ম-ল বলেন, ক্ষমতায় থাকতে যতই ছল-চাতুরি করুক না কেন, এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না। তাদেরকে অবশ্যই গণদাবি মানতে হবে।